ঝিনাইদহে ২২ দিনে ১৮ ডেঙ্গু রোগীর সন্ধান
ঝিনাইদহে গত ২২ দিনে ১৮ জন ডেঙ্গু রোগীর সন্ধান পাওয়া গেছে। এর মধ্যে সদর হাসপাতালে ১১ জন, কোটচাঁদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে চারজন ও শৈলকুপায় তিনজনের খোঁজ পাওয়া গেছে। আক্রান্তদের মধ্যে তিনজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। বাকিরা চিকিৎসা নিয়ে চলে গেছেন। সদর হাসপাতালে একজন এখনো ভর্তি আছেন। ঝিনাইদহে এখন সকলের মাঝেই ডেঙ্গু আতঙ্ক বিরাজ করছে।
হাসপাতালের পরিসংখ্যান অফিসার আব্দুল কাদের জানান, চলতি মাসের ৬ জুলাই প্রথম মাহবুব নামে একজনের শরীরে ডেঙ্গুর জীবাণু ধরা পড়ে। তিনি চিকিৎসা নিয়ে ৯ জুলাই হাসপাতাল ত্যাগ করেন।
৯ জুলাই হাফিজুর রহমান নামে একজন জ্বর নিয়ে ভর্তি হলে তার শরীরে ডেঙ্গুর জীবানু শনাক্ত হয়। পাঁচ দিন পর তিনি ১৪ জুলাই হাসপাতাল ত্যাগ করেন। এরপর থেকে ধারাবাহিকভাবে ডেঙ্গু রোগীর সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে।
সদর হাসপাতালের জুনিয়র মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. জাকির হোসেন বলেন, এবারের ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর লক্ষণগুলো ভিন্ন। এবার হেমোরেজিক ফিভার বেশি হচ্ছে। আক্রান্তরা গায়ে প্রচন্ড ব্যথা, বমি, পেটব্যথা, শরীরে র্যাশ নিয়ে হাসপাতালে আসে। সেই সঙ্গে চার থেকে পাঁচ দিনের মধ্যে এসব রোগীর খাদ্যনালি, মূত্রনালিসহ বিভিন্ন জায়গায় রক্তক্ষরণের ক্রিটিক্যাল অবস্থা তৈরি হয়। তবে ডেঙ্গু নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। চিকিৎসা নিলে ডেঙ্গু নিরাময় হয়। আমরা চেষ্টা করছি সাধ্যমতো তাদের চিকিৎসা দেয়ার।
এদিকে, ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালসহ জেলার উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলোতে ডেঙ্গু পরীক্ষা হচ্ছে না। ডেঙ্গু পরীক্ষার কিট ও রিএজেন্ট না থাকাই ওষুধের দোকান ও বেসরকারি ক্লিনিকগুলোর উপর নির্ভর করতে হচ্ছে। ক্লিনিকে প্রতিটি রোগীর কাছ থেকে নেয়া হচ্ছে ১২শ টাকা। এতে গরিব রোগীরা পড়েছে বিপাকে।
ঝিনাইদহের সিভিল সার্জন সেলিনা বেগম জানান, বর্তমানে জেলার কোন সরকারি হাসপাতালে ডেঙ্গু পরীক্ষা হচ্ছে না। ডেঙ্গু পরীক্ষার কিট ও রিএজেন্টের জন্য আমরা চাহিদা পাঠিয়েছি।
তিনি জানান, রোগীরা বাইরে থেকে কিট ও রিএজেন্ট কিনে দিলে হাসপাতালের টেকনিশিয়ারা পরীক্ষা করে দিচ্ছেন।
সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আইয়ুব আলী জানান, ডেঙ্গু পরীক্ষার রিএজেন্ট রুটিন ওষুধ নয়। এ কারণে জেলার কোন হাসপাতালেই তা ছিল না। দেশে ব্যাপক হারে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়ায় সবখানেই এখন রিএজেন্ট সংকট দেখা দিয়েছে।
ঝিনাইদহ পৌরসভার সচিব মোস্তাক আহমেদ জানান, ডেঙ্গু প্রতিরোধে প্রতিটা ওয়ার্ডে মাইকিং করা হয়েছে। ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কারের পাশাপাশি মশক নিধনের কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
(ঢাকাটাইমস/২৮জুলাই/এলএ)