খাতা মূল্যায়নে অবহেলা: শাস্তি পাচ্ছেন রাজশাহীর ২০০ পরীক্ষক

প্রকাশ | ২৩ আগস্ট ২০১৯, ১৭:১৯

ব্যুরো প্রধান, রাজশাহী

এইচএসসির পরীক্ষার খাতা মূল্যায়নে অবহেলা এবং নম্বর যোগ করতে ভুল করায় শাস্তি পেতে যাচ্ছেন রাজশাহী মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডের ২০০ জন পরীক্ষক। ইতিমধ্যে এসব পরীক্ষককে আগামীতে পরীক্ষার খাতা দেখা থেকে বিরত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বোর্ড। তাদের তালিকা পাঠানো হবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়েও।

আর দায়িত্বহীনতার মাত্রা বিবেচনা করে মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা মোতাবেক পরবর্তীতে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হতে পারে। রাজশাহী শিক্ষাবোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক প্রফেসর আনারুল হক প্রামানিক এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, ফল প্রকাশের পরশিক্ষার্থীদের খাতা পুনঃমূল্যায়নের পর এসব পরীক্ষকদের অবহেলার বিষয়টি উঠে এসেছে।

শিক্ষাবোর্ড সূত্রে জানা গেছে, এবার এইচএসসির ফলাফল প্রকাশের পর বিভাগের আট জেলা থেকে ১৩ হাজার ৮২ জন শিক্ষার্থী খাতা পুনঃনিরীক্ষণের আবেদন করেন।

পুনঃনিরীক্ষণের জন্য আবেদন করা খাতার সংখ্যা ছিল ৩৪ হাজার ৭১৫টি। গত ১৬ আগস্ট পুনঃনিরীক্ষণের ফলাফল প্রকাশ করা হয়। এতে দেখা যায়, ৬৬ জন পরীক্ষার্থী ফেল থেকে পাস করেছেন। আর নতুন করে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৪৪ জন। এ বছর ফেল থেকে জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থী না থাকলেও ৩৬৬ জনের গ্রেড পরিবর্তন হয়েছে।

শিক্ষাবোর্ডের কর্মকর্তারা জানান, পুনঃনিরীক্ষণের আবেদন হওয়া উত্তরপত্রের চারটি দিক দেখা হয়। এগুলো হলো- উত্তরপত্রের সব প্রশ্নের সঠিকভাবে নম্বর দেয়া হয়েছে কিনা, প্রাপ্ত নম্বর গণনা ঠিক রয়েছে কিনা, প্রাপ্ত নম্বর ওএমআর শিটে উঠানো হয়েছে কিনা এবং প্রাপ্ত নম্বর অনুযায়ী ওএমআর শিটের বৃত্ত ভরাট করা হয়েছে কিনা। এসব পরীক্ষা করেই পুনঃনিরীক্ষার ফল দেয়া হয়। আর ২০০ পরীক্ষকের অবহেলা লক্ষ্য করা গেছে এই চারটিতে। কেউ যোগে ভুল করেছেন, কেউ নম্বর ওএমআর শিটে ওঠাননি, আবার কেউ কোনো উত্তরের নম্বরই দেননি। ফলে অনেক মেধাবী শিক্ষার্থীও কাঙ্খিত ফল পাননি।

অভিভাবকরা বলছেন, পরীক্ষকের অবহেলার কারণে শিক্ষার্থীরা ফল বিপর্যয়ের শিকার হওয়া নতুন নয়। এতে অনেক শিক্ষার্থী মানসিকভাবে ভেঙে পড়ার পাশাপাশি অনেকেই, কাঙ্খিত উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আবেদন পর্যন্ত করতে পারেন না। আবার ফলাফল খারাপ আসার কারণে ফল প্রকাশের দিনেই আত্মহত্যার মতো ঘটনাও ঘটে। তাই দায়িত্বে অবহেলাকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ খুব প্রয়োজন।

রাজশাহী শিক্ষাবোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক আনারুল হক প্রামানিক বলেন, আমাদের এইচএসসি পরীক্ষার খাতা দেখেন সাত থেকে আট হাজার পরীক্ষক। তাদের মধ্যে ২০০ জন পরীক্ষকের খাতায় নম্বর লেখা বা গণনায় ভুল পাওয়া গেছে। এটা তাদের অবেহলার জন্যই হয়েছে, সে বিষয়ে সন্দেহ নেই। আগামীতে এসব পরীক্ষককে খাতা দেখতে দেয়া হবে না। এছাড়া মন্ত্রণালয়েও এসব পরীক্ষকের তালিকা পাঠানো হবে। সেখান থেকে যে নির্দেশনা দেওয়া হবে সে মোতাবেক পরবর্তীতে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জানান তিনি।

ঢাকাটাইমস/২৩আগস্ট/ইএস