ছাদবাগানে সৌদির আজোয়া খেজুর চাষে সাফল্য
সৌদি আরবের বিখ্যাত আজোয়া জাতের খেজুর চাষ করে সাফল্য পেয়েছেন দিনাজপুর শহরের যুবক মাহাবুবুর রহমান। শহরের চাউলিয়াপট্টির শহীদ মিনার মোড় এলাকার বাড়ির ছাদে খেজুর চাষ করেছেন তিনি।
মাহাবুবুর রহমানের বাবা মোয়াজ্জেম হোসেন ও মা শামসুন নাহার এক সময় সৌদি প্রবাসী ছিলেন। মা-বাবার অনুপ্রেরণায় মাহাবুব বাড়ির ছাদে খেজুরবাগান গড়ে তোলেন, সফলও হন। ফল এসেছে গাছে।
এখন আর ছাদবাগানে সীমাবদ্ধ থাকতে চান না মাহাবুব। আজুয়া জাতের খেজুর চাষের বিস্তৃতি ঘটাতে উদ্যোগ নিয়েছেন তিনি। ইতোমধ্যে চারা উৎপাদন শুরু করেছেন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, কয়েক ফুট উঁচু গাছের থোঁকায় ঝুলছে সৌদি আরবের বিখ্যাত আজোয়া জাতের খেজুর। সবুজ-গোলাপি-হলুদ রঙের বড় বড় খেজুর বেশ মনোমুগ্ধকর।
মাহাবুব বাড়ির ছাদে গড়ে তুলেছেন আজোয়া খেজুর চারার একটি মিনি নার্সারি। সেখানে অসংখ্য গাছের চারা রয়েছে। বাড়ির ছাদে মাটিতে রোপণ উপযোগী তিন শতাধিক চারা প্রস্তুত রয়েছে। চলতি বছরের শেষের দিকে চূড়ান্তভাবে বড় পরিসরে জমিতে চারা রোপণ ও বিক্রির উদ্যোগ নেবেন মাহাবুব।
মাহবুবুর রহমান জানান, তার বাবা মোয়াজ্জেম হোসেন চাকরিসূত্রে প্রায় ৩৫ বছর মদিনায় ছিলেন। চাকরি থেকে অবসরের পর চলে আসেন বাংলাদেশে। মদিনায় থাকার সময় আজোয়া জাতের খেজুরের কিছু বিচি সংগ্রহ করেন তিনি। বাবা খেজুরের বিচি দেশে আনলে মা শামসুন নাহার একটি মাটির পাত্রে সেগুলো রোপণ করেছিলেন। সবাইকে অবাক করে দিয়ে বীজ থেকে মাটি ফুঁড়ে মাথা তোলে কুঁড়ি। এরপর ধীরে ধীরে বড় হতে থাকে। খেজুরের চারা রোপণের প্রায় চার বছরের মাথায় প্রথম ফল আসে বলে জানান তিনি।
মাহাবুব বলেন, আজোয়া জাতের খেজুরগাছের গড় আয়ু ১০০ বছর। ফল পাওয়ার জন্য পরাগায়ণ খুব জরুরি। কোনো বাগানে ২০টি চারা রোপণ করলে সেখানে একটি পুরুষ গাছ রোপণ করতে হয়। প্রথমে একটি বিচি একটি মাটির পাত্রে রোপণ করতে হয়। চারা বেড়ে চার-ছয় ইঞ্চি বড় হলে সেখান থেকে সরিয়ে অন্য একটি বড় মাটির পাত্রে আবার রোপণ করতে হয়। আজোয়া জাতের গাছকে যত ভালো পরিচর্যা করা হবে, তত ভালো থাকবে।
সাধারণত গাছে ফুল আসে ফেব্রুয়ারি মাসের দিকে। তখন পুরুষ গাছ থেকে পরাগায়ণের জন্য পাউডার সংগ্রহ করতে হয়। পরাগায়ণের বিশেষ সময় পাউডারগুলো ফুলে ছিটিয়ে দিতে হয়। যেদিন গাছে প্রথম ফুল আসে সেদিনই কমপক্ষে তিন-চারবার পাউডার ছিটাতে হবে বলে জানান তিনি।
ঢাকাটাইমস/২৯জুলাই/এমআর