ডেঙ্গুর সুযোগ নিচ্ছেন ব্যবসায়ীরা

সৈয়দ ঋয়াদ, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ০৬ আগস্ট ২০১৯, ১০:৫৪

ডেঙ্গু জ্বরের প্রকোপ অতীতের রেকর্ড ছাড়িয়ে যাওয়ার মধ্যে পোয়াবারো মশা নিধন সামগ্রীর ব্যবসায়ীদের। আতঙ্কের মধ্যে মশারি, অ্যারোসল আ বাচ্চাদের গায়ে মাখার মলম বা স্প্রের দাম বেড়ে গেছে অনেকটাই। ব্যবসায়ীরা বাড়তি টাকা আদায় করছে ক্রেতাদের কাছ থেকে।

নানা সময় দেখা গেছে কোনো সময় কোনো পণ্যের চাহিদা বেড়ে গেলে দাম বেড়ে যায়। এ নিয়ে তীব্র সমালোচনা হয়। ডেঙ্গুর বিস্তারের মধ্যে মশানিরোধ সামগ্রীর দাম বাড়া নিয়েও হচ্ছে সমালোচনা। জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরও এ নিয়ে হতাশার কথা বলেছে।

শিশির চক্রবর্তী রমনা থানা লাগোয়া লাজ ফার্মায় গেছেন মশা নিরোধক ওডোমস কিনতে। এই মলমটি গায়ে মাখিয়ে রাখলে মশা বসে না। দাম জিজ্ঞেস করতেই কাউন্টারে থাকা ম্যানেজার জানান, ‘ওডোমস পাঁচশ টাকা’।

শিশির বলেন, ‘বিরানব্বই রুপির ওডোমস দুইশ টাকায় কিনেছি, সর্বশেষ দুশ আশি টাকায়। তাই বলে পাঁচশ?’

এই কথা বলার সঙ্গে সঙ্গেই কাউন্টারে থাকা বিক্রেতা তার হাত থেকে মশা নিরোধক এই অয়েন্টমেন্ট ক্রিমটি নিয়ে রেখে দেন।

অতিরিক্ত দাম কেন রাখছেন এমন প্রশ্নেও কাউন্টার ম্যনেজারের কোনো সদুত্তর পাওয়া যায়নি।

বিদেশ থেকে আমদানি মশা নিরোধক প্রতিটি পণ্যের ক্ষেত্রেই যেন স্বেচ্ছাচারিতা চলছে। ওডোমস, রোলঅন, সেরমুজ, ফ্রেসেন্ট মসকিউটো কিলার এই ধরনের প্রতিটি পণ্যে ১০০ থেকে ১৫০ টাকা বেশি রাখছেন দোকানিরা। কোনো কোনোটির দাম স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় দ্বিগুণ বা তিনগুণ দামেও বিক্রি হচ্ছে।

কাঁঠালবাগানের ‘মা’ এন্টারপ্রাইজের মালিক আমিন মোল্লার কাছে বেশি দাম রাখার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সব জিনিসের দাম ইমপের্টাররা বাড়াইছে। মাল নিতে গেলে আমাদেরকেই বলে নিলে নেন, না নিলে রেখে সোজা চলে যান। বেশি দাম রাখার বিষয়ে তাদেরকে প্রশ্ন করলে বলে, কিনে আনতে বেশি টাকা খরচ হইছে, তাই কম দামে বেচতে পারব না।’

‘বিদেশি কয়েল স্প্রের দাম ২০ বা ৩০ টাকা করে বেশি রাখছে। তবে দেশীয় বিভিন্ন মশার স্প্রের ও কয়েলের দাম বাড়ায়নি কেউ।’

বেড়েছে ইলেকট্রিক ব্যাট, মশারির দাম

গুলিস্তানের পাইকারি দোকানে গত মাসেও যে মশারিগুলো বিক্রি হয়েছে ২০০ থেকে ৪০০ টাকায়, সেগুলোই এখন বিক্রি হচ্ছে ৪০০ থেকে ১২০০ টাকায়। গুলিস্তান হকারে মার্কেটের নাজিম এন্টারপ্রাইজেরে মালিক আবদুল আহাদ বলেন, ‘আমাদের স্টকের মশারি গত কয়েকদিনে শেষ হয়ে গেছে। গত পাঁচ বছরে যে পরিমাণ মশারি বিক্রি করেছি এবারই করেছি তার চেয়ে বেশি।’

মশারি প্রতি ২০০ থেকে ৪০০ টাকা অতিরিক্ত রাখার কথা স্বীকার করে এই বিক্রেতা বলেন, ‘মশারি একটা সলো (স্লো) আইটেম, জামা কাপড়ের মতো অনেক বেশি বিক্রি হয় না। এ বছরই ব্যতিক্রম।’

মশা মারার ইলেকট্রিক ব্যাটগুলো বিক্রি হচ্ছে চড়া দামে। ২০০ থেকে ২৫০ টাকা দামের একেকটি ব্যাট খোলা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৪৫০ থেকে ৬০০ টাকায়।

বায়তুল মোকাররম মার্কেটের একজন ক্রেতার সঙ্গে একটি ইলেকট্রিক ব্যাট নিয়ে দর কষাকাষি করছিলেন। ক্রেতা ৪৫০ টাকা বললেও তিনি ৬০০ টাকার কমে এই ব্যাট বিক্রি করবেন না। বাধ্য হয়ে ওই ক্রেতা ৫৫০ টাকা দিয়ে নিতেই রাজি হলেন।

হকার জসিম উদ্দীন বলেন, ‘আগে আমরাই ২০০ ও ২২০ টাকা দিয়ে বেচতে চাইতাম। এখন যেখান থেকে নিয়ে আসি এরা আমাদের কাছ থেকে ডাবল দাম রাখে। যে কারণে আমরা আর কম দামে বিক্রি করতে পারি না।’

ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক আব্দুল জব্বার মণ্ডল বলেন, পণ্যের চাহিদা বাড়লে এমনিতেই ব্যবসায়ীদের লাভ হয়। কিন্তু সুযোগে ব্যবসায়ীরা যেভাবে লোভী হয়ে উঠেন এটা অগ্রহণযোগ্য। আমরা কত জনকে আইনের আওতায় আনব? সবাই একই কাজ করছে। তারপরও আমরা এই ধরনের কাজে জড়িত ব্যবসায়ীদের জরিমানা করছি। সামনে আরও কঠোর পদক্ষেপ নেয়া হবে।’

ঢাকাটাইমস/৬আগস্ট/এসআর/এমআর

সংবাদটি শেয়ার করুন

বিশেষ প্রতিবেদন বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন এর সর্বশেষ

মজুত ফুরালেই বাড়তি দামে বিক্রি হবে সয়াবিন তেল

কোন দিকে মোড় নিচ্ছে ইরান-ইসরায়েল সংকট

ছাদ থেকে পড়ে ডিবি কর্মকর্তার গৃহকর্মীর মৃত্যু: প্রতিবেদনে আদালতকে যা জানাল পুলিশ

উইমেন্স ওয়ার্ল্ড: স্পর্শকাতর ভিডিও পর্নোগ্রাফিতে গেছে কি না খুঁজছে পুলিশ

জাবির হলে স্বামীকে বেঁধে স্ত্রীকে জঙ্গলে ধর্ষণ, কোথায় আটকে আছে তদন্ত?

নাথান বমের স্ত্রী কোথায়

চালের বস্তায় জাত-দাম লিখতে গড়িমসি

গুলিস্তান আন্ডারপাসে অপরিকল্পিত পাতাল মার্কেট অতি অগ্নিঝুঁকিতে 

সিদ্ধেশ্বরীতে ব্যাংক কর্মকর্তার মৃত্যু: তিন মাস পেরিয়ে গেলেও অন্ধকারে পুলিশ

রং মাখানো তুলি কাগজ ছুঁলেই হয়ে উঠছে একেকটা তিমিরবিনাশি গল্প

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :