ঘুমের ওষুধ খাইয়ে স্ত্রীকে ১৫ টুকরো, স্বামী আটক

প্রকাশ | ১৪ আগস্ট ২০১৯, ১৭:৪৮ | আপডেট: ১৪ আগস্ট ২০১৯, ১৯:১২

গাজীপুর প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

গাজীপুরের শ্রীপুরে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে স্ত্রীকে ১৫ টুকরো করে হত্যার ঘটনায় অভিযুক্ত স্বামী মামুনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার রাতে তাকে সাভার থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানান গাজীপুরের পুলিশ সুপার শামসুন্নাহার।

বুধবার দুপুরে পুলিশ নিজ কার্যালয়ে ব্রিফিংয়ে এসপি বলেন, সোমবার রাতে শ্রীপুর উপজেলায় আসপাড়া মোড় এলাকার ভাড়া বাসায় নিজ ঘরে সুমি আক্তার নামে এক নারীর পলিথিনে মোড়ানো হাত-পা-মাথা ছাড়া পাঁচ খণ্ড উদ্ধার করে পুলিশ। পরে বিষয়টি নিয়ে জেলা পুলিশ ও গোয়েন্দা পুলিশ তদন্তে নামে। প্রাথমিক তদন্তের পর মঙ্গলবার মধ্যরাতে এ ঘটনায় অভিযুক্ত স্বামী মামুনকে সাভার এলাকায় তার ফুফাতো ভাইয়ের বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ ব্যাপারে সুমির বাবা নিজামউদ্দিন বাদী হয়ে মামুনের নাম উল্লেখ করে আরও অজ্ঞাত কয়েকজনকে আসামি করে মঙ্গলবার বিকালে শ্রীপুর থানায় মামলা করেছেন।

এসপি জানান, পারিবারিক কলহের জেরে মামুন তার স্ত্রী সুমিকে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে অচেতন করে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন। পরে গোসলখানায় মরদেহ নিয়ে ১৫ টুকরো করা হয় বলে মামুন তার স্বীকারোক্তিতে উল্লেখ করেছেন।

পুলিশ সুপার বলেন, পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে মামুন জানান, গত বৃহস্পতিবার রাতে বাসায় স্ত্রী সুমিকে রুটি-হালুয়ার সঙ্গে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে দেয়া হয়। এতে সুমি নিস্তেজ হয়ে পড়লে দিবাগত রাত ১টার দিকে গলা টিপে শ্বাসরোধ করে সুমিকে হত্যা করে তার মৃতদেহ গোসলখানায় নেয়া হয়। পরে বাজার থেকে কিনে আনা স্টিলের ধারালো চাকু দিয়ে প্রথমে মাথা, হাত ও পা বিচ্ছিন্ন করেন।

শরীরের বিভিন্ন অংশের পাঁচটি খণ্ড করে তা ১০ কেজি ধারণের মতো পলিথিনে ভরে বসতঘরের ড্রেসিং টেবিলের ড্রয়ারে রেখে দেন। তার দেহের অবশিষ্ট অংশ একটি বড় ট্রাভেল ব্যাগের ভেতরে ভরেন। পরে গভীর রাতে সুযোগ বুঝে মামুন ঘরে তালা আটকে ব্যাগটি নিয়ে পালিয়ে যান এবং পার্শ¦বর্তী উপজেলা কাপাসিয়ার সিংহশ্রী এলাকায় ব্রিজের নিচে শীতলক্ষ্যার শাখা বানার নদীতে ফেলে দিয়ে গা ঢাকা দেন।

জানা যায়, দেড় বছর আগে নেত্রকোনার পূর্বধলা উপজেলার দেবকান্দা গ্রামের নিজাম উদ্দিনের মেয়ে ও স্থানীয় পোশাক শ্রমিক সুমির সঙ্গে মামুনের বিয়ে হয়। এটা ছিল উভয়ের দ্বিতীয় বিয়ে। শ্রীপুর উপজেলার আসপাড়া মোড় এলাকায় বসবাস করে  মামুন ইলেকট্রিশিয়ানের কাজ করেন। সম্প্রতি নারীঘটিত বিষয়াদি নিয়ে মামুনের প্রতি সুমির চরম অবিশ্বাস দেখা দেয়। এ নিয়ে প্রায়ই তাদের মধ্যে কলহ হতো। এর জেরেই বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে সুমিকে খুনের পর তার জমানো ৩০ হাজার টাকা নিয়ে পালিয়ে যান মামুন।

(ঢাকাটাইমস/১৪আগস্ট/জেবি)