পাটুরিয়ায় চাপ, দৌলতদিয়া ফাঁকা

এম. মনিরুজ্জামান, রাজবাড়ী
 | প্রকাশিত : ০৯ আগস্ট ২০১৯, ২০:০২

কয়েক দিন ধরে বৈরী আবহাওয়া, তীব্র স্রোত আর ফেরি স্বল্পতার কারণে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলার মানুষের অন্যতম প্রবেশদ্বার রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ফেরিঘাটে। নদীপারে অপেক্ষায় থাকতে হয়েছে সহস্রাধিক যানবাহনকে। এর মধ্যে পশুবাহী ট্রাকের চাপ ছিল উল্লেখযোগ্য হারে।

তবে শুক্রবার সকাল থেকে দৌলতদিয়া ঘাটের চিত্র একেবারেই আলাদা।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহনের (বিআইডব্লিউটিসি) দৌলতদিয়া ঘাট কর্তৃপক্ষের দাবি শুক্রবার সকাল থেকেই গরুর গাড়ির চাপ কমে যাওয়ায় একেবারে স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে এই ঘাট এলাকা। তবে পাটুরিয়া পারে যানবাহনের চাপ রয়েছে। ফেরি কম ও নদীতে তীব্র স্রোত থাকায় ধীরগতিতে ফেরি চলায় পারের সময় দ্বিগুণ লাগছে। ফলে দৌলতদিয়া পারে যানবাহনের অপেক্ষা করতে হচ্ছে বলেও জানান শাখা ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) আবু আব্দুল্লাহ রনি।

স্বাভাবিক সময়ে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়ায় পারাপারে কাজে ব্যবহৃত ২০টি ফেরির মধ্যে কমবেশি থাকলেও ঈদ উপলক্ষে ১৯টি ফেরি পারাপারে নিয়োজিত রয়েছে। স্বাভাবিক সময়ে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুট দিয়ে প্রতিদিন দুই হাজারের ওপরে ছোট বড় যানবাহন চলাচল করে। আর ঈদের সময় সে সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় দ্বিগুণ/তিনগুণ। অথচ ঘাট কর্তৃপক্ষ সে তুলনায় ফেরির সংখ্যা বাড়ায় না একটিও। এর ওপর ২/১টি ফেরি পড়ে আছে নষ্ট হয়ে।

শুক্রবার সরেজমিনে দেখা যায়, দৌলতদিয়া ঘাট এলাকায় যানবাহনের খুব একটা ভিড় নেই। তবে ঢাকা থেকে বাড়ি ফেরা মানুষেরা ফেরি ও লঞ্চে পার হতেই মূল সড়কে চলে আসছেন। কারণ দক্ষিণাঞ্চলগামী যানবাহন কম থাকায় এই প্রতিযোগিতা। তাছাড়া ২/৩ গুণ বেশি ভাড়া নিচ্ছে বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে।

ঢাকা থেকে মাগুরাগামী ঈগল পরিবহনে আসা যাত্রী সাইফুল ইসলাম ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘পাটুরিয়া এলাকায় নদী পারের অপেক্ষায় যানবাহনের চাপ রয়েছে। স্রোত বেশি থাকায় ফেরি পার হতে সময় লেগেছে।’

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহনের (বিআইডব্লিউটিসি) দৌলতদিয়া ঘাট শাখার ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) আবু আব্দুল্লাহ রনি ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘এখানে কোনো ফেরির স্বল্পতা নেই। তীব্র স্রোতের কারণে ফেরিগুলো ঠিকমতো চলতে পারছে না। স্বাভাবিক সময়ের থেকে দ্বিগুণ সময় লাগায় ফেরির টিপ সংখ্যা কমে গেছে। তাছাড়া এক সাথে অনেক গাড়ি প্রবেশ করায় ঘাটে যানজট সৃষ্টি হলেও শুক্রবারে তার ভিন্নতা রয়েছে।’

বিআইডব্লিউটিএ দৌলতদিয়া লঞ্চঘাটের সুপার ভাইজার মহম্মদ আলী ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘আমাদের কোনো লঞ্চ বসে নেই। দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে ২২টি লঞ্চ পারাপারে কাজ করছে। এপারে চাপ খুব একটা নেই তবে ওপার থেকে যখন লঞ্চগুলো আসছে তখন চাপ রয়েছে যাত্রীদের। বৈরী আবহওয়া না হলে আশা করছি ঈদে ঘরেফেরা মানুষগুলো কোনো সমস্যা ছাড়াই বাড়ি ফিরতে পারবে।’

এ বিষয়ে রাজবাড়ী পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘ঈদ উপলক্ষে জেলা পুলিশ থেকে ২৬০ জন পুলিশ দৌলতদিয়ায় রয়েছেন এবং হাইওয়ে পুলিশের ৬০ জন পুলিশ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাসহ জনগণের সার্বিক সহযোগিতায় নিয়োজিত আছেন।’

ঈদে ঘরে ফেরা বা কর্মস্থলে ফিরে যেতে যেকোনো ধরনের হয়রানি হলে সরাসরি তাকে জানানোর অনুরোধও করেন পুলিশ সুপার।

গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুবায়েত হায়াত শিপলু ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘যেকোনো ধরনের হয়রানি বা জনদুর্ভোগ এড়াতে ঘাটে সার্বক্ষণিক জেলা প্রশাসন থেকে এবং উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) নিয়োজিত রয়েছেন। তারা আগামী ২০ আগস্ট পর্যন্ত ঘাটে দায়িত্ব পালন করবেন। আশা করছি কোনো ধরনের হয়রানি ছাড়াই ঘরে মানুষগুলো নির্বির্ঘ্নে ঘাট এলাকা ত্যাগ করতে পারবেন।’

(ঢাকাটাইমস/০৯আগস্ট/জেবি)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :