মাথা গোঁজার ঠাঁই পেলেন প্রতিবন্ধী বাবুল

গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের ৩৯নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা বাবুল হোসেন। এক সময় রাজ মিস্ত্রির কাজ করতেন। পরিবার নিয়ে ভাল চলছিল তার সংসার। ১৯৯৮ সালে কর্মস্থলে যাওয়ার পথে কুমিল্লায় একটি সড়ক দুর্ঘটনায় তার বাম পা কেটে ফেলতে হয়। থাকতে হয় দীর্ঘদিন হাসপাতালের বেডে। এরই মধ্যে মারা যান বাবুলের পিতা আবেদ আলী। মা অন্যের বাড়িতে কাজ করে যা পায় তা দিয়ে সংসার চলে না। বাবার রেখে যাওয়া একটি মাটির ঘরে অনাহারে অর্ধহারে কাটতে থাকে দিন।

তাই বাবুল প্রতিবন্ধী অবস্থায় মাটি কাটার কাজ নেন। এই মধ্যে তার সংসারে মেয়ে নুসরাত জাহানের জন্ম হয়।

দুই বছর আগে দুর্ঘটনায় কাটা পায়ে পচন ধরে। চিকিৎসকের কাছে গেলে তিনি মাটি কাটার কাজ করতে বারণ করেন। কিন্তু কাজ না করলে কি করে চলবে সংসার? বাড়ি পাশে ছোট একটি চায়ের দোকান দিয়ে বসেন বাবুল। কিন্তু নিজের পুঁজিগুলো বাকি কাস্টমারের হাতে চলে গেলে দোকান বন্ধ হয়ে যায়। এভাবে অসহায় অবস্থায় দিন কাটতে থাকে বাবুলের।

চলতি বছরের বৃষ্টিতে বাবার রেখে যাওয়া ঘরটির এক পাশ ভেঙে পড়ে। এ অবস্থায় একবারেরই অসহায় হয়ে পড়েন তিনি। ঠিক সেই মুহূর্তে বাবুলের অসহায়ত্বের কথা শুনে তার বাড়িতে হাজির হন গোল্ডেন ড্রিমস্ অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম শতবার্ষিকী উপলক্ষে গোল্ডেন ড্রিমস্ অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোগে বীর মুক্তিযোদ্ধা, অসহায় বিধবা, এতিম, প্রতিবন্ধী ও সুবিধাবঞ্চিতদের জন্য ১০০টি গৃহ নির্মাণ ও হস্তান্তর প্রকল্পের কাজ চলছে দীর্ঘদিন যাবত। এরই আলোকে ইতোমধ্যে ৬২টি গৃহ হস্তান্তরও করা হয়েছে।

তারই ধারাবাহিকতায় গাজীপুর মহানগর যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক ও গোল্ডেন ড্রিমস্ অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম অসহায় বাবুলের পাশে দাঁড়িয়ে গৃহদানের আশ্বাস প্রদান করেন।

গত ৭ মে বাবুলের পাকা ঘরটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়। বুধবার সকালে ঘরটি হস্তান্তর করা হয় বাবুল ও তার পরিবারের কাছে।

ঘর হস্তান্তরের সময় উপস্থিত ছিলেন গাজীপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আবু নাসার উদ্দিন, টঙ্গী সরকারী কলেজের অধ্যক্ষ ও জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট সদস্য রফিকুল ইসলাম, স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর শাহীনুল আলম মৃধা, সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর শিরিন আক্তার, যুবলীগ নেতা কাজী কামালু, ইসমাইল হোসেন প্রমুখ।

গোল্ডেন ড্রিমসের চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা রাজনীতি করি জনগণের জন্য। অসহায় ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষের পাশে থাকাটাই আমাদের রাজনীতির মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত।’

(ঢাকাটাইমস/৭আগস্ট/এলএ)