ডেঙ্গুর নিরাময়ে এল ‘ডেঙ্গভ্যাক্সিয়া’
বিশ্বের নানা দেশে ডেঙ্গু আতঙ্কের মধ্যেই এই রোগ দ্রুত নিরাময়ে একটি ওষুধের নাম পাওয়া গেছে। যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য ও ওষুধ বিষয়ক প্রতিষ্ঠান ডেঙ্গভ্যাক্সিয়া নামের একটি ওষুধের অনুমোদন দিয়ে রেখেছে। তবে এখনো সারা বিশ্বে এটি পৌঁছেনি।
সাধারণত যদি প্রথমবার কেউ ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হন, তাহলে তার ঝুঁকি তৈরি হয় না। কিন্তু দ্বিতীয় বা তৃতীয়বার আক্রান্ত হলে তার জন্য তৈরি হয় আশঙ্কা। ডেঙ্গভ্যাক্সিয়া এই ধরনের রোগীকে রক্ষা করে। নয় থেকে ষোল বছর বয়সীদের জন্য ওষুধটি প্রযোজ্য।
বিশ্বে প্রথম মেক্সিকোতে ডেঙ্গভ্যাক্সিয়া ওষুধের অনুমোদন দেয়া হয়। চলতি বছরের মে মাসে যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসন (এফডিএ) তার দেশেও এর ব্যবহারের অনুমোদন দেয়। তারা এক বিবৃতিতে জানায়, ডিইএনভি-ওয়ান, ডিইএনভি-টু, ডিইএনভি-থ্রি, ডিইএনভি-ফোর নিরাময়ে ডেঙ্গভ্যাক্সিয়া কাজ করবে।
এফডিএর প্রধান নির্বাহী পিটার মার্কস বলেন,‘ডেঙ্গু ভাইরাসের কয়েকটি স্তর রয়েছে। প্রাথমিকভাবে এ রোগ শনাক্ত করা কঠিন। কিন্তু প্রথমবার এ রোগে আক্রান্ত হলে তা থেকে আরোগ্য লাভের সম্ভাবনা থাকে। কিন্তু একই ব্যক্তি পুনরায় ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হলে তার জন্য ঝুঁকি তৈরি হয়। ডেঙ্গভ্যাক্সিয়া ওষুধটি দ্বিতীয়বার আক্রান্ত ব্যক্তিকে মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা করবে।’
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানায়, ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশসহ বিশ্বের ২০টি দেশে ডেঙ্গভ্যাক্সিয়া ওষুধের অনুমোদন আছে। তাদের লক্ষ্য হচ্ছে, ২০২০ সালের মধ্যে অন্তত ২৫ ভাগ ডেঙ্গু আক্রান্তের হার হ্রাস করা। এই রোগ নিরাময়ে আরো পাঁচটি ওষুধ আবিষ্কারের চেষ্টা চলছে বলেও জানান কর্মকর্তারা। তবে ডেঙ্গভ্যাক্সিয়া ওষুধ সম্পর্কে বিতর্ক আছে। কারণ, যেসব রোগী প্রথমবার ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়নি, তাদের জন্য এ ওষুধ ব্যবহার মারাত্মক ক্ষতিকর। এ কারণে ফিলিপাইন সরকার ওষুধটির ওপর সাময়িক নিষেধাজ্ঞা জারি করে।
এই ওষুধের কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও আছে। এর ফলে মাথাব্যথা, মাংসপেশীতে ব্যথা, শরীর অবসন্ন, হালকা জ্বরের ভাব তৈরি হয়। তবে গবেষকরা জানিয়েছেন, এই পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া বন্ধে তারা কাজ করছেন।
বিশ্বের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ মানুষ ডেঙ্গু রোগের ঝুঁকিতে আছে। প্রতি বছর প্রায় ৪০ কোটি মানুষ ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়। গবেষকরা আশঙ্ক্ষা করছেন, ভবিষ্যতে ডেঙ্গুতে আক্রান্তের প্রায় ৫০ কোটিতে পৌঁছাতে পারে। প্রতি বছর প্রায় বিশ হাজার মানুষ ডেঙ্গু রোগে মারা যায়।
সাধারণত গ্রীষ্ম-মণ্ডলীয় অঞ্চল ল্যাটিন আমেরিকা, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপপুঞ্জ ও যুক্তরাষ্ট্রের কয়েকটি অঞ্চলে ডেঙ্গু রোগের প্রকোপ দেখা যায়। ১৯২৯ সাল থেকে গবেষকরা ডেঙ্গু নিরাময়ের ওষুধ আবিষ্কারের চেষ্টা করছেন।
ঢাকাটাইমস/০৫জুলাই/আরআর/ডব্লিউবি