ভারতে মুসলিমকে হত্যায় অভিযুক্ত সবাই খালাস

প্রকাশ | ১৫ আগস্ট ২০১৯, ০৯:৫৩

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, ঢাকা টাইমস

ভারতের রাজস্থানে পঞ্চাশোর্ধ্ব পেহলু খানকে পিটিয়ে হত্যায় অভিযুক্ত ছয়জনকেই বেকসুর খালাস দিয়েছে আদালত। বুধবার রাজস্থানের আলোয়ার জেলা আদালতের অতিরিক্ত বিচারক সরিতা স্বামী ‘প্রমাণের অভাবে’ অভিযুক্ত ওই ছয়জনকে মুক্তি দেন।

২০১৭ সালের এপ্রিলে রাজ্যটিতে বিজেপি সরকার ক্ষমতায় থাকার সময় রাজস্থানের জয়পুরের একটি পশুহাট থেকে গরু কিনে বাড়ি ফিরছিলেন ৫৫ বছর বয়সী পেহলু খান। তার সঙ্গে সেসময় তার দুই ছেলে আরিফ ও ইরশাদ ছিলেন। গো-রক্ষকরা রাজস্থানের আলওয়ারে তাদের গাড়ি থামিয়ে গরু পাচারের অভিযোগে বেধড়ক মারধর করে। গরু কেনার রসিদ দেখালেও তারা পেহলু খানকে রেহাই দেয়নি। পরে আহত আবস্থায় তিনি হাসপাতালে মারা যান।

এ ঘটনার ভিডিওতে দেখা যায়, একদল দুষ্কৃতি প্রকাশ্য দিবালোকে পেহলু খানকে প্রথমে ঘাড় ধরে টেনে আনে। তারপর মাটিতে ফেলে এলোপাথাড়ি লাথি, ঘুষি মারতে শুরু করে।

এই ঘটনার পর একটি সংবাদমাধ্যমের স্টিং অপারেশনে অপরাধ স্বীকার করতেও দেখা যায় অভিযুক্তদের মধ্যে একজনকে। সব কিছু খতিয়ে দেখে তিন নাবালকসহ মোট নয়জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে পুলিশ। মোবাইল ফোনে তোলা ভিডিও দেখে নাবালকরা ছাড়াও পুলিশ ৬ জনকে গ্রেফতার করে। এরা হলেন- বিপিন যাদব, রবীন্দ্র কুমার, কালুরাম, দয়ারাম, যোগেশ কুমার ওরফে ঢোলিয়া এবং ভীম রতি। এদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৪৭, ৩২৩, ৩৪১, ৩০২, ৩০৮, ৩৭৯ এবং ৪২৭ ধারায় অভিযোগ আনা হয়। পরে অবশ্য তাদের আট জনকেই জামিন দেয়া হয়।

আলোয়ার আদালতের এই সিদ্ধান্তে হতাশা প্রকাশ করেছে পেহলু খানের পরিবার। বিষয়টি নিয়ে তারা উচ্চ আদালতে যাবেন বলে জানিয়েছেন তাদের আইনজীবী কাসিম খান।

তবে আদালতের রায়কে ‘ঐতিহাসিক’ বলে উল্লেখ করেছেন অভিযুক্তদের আইনজীবী হুকুমচাঁদ শর্মা। তার মক্কেলরা নিরীহ এবং মিথ্যা অভিযোগে তাদের ফাঁসানো হয়েছিল বলে দাবি করেন তিনি। হুকুমচাঁদের দাবি, পেহলু খানের প্রথম জবানবন্দিতে অভিযুক্তদের মধ্যে কারও নাম উল্লেখ ছিল না। তাছাড়া, যে ব্যক্তি নিজের মোবাইল ফোনে ভিডিওটি রেকর্ড করেছিলেন, তিনি আদালতে হাজিরা দেননি। ঝাপসা ভিডিওতে অভিযুক্তদের ঠিক মতো শনাক্তও করা সম্ভব হয়নি। 

এর আগে, চলতি বছরের মে মাসে উল্টো গরু পাচারের অভিযোগে পেহলু খান ও তার দুই ছেলে ইরশাদ ও আরিফের বিরুদ্ধেও চার্জশিট দেয় পুলিশ। এছাড়া, গণপিটুনির ঘটনার সময়ে যে পিক আপ ভ্যানে গবাদি পশু নিয়ে আসা হচ্ছিল সেই ভ্যানের মালিক খান মুহাম্মদকেও রাজস্থান গবাদি পশু আইনের আওতায় অভিযুক্ত করা হয়।

ভারতে বিজেপি সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে কোনো কারণ ছাড়ায় মুসলিমদের ওপর অত্যাচারের মাত্রা ব্যাপক বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়া গো রক্ষার নামে বিভিন্ন রাজ্যে বেশ কয়েকজন মুসলিমকে গণপিটুনি দিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে।

ঢাকা টাইমস/১৫আগস্ট/একে