ফেনীতে জনপ্রিয় হচ্ছে ই-সেবা

আরিফ আজম, ফেনী
 | প্রকাশিত : ০৩ আগস্ট ২০১৯, ০৯:১২

জেলার ফুলগাজী উপজেলার আনন্দপুর ইউনিয়নের তালপুকুরিয়া গ্রামে গত ১৯ ফেব্রুয়ারি গ্যাসের অবৈধ সংযোগের বিষয়ে ই-সেবার মাধ্যমে অভিযোগ দিয়েছেন জনৈক এক ব্যক্তি। ওই অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, ‘ওই এলাকার কবির আহাং এর ছেলে কামাল উদ্দিন ৭০-৮০ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়ে ১০ পরিবারকে অবৈধভাবে গ্যাস সংযোগ প্রদান করে। প্রতিচুলা বাবদ ৭০০ টাকা হারে আদায়ও করছে।’

বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ফুলগাজী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইফুল ইসলামকে দায়িত্ব দেয়া হয়। তিনি জানিয়েছেন, দুই-একদিনের মধ্যে প্রতিবেদন পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

আরেকটি উদাহরণ দেয়া যায়, চলতি বছরের ১০ ফেব্রুয়ারি সরকারি সহায়তা চেয়ে ই-সেবার মাধ্যমে আবেদন করেছিলেন জেলা রোভার স্কাউটস সম্পাদক জয়নাল আবদীন। এ সংক্রান্ত চিঠিটি ত্রাণ ও দুর্যোগ শাখায় প্রেরণ করা হলে ২১ মার্চ ৫০ হাজার টাকার অনুদান প্রদান করা হয়।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, গত ৭ মাসে ৬ হাজার ৬০৩টি আবেদন জমা পড়েছে। এর মধ্যে নাগরিক ও দাপ্তরিক সেবা রয়েছে। জানুয়ারিতে ১ হাজার ৩২০, ফেব্রুয়ারিতে ৯৩৮, মার্চে ৯১৭, এপ্রিলে ৮৩৬, মে ৬৩৬, জুনে ৩৯৭ ও জুলাই মাসে ১ হাজার ৫৭২ জন সেবা নিয়েছেন। আবেদন অনুযায়ী নিষ্পত্তি হয়েছে শতভাগ।

পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০১৮ সালে ৯ হাজার ৩৬০, ২০১৭ সালে ৭ হাজার ৯৪ ও ২০১৬ সালে ২৯২ জন সেবা নিয়েছেন।

জেলা প্রশাসন সূত্র আরো জানায়, জেলা প্রশাসন থেকে সাধারণ মানুষ হয়রানিমুক্ত সেবা পেতে কার্যালয়ের নিচ তলায় ফ্রন্ট ডেস্ক খোলা হয়। আইসিটি শাখা থেকে ফ্রন্ট ডেস্ক নিয়ন্ত্রণ করা হয়। ই-সেবা কর্মরতদের তত্ত্বাবধানের দায়িত্বে আছেন সহকারী কমিশনার (আইসিটি) এমএন আবদুল্লাহ আল মামুন। আবেদন অনুযায়ী বিভিন্ন দপ্তর থেকে সমাধান করা হয়। উপজেলা পর্যায়ের আবেদন নিষ্পত্তি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কিংবা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কে দায়িত্ব দেয়া হয়।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদপ্তরের সহকারী প্রোগ্রামার রাশেদুল আলম জানান, নানা ধরনের সমস্যায় সাধারণ ও বিপদগ্রস্ত মানুষকে ই-সেবার মাধ্যমে সহযোগিতা করা হয়। এক্ষেত্রে অনিয়ম-দুর্নীতির খবরও যে কোন নাগরিক জেলা প্রশাসককে সহজে অবগত করতে পারেন।

জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার (আইসটি) এমএন আবদুল্লাহ আল মামুন ঢাকা টাইমসকে বলেন, সহজে স্বল্পসময়ে জনগণের কাক্সিক্ষত সেবা প্রদানে জেলা প্রশাসন নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এছাড়া ৩৩৩ কল সেন্টারের মাধ্যমে ঘরে বসেই জেলার বিভিন্ন তথ্যের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের তথ্য জানাতে পারবে। তাদের সাথে যোগাযোগ করে কাক্সিক্ষত সেবা গ্রহণ করবে।

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) সুমনী আক্তার ঢাকা টাইমসকে বলেন, বর্তমান সরকার তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে সেবা সহজকরণের জন্য ই-সেবা কার্যক্রম চালু করেছে। ক্রমেই এটির জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পাচ্ছে।

জেলা প্রশাসক ওয়াহিদুজ্জামান বলেছেন, ই-সেবার পাশাপাশি জেলা প্রশাসন থেকে নাগরিক সেবা পেতে কল সেন্টার খোলা হয়েছে। ৩৩৩ ফোন দিয়ে সরকারি সেবা প্রাপ্তির পদ্ধতি, জনপ্রতিনিধি ও সরকারি কর্মচারীদের সাথে যোগাযোগের তথ্য, পর্যটন আকর্ষণযুক্ত স্থানসমূহ, জেলা সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য জানাতে পারবে। তথ্য জানার পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক সমস্যা (বাল্যবিবাহ, যৌতুক, ইভটিজিং, নারী পাচার, চোরাচালান, মাদকদ্রব্য ক্রয়-বিক্রয় ও সেবন, জুয়া, সংঘর্ষ-সংঘাত ইত্যাদি) বিষয়ে প্রতিকার, জরুরি ও দুর্যোগকারী সাহায্যের জন্য অনুরোধ, রাস্তাঘাট, ব্রিজ, কালভার্ট সংস্কারের বিষয়ে জানাতে পারবেন।

(ঢাকাটাইমস/৩আগস্ট/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :