রাজধানীর মার্কেটগুলো ক্রেতাশূন্য

তানিয়া আক্তার
| আপডেট : ১০ আগস্ট ২০১৯, ১৯:৪৪ | প্রকাশিত : ১০ আগস্ট ২০১৯, ১৭:৫৯

দুই রাত পার হলেই কোরবানির ঈদ। রোজার ঈদের মতো না হলেও এই ঈদেও কেনাকাটা করেন অনেকে। তবে এবার দেশজুড়ে ডেঙ্গুর প্রকোপ প্রভাব ফেলেছে জনজীবনে। এমন পরিস্থিতিতে রাজধানীর মার্কেটগুলোতে ভাটা পড়েছে ক্রেতার। দোকানিরা আশা নিয়ে বসে থাকলেও বিক্রি তেমন নেই বললেই চলে।

শনিবার রাজধানীর নিউমার্কেট,গাউছিয়া, চাঁদনি চক, মোহাম্মদপুরের টোকিও স্কয়ার, মৌচাকের আনারকলিসহ বিভিন্ন মার্কেট ঘুরে দেখা গেছে, জামা-জুতা-প্রসাধনী পণ্যের দোকানগুলো অনেকটাই ক্রেতাশূন্য। বিক্রেতারা বলছেন, এর আগের কোনও ঈদুল আজহার আগে এমন ক্রেতাশূন্য দেখেননি তারা। এজন্য লোকসান গোনার আশঙ্কাও তাদের কণ্ঠে।

রাজধানীর মোহাম্মদপুরবাসীর কেনাকাটার অন্যতম বিপনী টোকিও স্কায়ার। শনিবার সরেজমিনে মার্কেটটিতে দেখা গেছে, সাধারণ একটি দিনের মতোই ক্রেতাদের আনাগোনা। ক্রেতা না থাকায় গত শুক্রবার মার্কেটটির বেশিরভাগ দোকানই বন্ধ রাখা হয় বলে জানান ব্যবসায়ীরা।

এসেনসিয়ালস শো রুমের বিক্রেতা আবু নাসের বলেন, ‘ঢাকার বাইরেও আমাদের শো রুম আছে। সবগুলোই বন্ধ রাখা হয়েছে। ডেঙ্গু আর বন্যার কারনেই হয়তো মার্কেটে লোকজন নাই।’

ঈদ এত কাছাকাছি চলে এলেও আমেজহীন ঈদের রূপ দেখে খুবই হতাশ এক কাপড় বিক্রেতা। তিনি বলেন, ‘মার্কেটে ঈদ নাই। বেচা না হলে আমাদেরও ঈদ নাই। লোকসান গুনতে হবে এবার।’

এমনই হতাশার সুর শোনা গেছে নিউ সুপার মার্কেট (দক্ষিণ) বনিক সমিতির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আবু নছর ভূইয়ার কন্ঠে। সব সময়ই ঈদুল আযহার সপ্তাহখানেক আগে থেকেই জমজমাট রূপ দেখে আসা চিত্রটি এবার পাল্টেছে তার কাছে।

ঢাকা টাইমসকে তিনি বলেন, ‘ঈদের আগের মার্কেট এমন হওয়ার কথা না। আমরা প্রতিদিনই দোকানের বেচাবিক্রি এবং লোকজনের আসা যাওয়ার খোঁজ রাখি। কিন্তু এবার অন্য বছরের কোরবানির ঈদের চেয়ে প্রায় অর্ধেক কম বেচাকেনা।’

দেশে বন্যা এবং ডেঙ্গুর পরিস্থিতির কারনে পরিবারগুলো ঈদের আমেজে খানিকটা ভাটা পড়েছে বলে মনে করছেন ক্রেতারাও। কর্মজীবি রোদেলা হায়দার বলেন, ‘পরিবারের একজনের ডেঙ্গু মানেই অন্য সবার আনন্দ বন্ধ। হাসপাতালে রোগী রেখে স্বাভাবিকভাবেই ঈদের মার্কেট করাটা বেশ অস্বস্তির। তবে শিশুরা তো এত কিছু বোঝে না। তাই এসেছি।’

এবার জুলাইয়ের বন্যায় বেশ কয়েকটি জেলায় দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে অনেক পরিবার। তেমনই একটি পরিবারের সন্তান বিশ^বিদ্যালয় পড়ুয়া শিহাবউদ্দিন।

ঢাকা টাইমসকে তিনি বলেন, ‘আমাদের আর্থিক অবস্থা ভালো না। তবুও ঈদটা উৎসবের মতোই উদযাপন করি। কিন্তু এবারে পরিবারের সবাই পানিবন্দী ছিলো। ফসলেরও অনেক ক্ষতি হয়েছে। টিউশনি থেকে পাওয়া টাকা দিয়ে মায়ের আর ছোট ভাইয়ের জন্য কাপড় কিনে নিয়ে যাবো।’

চাঁদনী চক সুপার মার্কেটের এক কাপড় বিক্রেতা বলেন, ‘আমাদের এখানে শুধু নারীদের পোশাক বিক্রি হয়। অন্য বছর কোরবানির ঈদের আগের দিনগুলোতে ভিড়ের কারনে পা রাখা যেত না। আর এবার একেবারেই ফাঁকা। দু’দিন পর ঈদ, বিক্রিবাট্টার আর সম্ভাবনাই নেই।’

এদিকে রাজধানীর আরেকটি বিপনি বিতান মৌচাকের আনারকলি মার্কেট। সচরাচর এই মার্কেটে ক্রেতাদের জমজমাট থাকে। তবে এবার যেন ঈদেও প্রায় ফাঁকা। এবার প্রত্যাশিত বিক্রি হয়নি বলেই জানিয়েছেন এই মার্কেটের একাধিক বিক্রেতা।

ঢাকাটাইমস/১০আগস্ট/ডিএম

সংবাদটি শেয়ার করুন

রাজধানী বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :