রায়পুরে কাভার্ডভ্যানে সিএনজি স্টেশন

প্রকাশ | ২২ আগস্ট ২০১৯, ০৯:৫১

ফারুক হোসেন, রায়পুর (লক্ষ্মীপুর)

লক্ষ্মীপুরের রায়পুরের ঢাকা-রায়পুর আঞ্চলিক মহাসড়কে কাভার্ডভ্যানে অবৈধভাবে ভ্রাম্যমাণ সিএনজি (রূপান্তরিত প্রাকৃতিক গ্যাস) বিক্রি করা হচ্ছে। এতে সিলিন্ডার বিস্ফোরণ হয়ে মারাত্মক দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, কয়েকজন অসাধু ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট করে নির্বিঘ্নে এই ঝুঁকিপূর্ণ ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন। ঝুঁকিপূর্ণ স্টেশনে যেকোনো মুহূর্তে ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা।

সরেজমিন দেখা গেছে, ঢাকা-রায়পুর আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে সিংহের পুল এলাকায় সড়ক ঘেঁষে অবৈধভাবে কাভার্ডভ্যানে রাখা সিলিন্ডার থেকে প্লাস্টিক পাইপ দিয়ে ভাসমান সিএনজি ফিলিং স্টেশনে সহজে দাহ্য ওই গ্যাস বিক্রি করা হয়। গত ১৫ দিন ধরে মহাসড়কে ঘেঁষে দুটি কাভার্ডভ্যান সব সময় ওই স্থানে দাঁড়ায়, আর জড়ো হতে থাকে গাড়ি। এক পর্যায়ে গাড়ির দীর্ঘসারির কারণে সড়কে সৃষ্টি হয় যানজট।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, প্রকাশ্যে ঝুঁকিপূর্ণভাবে কাভার্ডভ্যান থেকে গ্যাস সরবরাহ করা হলেও স্বদেশ গ্লোরি এগ্রো প্রোডাক্টস সিবিজি নামে গ্যাস স্টেশন কর্তৃপক্ষকে স্থানীয় প্রশাসন রহস্যজনক কারণে এদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিচ্ছে না।

তারা আরও জানান, সরকার সারা দেশে সিএনজি গ্যাস স্টেশনগুলোতে বিকাল তিনটা থেকে রাত নয়টা পর্যন্ত গ্যাস বিক্রি বন্ধের নির্দেশনা দিলেও রায়পুরে এ স্টেশনে ২৪ ঘণ্টাই মেলে প্রতি লিটারে অতিরিক্ত নয় টাকা বেশি দামে সিএনজি গ্যাস। এ ছাড়াও সিএনজি স্টেশন করার আগে ফায়ার সার্ভিস ও বিস্ফোরক লাইসেন্স নেয়া বাধ্যতামূলক। কিন্তু রায়পুর সিংহেরপুরের এই ভ্রাম্যমাণ সিএনজি স্টেশনের এসব কিছুই নেই।

স্থানীয় অটোরিকশাচালক রুবেল দাশ, সেলিম উদ্দিন, পারভেজ, আব্দুর সালাম, বোরহান উদ্দিন, আব্দুর শুক্কুরসহ অনেকে বলেন, ‘বৈধ ফিলিং স্টেশনে প্রতিপয়েন্ট (লিটার) সিএনজি বিক্রি হয় ৪০ থেকে ৪১ টাকা টাকায়। আর কাভার্ডভ্যানে প্রতিপয়েন্ট (লিটার) গ্যাসের দাম ৫২ টাকা। অতএব অতিরিক্ত  ৯  টাকা বেশি দিতে হয়।’

রামগঞ্জ উপজেলা আ.লীগের নেতা ও কোম্পানির পরিচালক মজিবুর রহমান বলেন, ‘সড়কের পাশে এটি থাকলে সিএনজি চালকরা দ্রুত গ্যাস নিতে পারে। মানুষের সেবা করার জন্যই এটি করছি আমরা। আর তাদের সহযোগিতায় রয়েছে রায়পুরের কয়েক নেতা।’

রায়পুর ফায়ার সার্ভিস স্টেশন কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম বলেন, ‘এভাবে কাভার্ডভ্যানে গ্যাস বিক্রির জন্য আমাদের কাছ থেকে কোন অনুমতি দেয়া হয়নি। কোন অনুমোদন আছে কিনা সে বিষয় আমার জানা নেই। এটি সম্পূর্ণ অবৈধ ও বেআইনি প্রক্রিয়ায় কতিপয় দুষ্কৃতকারী ভাসমান প্রক্রিয়ায় গ্যাস বিক্রি করছে। বিষয়টি নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

রায়পুর পৌরসভার মেয়র ইসমাইল খোকন বলেন, ‘একটি আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে চলছে ঝুঁকিপূর্ণ ওই ব্যবসা। এতে যেকোনো মুহূর্তে বিপদ হতে পারে। এতে বিশেষ করে পাশের বিভিন্ন ব্যবসা প্র্রতিষ্ঠানের দোকানি ও শিক্ষার্থীরা ঝুঁকিতে রয়েছেন। এছাড়া এসব কাভার্ডভ্যানের কারণে সড়কে যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। এটি সম্পূর্ণভাবে অবৈধ।’

রায়পুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শামীমা বাবু শান্তি বলেন, ‘এই ব্যাপারে আমাদের কাছ থেকে কোন অনুমতি নেয়া হয়নি। কোন অনুমতির কাগজপত্রও জমা দেয়নি তারা। এ ব্যাপারে আমি শিগগিরই অভিযান চালাব। এখানে কোন অবৈধভাবে গ্যাস বিক্রি করতে দেয়া হবে না।’

ঢাকাটাইমস/২২আগস্ট/প্রতিনিধি/এলএ