ডেঙ্গুর বোমা এখনও পুরোপুরি বিস্ফোরিত হয়নি

প্রকাশ | ৩১ জুলাই ২০১৯, ১২:৩৮

সাইদুর রহমান দুলাল

২০১১ সালে কানাডার ম্যানিটোবা বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশের নর্থ-সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়, সরকারের গণস্বাস্থ্য বিভাগ এবং আইসিডিডিআরবি-র যৌথ উদ্যোগে ঢাকার ডেঙ্গু ঝুঁকি নিয়ে একটি বৈজ্ঞানিক গবেষণা হয়েছিল। আমিও অংশ নিয়েছিলাম একজন রিসার্চ অ্যাসোশিয়েট (ম্যাপিং) হিসেবে।

ছবির এই মশাটি এডিস ইজিপ্টাই- ডেঙ্গুর ভাইরাস বহনকারী মশার প্রজাতি। এরা নগরের আবর্জনা ও ড্রেনে হয় না। প্রকৃতপক্ষে কোনো নোংরা পানিতেই এরা বাঁচে না। এদের প্রজননস্থল আপনারই বাসার ফ্রিজের পানি, গাছের টব বা বাথরুমে জমা পানি, রাস্তায় ডাবের খোসা বা পরিত্যক্ত টায়ারে থাকা পরিষ্কার পানি।

ছবিতে আমরা একটি খালি হাউজিং প্লটে জন্মানো কচু গাছের ডগায় জমা পানি থেকে, আরেকটি নির্মাণাধীন বাড়ির নির্মাণ সামগ্রীতে জমা পানি থেকে অ্যাডিস মশার ডিম সংগ্রহ করছি। এরকম ১৪টি ওয়ার্ড থেকে আমরা নমুনা সংগ্রহ করেছি। এই ডিম পরে পরীক্ষাগারে ফুটিয়ে বাচ্চা বড় করে নিশ্চিত হয়েছিলাম এরা এডিস মশাই।

তখন সেই গবেষণার অনেক উপসংহারের মধ্যে একটা কথা বলা হয়েছিল Dhaka is sitting on a Dengue time-bomb। সেই টাইম বোম হয়তো এবছরই বিস্ফোরিত হয়েছে, বা আদৌ এখনো পুরোপুরি বিস্ফোরিত হয়নি।

সবার মনে রাখতে হবে সিটি কর্পোরেশন একা কোনোদিন ডেঙ্গু নির্মূল করতে পারবে না। যদি সবাই যার যার বাসা-বাড়ির এডিস নির্মূল না করেন।

পুনশ্চ: আপনি হাজার তেলাপোকা মারলেও আপনার প্রতিবেশী মারে না, তাই আপনার বাসায় তেলাপোকা নির্মূল হয় না। এডিসও তাই। আপনি মারবেন, কেউ না কেউ মারবে না। তাই দিনের বেলায়ও বিশ্রাম নিতে মশারির নিচে বিশ্রাম নিন।

আরেকটি কথা: অ্যাডিস মশা প্রধানত দিনে কামড়ায়, রাতে আলোকিত কক্ষে কামড়াতে পারে।

লেখক: গবেষক