বেসরকারি ৩০ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিতে সতর্কতা ইউজিসির

প্রকাশ | ১১ আগস্ট ২০১৯, ১৩:৫১ | আপডেট: ১১ আগস্ট ২০১৯, ১৪:০০

নিজস্ব প্রতিবেদক

স্নাতক পর্যায়ে আসন্ন ভর্তি মৌসুম সামনে রেখে বেসরকারি ৩০টি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির ক্ষেত্রে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সতর্ক করা হয়েছে। এর মধ্যে কোনোটির বোর্ড অব ট্রাস্টিজ নিয়ে দ্বন্দ্ব, কোনোটি কার্যক্রম চালাচ্ছে আদালতের রায় নিয়ে। বেশ কয়েকটি রয়েছে অননুমোদিত ক্যাম্পাস পরিচালনায় আর অননুমোদিত প্রোগ্রাম চালাচ্ছে দুইটি বিশ্ববিদ্যালয়।

এছাড়া শিক্ষা কার্যক্রম চালু হয়নি ৯টির এবং কার্যক্রম পরিচালনার অনুমতি মেলেনি ২টি বিশ্ববিদ্যালয়ের। এছাড়া গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচটি কোর্সে ভর্তির ক্ষেত্রে এবং আদালতের আদেশে বন্ধ থাকা দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয় নিয়েও সতর্ক করেছে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)।

‘ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের জন্য কয়েকটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান অবস্থা’ শিরোনামে এক গণবিজ্ঞপ্তিতে এ সতর্কতা জারি করেছে।

বর্তমানে দেশে ১০৪টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদন রয়েছে। তার মধ্যে সম্প্রতি অনুমোদন পাওয়া নয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম এখনো শুরু হয়নি।

ইউজিসির গণবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘কেউ অনুমোদনহীন কোনো বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কিংবা অনুমোদিত বিশ্ববিদ্যালয়ের অননুমোদিত ক্যাম্পাসে অথবা অননুমোদিত কোনো প্রোগ্রাম বা কোর্সে ভর্তি হলে তার দায়-দায়িত্ব শিক্ষা মন্ত্রণালয় বা ইউজিসি নেবে না।’

৩০ বিশ্ববিদ্যালয়ের হাল অবস্থা

বোর্ড অব ট্রাস্টি নিয়ে দ্বন্দ্ব রয়েছে বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের। এর মধ্যে অবৈধভাবে ক্যাম্পাস পরিচালনা ও বোর্ড অব ট্রাস্টিজ নিয়ে দ্বন্দ্ব চলছে ইবাইস ইউনিভার্সিটির। তাদের বোর্ড অব ট্রাস্টি দুই ভাগে বিভক্ত এবং একে অপরের বিরুদ্ধে আদালতে একাধিক মামলা দায়ের করেছে।

দ্বন্দ্ব নিরসন তথা বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের নেওয়া পদক্ষেপের বিষয়েও একটি গ্রুপ আদালতে মামলা দায়ের করে উক্ত কার্যক্রম স্থগিত করেছে।

ইউজিসি বলছে, এই বিশ্ববিদ্যালয়টির ধানমণ্ডি ও উত্তরায় দুটি ক্যাম্পাস থাকলেও বর্তমানে এ তাদের অনুমোদিত কোনো ঠিকানা নেই।

এটি ছাড়া আরও চারটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব ট্রাস্টিজের দ্বন্দ্বের বিষয়টি আদালতে বিচারাধীন। সেগুলি হলো সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, ব্রিটানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়, সাউদার্ন ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ এবং সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনালজি।

আদালতের রায় নিয়ে কার্যক্রম চালাচ্ছে যারা

নিয়ম লঙ্ঘনের কারনে সরকার বন্ধ করলেও আদালত থেকে স্থগিতাদেশ নিয়ে কার্যক্রম চালাচ্ছে তিনটি বিশ্ববিদ্যালয়ে। সেগুলি হলো- আমেরিকা বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি, দি ইউনিভার্সিটি অব কুমিল্লা এবং সাউদার্ন ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ।

অননুমোদিত ক্যাম্পাস পরিচালনায় ১০টি

ইউজিসির অনুমোদন না নিয়ে ক্যাম্পাস পরিচালনা করছে ১০টি বিশ্ববিদ্যালয়। এর মধ্যে রয়েছে- ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি, ইউনিভার্সিটি অব ডেভেলপমেন্ট অলটারনেটিভ, ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটি, ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটি, শান্ত-মারিয়াম ইউনিভার্সিটি অব ক্রিয়েটিভ টেকনোলজি, উত্তরা ইউনিভার্সিটি, এনপিআই ইউনিভার্সিটি, ইউনিভার্সিটি অব সাউথ এশিয়া, এশিয়ান ইউনিভার্সিটি এবং ভিক্টোরিয়া ইউনিভার্সিটি।

অননুমোদিত প্রোগ্রাম চালাচ্ছে ২টি বিশ্ববিদ্যালয়

ইউজিসির অনুমোদন না নিয়েই দুটি বিষয়ে প্রোগ্রাম চালাচ্ছে সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি এবং জে এইচ সিকদার বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। প্রথমটি চালাচ্ছে বিএসসি ইন ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং নামের প্রোগ্রাম আর পরেরটি এম এ ইন ইংলিশ’ প্রোগ্রাম পরিচালনা করছে।

শিক্ষা কার্যক্রম চালু হয়নি ৯টির

ইউজিসির অনুমোদন পেলেও এখনো শিক্ষা কার্যক্রম চালু হয়নি নয়টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে। সেগুলি হলো- রবীন্দ্র সৃজনকলা বিশ্ববিদ্যালয়, রূপায়ন এ কে এম শামসুজ্জোহা বিশ্ববিদ্যালয়, জেড এন আর এফ ইউনিভার্সিটি অব ম্যানেজমেন্ট সায়েন্সেস, আহছানিয়া মিশন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, শাহ মখদাম ম্যানেজমেন্ট ইউনিভার্সিটি, খুলনা খান বাহাদুর আহছান বিশ্ববিদ্যালয়, ট্রাস্ট ইউনিভার্সিটি, ইন্টারন্যাশনাল স্টান্ডার্ড ইউনিভার্সিটি এবং ইউনিভার্সিটি অব ব্রাহ্মণবাড়িয়া রয়েছে।

কার্যক্রম পরিচালনার অনুমতি মেলেনি ২টির

অবকাঠামোগত সুযোগ-সুবিধা এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় শর্তাদি পূরণ করতে না পারায় কুইন্স ইউনিভার্সিটি এবং দি ইউনিভার্সিটি অব কুমিল্লা শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার অনুমতি পায়নি।

পাঁচটি কোর্স অবৈধ গণবিশ্ববিদ্যালয়ের

সাভারে অবস্থিত গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবিএ, এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স, এমবিবিএস, বিডিএস এবং ফিজিওথেরাপি প্রোগ্রাম ‘অনুমোদিত বা বৈধ’ বলে বিবেচিত হবে না বলে গণবিজ্ঞপ্তিতে বলা হছে।

দারুল ইহসানও রয়েছে তালিকায়

ইউজিসির তালিকায় রয়েছে আদালতের আদেশের ফলে বন্ধ দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয়ও। আদালতের আদেশ বলে দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয় এবং এটির সকল আউটার ক্যাম্পাস বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

একইসঙ্গে দেশের সকল বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের আউটার ক্যাম্পাস বন্ধ করা হয়েছে বলেও গণবিজ্ঞপ্তিতে বলেছে ইউজিসি।

ঢাকাটাইমস/১১আগস্ট/ডিএম