হিরোইন থেকে ভিলেন মেগান মার্কেল

বিনোদন ডেস্ক
 | প্রকাশিত : ০১ আগস্ট ২০১৯, ১২:৩৮

দুই বছর আগেও ব্রিটিশ গণমাধ্যমের কাছে পছন্দের পাত্রী ছিলেন হলিউড অভিনেত্রী ও ব্রিটিশ রাজ পরিবারের ছোট পুত্রবধূ মেগান মার্কেল। মেগানের ব্যাপারে সকলেই বেশ উৎসাহী ছিল। তারা দাবি করেছিল, মেগানের মত কাউকে ব্রিটিশ রাজ পরিবারে কখনো দেখা যায়নি। কিন্তু সেই মেগানই হিরোইন থেকে ভিলেন হয়ে গেছেন ব্রিটিশ গণমাধ্যমের কাছে।

গত ৬ জুলাই প্রিন্স হ্যারি ও মেগান মার্কেলের ছেলে আর্চি হ্যারিসনকে উইন্ডসর ক্যাসেলের কাছে একটা চার্চে খ্রিষ্ট দীক্ষায় দীক্ষিত করা হয়। দীর্ঘ দিনের প্রথার বাইরে গিয়ে প্রকাশ্যে অনুষ্ঠানের পরিবর্তে এটি অনুষ্ঠিত হয় রুদ্ধদ্বারে। এ ঘটনা মেগানের বিরুদ্ধে কঠোর সমালোচনা তৈরি করে।

যুক্তরাজ্যের চলতি সপ্তাহের পত্রিকাগুলোতেও মেগানকে তেমন সহজ ভাবে নেয়া হয়নি। ভোগ ম্যাগাজিনের অতিথি সম্পাদক হিসেবে কাজ করার জন্য তার সমালোচনা করেছে ট্যাবলয়েড পত্রিকাগুলো। অনেকেই দাবি করেছেন, তার এমন সিদ্ধান্তকে ‘নির্বুদ্ধিতা’ বলে মনে করতে পারেন রানি এলিজাবেথ। ‘ট্রেইলব্লেজারস’-এর একটি তালিকায় রানির নাম না রাখায় মেগানের কঠোর সমালোচনা করেছে ‘দ্যা সান’ পত্রিকা। অন্যদিকে ‘দ্যা ডেইলি মেইল’ সতর্ক করে বলছে, মেগানের রাজনীতি থেকে দুরে থাকা উচিত।

এসব কারণেই ২০১৯ সালের বসন্ত এবং গ্রীষ্মে ব্রিটিশ ট্যাবলয়েড গুলোর প্রকাশনায় নিজেকে নারী ভিলেন হিসেবে খুঁজে পেয়েছেন ডাচেস অব সাসেক্স মেগান মার্কেল। দুই বছর আগেও ব্রিটিশ গণমাধ্যম থেকে বেশ সমীহ পেতেন মেগান। তবে এখন প্রায় প্রতিটি কাজের জন্য সমালোচনার মুখে পড়ছেন। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, ব্রিটিশ রাজ পরিবারের সঙ্গে তিনি খাপ খাইয়ে উঠতে পারছেন না।

মেগান তার বিয়েতে যে মুকুট পরেছিলেন তাতে রাজি ছিলেন না রানি এলিজাবেথ। কারণ ধারণা করা হয়েছিল সেটা রাশিয়ার তৈরি। সে সময়টাতে সার্গেই এবং ইউলিয়া স্ক্রিপালকে রাশিয়ান গুপ্তচরদের হাতে বিষ প্রয়োগের অভিযোগ ছিল। সেকারণেই রানি চাননি, কোনও ভাবে বিয়ের অনুষ্ঠান ঘিরে রাজনৈতিক নেতিবাচক পরিস্থিতি তৈরি হোক।

তখন থেকেই শুরু। আর এখন তো প্রায় সবকিছু নিয়েই সমালোচনার মুখে পড়েতে হচ্ছে মেগানকে। ঘর মেরামতের জন্য বড় অংকের অর্থ খরচ, সাধারণ মানুষের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার, তার জনসমুক্ষে আসা, এমনকি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করা নিয়েও তিনি সমালোচনার শিকার হচ্ছেন।

সমালোচনা রয়েছে মেগানের বাগদানের আংটি নিয়েও। নায়িকার বাগদানের আংটিতে তিনটি হীরা ছিল। এর মধ্যে দুইটি হ্যারির মা প্রিন্সেস ডায়ানার। আর একটি হ্যারি বতসোয়ানাত থেকে নিয়েছিলেন। হ্যারি নিজে এই আংটি ডিজাইন করেছিলেন। বিয়ের এক বছর পর মেগান আংটিটি আবারো ডিজাইন করার সিদ্ধান্ত নেন এবং এর সঙ্গে আরো হীরা যুক্ত করেন। যা নিয়ে অনেকেই বিরক্তি প্রকাশ করেন।

মাত্র এক মাসের মধ্যে তিনজন ন্যানিকে বরখাস্ত করেও ব্রিটিশ গণমাধ্যমে ব্যাপক সমালোচিত হন মেগান। পত্রিকাগুলোর দেয়া তথ্য মতে, ওই ন্যানিরা মেগানকে দুটি নাম দিয়েছিল। একটি হলো মি-গেইন, আরেকটি ডাচেস ডিফিকাল্ট। এ নামগুলো দেয়া হয়েছিল মেগানের উচ্চ স্বর এবং প্রতিদিন সকালে বিভিন্ন চাহিদা উল্লেখ করে মেইল পাঠানোর কারণে।

রাজপরিবারের দায়িত্বে থাকা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন বলেন, ‘রাজপরিবারের কেউ সাধারণ মানুষের সঙ্গে বিবাদে জড়াবে না। কিন্তু মেগান এবং প্রিন্স হ্যারিকে একবার বাক বিতন্ডায় জড়াতে দেখা গেছে। কিছু জায়গায় অটোগ্রাফ দেয়া নিষেধ থাকলেও মেগানকে দেখা গেছে তা খুশি মনেই করতে। তিনি প্রচলিত সব নিয়ম-কানুন ভাঙতে চান। যা সাধারণ মানুষ পছদ করে না।’

ব্রিটিশ ম্যাগাজিনগুলো অনেক সময় রাজ পরিবারের এক সদস্যকে অন্য সদস্যের সঙ্গে তুলনা করে তার বিরুদ্ধে লেখে। রানি এলিজাবেথকে দেখানো হয়েছে, দীর্ঘ সময় ধরে তিনি তার দায়িত্ব কতটা নিবিড় ভাবে পালন করে আসছেন তার আদর্শরূপ হিসেবে। একই সময়ে তার বোন প্রিন্সেস মার্গারেট ছিলেন উল্টো। তাকে প্রেমিকের সঙ্গে ঘুরতে, ধূমপান ও মদপান করা, পার্টিতে ব্যস্ত থাকা, এমনকি গোসলের পোশাকে দেখা গেছে।

প্রিন্সেস ডায়ানার সময় তার নম্রতার জন্য ব্যাপক প্রশংসা করা হতো। কিন্তু তার ভালো বন্ধু সারা ফারগুসন যখন ডাচেস অব ইয়র্ক হলেন, তখন তারা একই রকম আচরণ করেনি। এখন এই প্রবণতা শুরু হয়েছে বড় বধু কেট মিডলটন এবং ছোট বধূ মেগানের মধ্যে। কেটের ইমেজ তৈরি হয়েছে নিখুঁত এবং ‘জন্মগত ভাবে মা’ হিসেবে। কিন্তু যখন মেগানের প্রসঙ্গ আসে তখন প্রিন্স ফিলিপের একটা উক্তি অনেকেই আওড়ান, ‘একজন অভিনেত্রীর সঙ্গে বাইরে যাওয়া যায়, কিন্তু বিয়ে নয়’।

ঢাকাটাইমস/০১ আগস্ট/এএইচ

সংবাদটি শেয়ার করুন

বিনোদন বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বিনোদন এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :