কামারগ্রামে টিটিসির নির্মাণস্থল পরিদর্শন করলেন ইউএনও

আলফাডাঙ্গা (ফরিদপুর) প্রতিনিধি
 | প্রকাশিত : ৩০ জুলাই ২০১৯, ২০:৫৮

ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার কামারগ্রামে টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টারের (টিসিসি) নির্মাণস্থল পরিদর্শন করেছেন আলফাডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান।

মঙ্গলবার দুপুর আড়াইটার দিকে তিনি এ টিটিসি পরিদর্শন করেন। এসময় তিনি টিটিসি নির্মাণের সার্বিক খোঁজ-খবর নেন।

বাস্তবায়নাধীন প্রকল্প এলাকায় সরেজমিনে দেখা গেছে, কামারগ্রামে টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টারের নির্মাণে দিনরাত কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন নির্মাণশ্রমিকরা। চার তলাবিশিষ্ট দুইটি ও তিন তলাবিশিষ্ট একটি ভবনসহ বিভিন্ন নির্মাণ কাজ প্রায় শেষের দিকে। যত দ্রুত সম্ভব প্রকল্পের কাজ শেষ করতে চান তারা।

৭২ কোটি টাকার বেশি ব্যয়ে নির্মাণাধীন প্রতিষ্ঠানটি ঘিরে আলফাডাঙ্গাবাসীর স্বপ্ন সত্যি হতে চলেছে। তারা বলছেন, টিটিসির কার্যক্রম শুরু হলে শুধু আলফাডাঙ্গাই নয়, বোয়ালমারী ও মধুখালী উপজেলার তরুণরাও কারিগরি শিক্ষায় দক্ষ হয়ে উঠবে।

২০১৭ সালের ২৯ মার্চ ফরিদপুর সফর করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তখন তিনি যেসব উন্নয়ন কাজের ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন করেন, কামারগ্রামের টিটিসি একটি। এর মাস খানেকের মাথায় শুরু হয় প্রকল্পটির কাজ। স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন যখন প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ছিলেন, তখন বিদেশের শ্রমবাজারে দক্ষ কর্মীর চাহিদার বিষয়টি খেয়াল করেন। এরপর সারাদেশের প্রতিটি উপজেলায় একটি করে কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপনের উদ্যোগ নেন তিনি। প্রথম পর্যায়ে ৪০টি উপজেলায় টিটিসি স্থাপনে প্রকল্প হাতে নেয়া হয়। চট্টগ্রামের একটি মেরিন টেকনোলজি ইনস্টিটিউটও আছে এই প্রকল্পে।

বাংলাদেশ কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি ও ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের কার্যষনির্বাহী সদস্য আরিফুর রহমান দোলনের প্রচেষ্টা ও সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরে যোগাযোগের মাধ্যমে প্রাথমিক পর্যায়ে বরাদ্দ দেয়া ৪০টি টিটিসির মধ্যে একটি অনুমোদিত হয় আলফাডাঙ্গার জন্য। ট্রেনিং সেন্টারের তিনটি ভবনের একটি একাডেমিক ভবন, একটি ডরমেটরি, একটি প্রিন্সিপাল ও ভাইস প্রিন্সিপালের কোয়ার্টার ও ছাত্রী হোস্টেল। একাডেমিক ভবনটিতে ক্লাস হবে। ডরমেটরিতে থাকবেন ছাত্ররা। প্রিন্সিপালদের আবাসিক কোয়ার্টারের উপরে ছাত্রীদের আবাসন ব্যবস্থা থাকবে।

এ ব্যাপারে ফরিদপুর জেলা পরিষদ সদস্য ও জেলা কৃষকলীগের সদস্য সচিব শেখ শহীদুল ইসলাম শহীদ বলেন, ‘আলফাডাঙ্গার কামারগ্রামে টিটিসি নির্মাণের কাজ দ্রুতগতিতে চলছে। প্রতিষ্ঠানটি এ অঞ্চলের মানুষের জন্য একটি আশীর্বাদ। এ জন্য আমরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে কৃতজ্ঞতা জানাই। সাবেক এলজিআরডি মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেনের আন্তরিক সহযোগিতা ছিল। তা নাহলে এত বড় প্রকল্প আলফাডাঙ্গাবাসী পেত না, পাশাপাশি আলফাডাঙ্গার সন্তান আরিফুর রহমান দোলনের অক্লান্ত প্রচেষ্টা ছিল। তিনি তার যোগাযোগ-সম্পর্কের মাধ্যমে ৪০টি টিটিসির একটি আলফাডাঙ্গায় এনেছেন। এ জন্য তাকেও ধন্যবাদ জানাই।’

কামারগ্রাম কাঞ্চন একাডেমির প্রধান শিক্ষক জাকির হোসেন বলেন, ‘গোটা আলফাডাঙ্গায় শিক্ষার আলো জ্বালিয়েছিলেন মরহুম কাঞ্চন মুন্সী। তারই উত্তরসূরি আরিফুর রহমান দোলন প্রপিতামহের দেখানো পথে হাঁটছেন। আলফাডাঙ্গায় (কামারগ্রাম) নির্মিয়মাণ টিটিসি বরাদ্দের পেছনে তার দৌড়ঝাঁপের কথা সবাই জানে। এলাকার রাস্তাঘাট, খেলার মাঠ, কবরস্থান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অবকাঠামোগত উন্নয়নে কাজ করছেন তিনি।’

টিটিসি নির্মাণের জন্য জমিটি দিয়েছে কামারগ্রাম কাঞ্চন একাডেমি। ১৯৩৭ সালে মরহুম কাঞ্চন মুন্সী এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করেন। এছাড়া কামারগ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, স্বাস্থ্যকেন্দ্র, মসজিদ, কবরস্থান, খেলার মাঠসহ বিভিন্ন স্থাপনা কাঞ্চন মুন্সীর দান করা জায়গায় স্থাপিত হয়েছে।

টিটিসি নির্মাণস্থল পরিদর্শনকালে আরো উপস্থিত ছিলেন- ফরিদপুর ডিভিশনাল সাব-ইঞ্জিনিয়ার জ্যোতির্ময় ভট্টাচার্য, ফরিদপুর জেলা পরিষদ সদস্য ও জেলা কৃষকলীগের সদস্য সচিব শেখ শহীদুল ইসলাম শহীদ, আলফাডাঙ্গা আদর্শ কলেজের অধ্যক্ষ আবুল কাশেম, ঠিকাদার ইজানুর রহমান ও জাহাঙ্গীর হোসেন বাবু, কামারগ্রাম কাঞ্চন একাডেমির প্রধান শিক্ষক জাকির হোসেন প্রমুখ।

(ঢাকাটাইমস/৩০জুলাই/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :