‘সংবাদমাধ্যমকে অসঙ্গতির বিরুদ্ধে কথা বলতে হবে’

প্রকাশ | ০২ আগস্ট ২০১৯, ১৯:৩২

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

জমকালো আয়োজনে অনলাইন নিউজপোর্টাল বিবার্তা২৪ ডটনেটের অষ্টম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত হয়েছে। শুক্রবার বিকালে রাজধানীর এলিফ্যান্ট রোডের দীপনপুরে এ উপলক্ষে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে বিশিষ্টজনেরা বক্তব্য দেন।  সভায় সভাপতিত্ব করেন বিবার্তা২৪ ডটনেটের সম্পাদক বাণী ইয়াসমিন হাসি।

অনুষ্ঠানে সাবেক তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেন, ‘সংবাদমাধ্যম সমাজের দর্পণ। তাকে সমাজ ও রাষ্ট্রের অসঙ্গতির বিরুদ্ধে কথা বলতে হবে। কেউই নিরপেক্ষ নয়, যার যার দল আছে। নিজস্ব মত আছে। তবে নীতির বাইরে যাওয়া কখনো উচিত নয়।’

ইনু বলেন, ‘দীর্ঘ ১০ বছর ধরে আমরা পরীক্ষা দিচ্ছি। পরীক্ষাটি হলো জঙ্গি, সন্ত্রাস, রাজাকাদের গর্তের ভেতর থেকে বের করা। ইতিমধ্যে সেটি করতেও আমরা সক্ষম হয়েছি।’

বর্তমান চমৎকার সময়ের উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বর্তমান কিন্তু নষ্ট সময় নয়। গত ১০ বছরের থেকে চমৎকার সময়। জঙ্গি, আগুন সন্ত্রাস, রাজাকারদের বিরুদ্ধে তুমুল যুদ্ধ করে আমরা এমন চমৎকার সময়ে পৌঁছেছি।’

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের বিবার্তার প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, ‘গণমাধ্যমকে আমরা সমাজের দর্পণ হিসেবে মনে করি। সমাজে কী ঘটছে এবং কী ঘটছে না তা গণমাধ্যমের মাধ্যমে একটি চিত্র দেখতে পাই। যা দেখে একটা সমাজকে মূল্যায়ন করা যায়। কিন্তু দর্পণটা যদি কোনো কারণে অস্বচ্ছ হয় তাহলে ছবির মানটা ভালো আসবে না। সমাজে কী ঘটছে তা সঠিকভাবে দেখতে পাবো না।’

গণতন্ত্র চর্চার জন্য গণমাধ্যম একটি বড় মাপের প্রতিষ্ঠান উল্লেখ করে কাদের বলেন, ‘সমাজের মানুষ সুশাসন চায়। সেই সুশাসন কীভাবে প্রতিষ্ঠা করব তার একটি হচ্ছে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা। গণতন্ত্র হচ্ছে ন্যায়বিচারভিত্তিক সমাজব্যবস্থা। সেখানে বৈষম্য থাকবে না, দারিদ্র থাকবে না, কোনো বঞ্চনা থাকবে না, নির্যাতন থাকবে না। এইগুলো প্রতিষ্ঠিত করাকে সুশাসন বলে। আমরা গণতন্ত্র চর্চা করি সুশাসন প্রতিষ্ঠা করার জন্য। গণতন্ত্র ও সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য গণমাধ্যম সহায়ক ভূমিকা পালন করে।’

নাটোর-৪ (বড়াইগ্রাম-গুরুদাসপুর) আসনের সংসদ সদস্য, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, সাবেক প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক আবদুল কুদ্দুস বিবার্তা প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, ‘একটি সংবাদপত্র রাষ্ট্র সমাজের দর্পণ। সাংবাদিকদের বস্তুনিষ্ঠ ও সঠিক সংবাদ তুলে ধরতে হবে। রাষ্টের উন্নয়নে সহযোগী হয়ে কাজ করতে হবে। এক্ষেত্রে বিবার্তা একটি ভালো ভূমিকা রাখছে।’

আব্দুল কুদ্দুস বলেন, ‘সংবাদপত্রের কাজ শুধু নেগিটিভ নিউজ করা নয়। সরকার যে উন্নয়ন করছে তাও ভালোভাবে তুলে ধরতে হবে।’ সবশেষে বিবার্তার উত্তরোত্তর সাফল্য কামনা করেন।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সাবেক প্রসিকিউটর ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ বিবার্তার সাফল্য কামনা করে বলেন, ‘সংবাদের ক্ষেত্রে বিগত দিনে যেমন আপস করেনি তেমনি আগামী দিনে বস্তুনিষ্ঠ সংবাদের ক্ষেত্রে কোনো আপস করবে না বিবার্তা।’ তিনি বিবর্তার সাফল্য কামনা করেন।

সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুস বিবার্তার প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, ‘একটি গোষ্ঠী বলে বেড়াচ্ছে দেশে গণতন্ত্র নেই। কিন্তু নির্বাচন এলে অংশ নেবে না। আর নিলেও নির্বাচনটা কীভাবে প্রশ্নবিদ্ধ করা যায় সেই চেষ্টা তারা করে।’ তিনি বলেন, ‘ভোট করবেন কিন্তু পোস্টার, লিফলেট, ব্যানার দেবেন না। ভোটারের বাড়ি বাড়ি যাবেন না। তো আপনাদের কে ভোট দেবে।’

সারাবাংলা ডটনেটের সম্পাদক সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা বলেন, ‘বর্তমানের মশার মতো যেভাবে অনলাইনগুলো যেভাবে বংশ বিস্তার করছে সেগুলো মানুষের কোনো কাজে লাগছে না। এগুলো হলো ক্লিক সাংবাদিকতা।’

‘বাংলাদেশ বর্তমানে আট থেকে ১০ হাজার অনলাইন আছে। কিন্তু কারো জিজ্ঞাসা করলে ১০ থেকে ১২টির বেশি নাম কেউ বলতে পারবেন না। তবে সাংবাদিকতার সবচেয়ে গণতান্ত্রিক মাধ্যম হলো অনলাইন। কারণ এখানে মানুষ খবর পড়ার পাশাপাশি নিউজটির মূল্যায়ন করতে পারে এবং ফিডব্যাক দিতে পারে।’

(ঢাকাটাইমস/০২আগস্ট/জেবি)