টাঙ্গাইলে ১২ ঘণ্টায় ঝরল ১০ প্রাণ

নিজিস্ব প্রতিবেদক, টাঙ্গাইল
 | প্রকাশিত : ০৯ আগস্ট ২০১৯, ২৩:১৭

টাঙ্গাইলের বিভিন্ন উপজেলায় ১২ ঘণ্টায় সড়ক দুর্ঘটনাসহ পৃথক ঘটনায় কলেজছাত্রসহ দশজন নিহত হয়েছেন।

শুক্রবার সকাল থেকে রাত পর্যন্ত পৃথক স্থানে এ ঘটনা ঘটে। সংশ্লিষ্ট থানার পুলিশ এসব ঘটনা নিশ্চিত করেছেন।

টাঙ্গাইল সদর

শুক্রবার দুপুরে টাঙ্গাইল সদরের কাগমারী ব্রিজের রাস্তার পাশের খড়ের পালার নিচ থেকে অজ্ঞাত এক ব্যক্তির গলিত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

টাঙ্গাইল মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মীর মোশারফ হোসেন বলেন, ধারণা করা হচ্ছে দুর্বৃত্তরা এক থেকে দের মাস আগে তাকে হত্যার পর খড়ের পালার নিচে ফেলে রেখে যায়। খবর পেয়ে তার লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এখনও নিহতের নাম-পরিচয় জানা যায়নি।

মির্জাপুর

শুক্রবার সকাল সাড়ে ছয়টার দিকে মোটরসাইকেলযোগে ঢাকা থেকে নাটোর যাচ্ছিলেন নাজমুল হোসেন ও তার সহকর্মী জাহাঙ্গীর হোসেন। পথে মির্জাপুর উপজেলার গোড়াই এলাকায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মোটরসাইকেলটি দুর্ঘটনার কবলে পড়ে নাজমুল মোটরসাইকেল থেকে ছিটকে পড়ে যান। এসময় পেছন থেকে একটি ট্রাক নাজমুলকে চাপা দিলে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। নাজমুল নাটোরের আটদিঘা এলাকার বাসিন্দা ও নৌবাহিনী ঢাকা সদর দপ্তরের কর্মরত কর্পোরাল।

এদিকে উপজেলার মুশুরিয়াঘোনা এলাকা থেকে শাহীন মিয়ার সঙ্গে মোটরসাইকেলযোগে বাড়িতে যাচ্ছিল তার ভাতিজি সামিয়া আক্তার। তাদের বহনকৃত মোটরসাইকেলটি মহাসড়কের কদিমধল্যা বাসস্ট্যান্ডে পৌঁছালে পেছন থেকে একটি বাস মোটরসাইকেলটিকে চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই সামিয়া (১০) মারা যায়। এ ঘটনায় শিশুটির চাচা আহত শাহীন মিয়া (৩০) ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। সামিয়া আক্তার বাসাইল উপজেলার কাঞ্চনপুর গ্রামের শামীম আল মামুনের মেয়ে। শাহীন আব্দুল কদ্দুছ মিয়ার ছেলে।

অপরদিকে, সকাল ১০ টার দিকে উপজেলার হারিয়া গ্রামের ছবুর মিয়ার স্ত্রী সুফিয়া বেগম (৬০) তার ছেলে সোহাগ মিয়ার সঙ্গে মোটরসাইকেলযোগে ঢাকা থেকে বাড়ি ফিরছিলেন। কালিয়াকৈর এলাকায় পৌঁছালে মোটরসাইকেলটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে তারা ছিটকে পড়েন। এসময় উত্তরবঙ্গগামী বাসের চাপায় ঘটনাস্থলেই সুফিয়া বেগম মারা যান।

মির্জাপুরের গোড়াই হাইওয়ে থানার ওসি রাইজুল ইসলাম জানান, নিহতদের মধ্যে দুইজনের লাশ হাইওয়ে থানা পুলিশের হেফাজতে রয়েছে। এছাড়াও কর্পোরাল নাজমুল হোসেনের লাশ ময়না তদন্তের জন্য টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

কালিহাতী

কালিহাতীতে ট্রেনে কাটা পড়ে রাবি তালুকদার ফয়সাল (২০) নামের এক কলেজছাত্র নিহত হয়েছেন। শুক্রবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলার এলেঙ্গার রাজাবাড়ী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত রাবি এলেঙ্গা পৌর এলাকার ফুলতলা কেমি তালুদারের ছেলে। রাবি সরকারি শামসুল হক কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র ছিলেন।

কালিহাতী থানার এএসআই ফেরদৌস আলম বলেন, সকালে ফয়সাল অভিমান করে বাড়ি থেকে বের হয়। পরে তিনি রাজাবাড়ী এলাকায় নীল সাগর এক্সপ্রেসের ট্রেনের নিচে ঝাপ দেয়। এতে ট্রেনে কাটা পড়ে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।

ঘাটাইল

ঘাটাইলে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ওমর আলী (৪৫) নামের এক ভ্যানচালকের মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার সকালে উপজেলার সাধুর গলগন্ডা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

নিহতের পরিবার জানায়, প্রতিদিনের মতো কাজ শেষে বৃহস্পতিবার রাতে বাড়ির আঙ্গিনায় ওমর আলী তার ব্যাটারিচালিত ভ্যানটি চার্জ দিয়ে রাখে। পরে শুক্রবার সকালে চার্জের লাইন খুলতে গিয়ে বিদুৎস্পৃষ্ট হয়ে ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান।

বাসাইল

বাসাইলে সাপের কামড়ে আঙ্গুরি বেগম (৩৮) নামের এক গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার সকাল ৮টার দিকে মির্জাপুর কুমুদিনী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। নিহত আঙ্গুরি বেগম উপজেলার হাবলা ইউনিয়নের পাটখাগুরি এলাকার সবুজ খানের স্ত্রী।

নিহতের পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) রাত ৯ টার দিকে ঘরের দরজা খোলার সময় আঙ্গুরি বেগমকে সাপে কামড় দেয়। এসময় ওই সাপটিকে তিনি মেরে ফেলেন। এ ঘটনার পর রাত সাড়ে ১০টার দিকে তিনি বিষের যন্ত্রনা অনুভব করেন। পরে রাত সাড়ে ১১টার দিকে তাকে মির্জাপুর কুমুদিনী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার (৯ আগস্ট) সকাল ৮টার দিকে তার মৃত্যু হয়।

নিহতের দেবর মতিন খান জানান, সকাল ৮টার দিকে মির্জাপুর কুমুদিনী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। তার এক ছেলে ও তিন মেয়ে রয়েছে। এ ঘটনায় নিহতের স্বামী ও তাদের চার সন্তান দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।

সখীপুর

সখীপুর উপজেলায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে জমেলা বেগম (৩৮) ও তার মেয়ে সুমাইয়া আক্তারের (১০) মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার (৯ আগস্ট) বিকালে উপজেলার কালিয়া ইউনিয়নের কুতুবপুর বিন্নরীপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। সখীপুর থানার ওসি আমির হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

নিহত জমেলা বেগম কালিয়া ইউনিয়নের কুতুবপুর বিন্নরীপাড়া গ্রামের কৃষক নূর মোহাম্মদের স্ত্রী।

স্থানীয় ইউপি সদস্য মজিবুর রহমান ফকির জানান, শুক্রবার বিকাল ৫টার দিকে জমেলার মেয়ে সুমাইয়া বাড়ির উঠানে বিদ্যুতের তারের সঙ্গে লাগানো জিআই তারে ভেজা কাপড় শুকাতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়। এ সময় মেয়ের চিৎকারে তাকে উদ্ধারে এসে মাও বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন। এ ঘটনা দেখে মা ও বোনকে উদ্ধারে জমেলার বড় মেয়ে আরিফা আক্তার এলে তিনিও বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়। পরে তাদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক জমেলা বেগম ও তার ছোট মেয়ে সুমাইয়া আক্তারকে মৃত ঘোষণা করেন।

ঢাকাটাইমস/০৯আগস্ট/ইএস

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :