ইউনিয়নে শিশু জন্মালেই গাছ লাগান চেয়ারম্যান

মির্জাপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ২৪ আগস্ট ২০১৯, ১২:৫১

নিজের ইউনিয়নের কোনো এলাকায় যখনই শিশু জন্মের খবর পান, তখনই গাছের চারা হাতে নবজাতকের বাড়িতে ছুটে যান। নিজের হাতে নবজাতকের বাড়িতে রোপন করেন দুটি করে গাছের চারা। নবজাতকের মা-বাবাকে পরামর্শ দেন চারা গাছের যত্ন নিতে। ব্যক্তি উদ্যোগে ব্যতিক্রমধর্মী এই কর্মসূচি হাতে নিয়েছেন টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার মহেড়া ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান বাদশা মিয়া।

‘একটি শিশু, একটি গাছ’ স্লোগানে গাছ লাগানোর কর্মসূচি হাতে নেন তিনি। গত ২৩ দিনে ১৭ জন নবজাতকের জন্য বাড়ি বাড়ি গিয়ে ৩৫টি গাছের চারা নিজ হাতে রোপন করেছেন তিনি।

চেয়ারম্যান বাদশা মিয়া জানান, ‘আগে একটি করে গাছ লাগিয়ে শুরু করেছিলাম। কিন্তু যখন দেখলাম গাছ লাগানোর জায়গা আছে, তখন থেকে দুটি করে লাগানো শুরু করলাম। জন্ম নেয়া ছোট শিশুদের সঙ্গে গাছও বেড়ে উঠবে, পর্যায়ক্রমে সবুজে ছেয়ে যাবে পুরো এলাকা।’

২০১৬ সালের ২৮ মে ইউপি নির্বাচনে বাদশা মিয়া চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। দায়িত্ব নেন ৭ আগস্ট।

বাদশা মিয়া জানান, দায়িত্ব নেওয়ার পর মানুষের মনে রাখার মতো তেমন কোন কাজ করতে পারিনি। পুনরায় চেয়ারম্যান না হতে পারলেও মানুষ তাকে কিভাবে মনে রাখবে এজন্য পদ্ধতি খোঁজেন। পরে চলতি আগস্ট মাসের প্রথম দিন থেকে শুরু করেন ব্যতিক্রমী এই কর্মসূচি।

‘কাজটি করার মাধ্যমে আমার এলাকার জনগণের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা হচ্ছে। আমি বিভিন্ন স্কুল পরিদর্শনে গিয়েও বাচ্চা হলে আমাকে জানানোর কথা বলছি। এতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীর সঙ্গেও যোগাযোগ করতে পারছি। আমি চাই কাজটির মাধ্যমে প্রতিটি নবজাতক গাছের সবুজ শ্যামল ছায়ায় বেড়ে উঠুক। আর এই কর্মের মধ্য দিয়ে মানুষ আমাকে মনে রাখুক।’

কর্মসূচি শুরুর আগে চেয়ারম্যান তার ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে অনুষ্ঠিত সভা কিংবা উঠান বৈঠকে তাঁর উদ্যোগের কথা প্রচার করেন। তার এমন উদ্যোগকে প্রশংসা করেন এলাকাবাসী।

ইউনিয়নের তেঘুরি গ্রামের দিপু সরকারের স্ত্রী দিপ্তী সরকারের একসঙ্গে তিন সন্তানের জন্ম দেওয়ার খবরে গত ১ আগস্ট ওই বাড়িতে গিয়ে তিন নবজাতক অংকন সরকার, অর্পণ সরকার ও অরিত্রি সরকারের নামে বাড়ির পাশে তিনটি আম গাছের বুনেন। দিপ্তী বলেন, ‘বাবুরা বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে গাছও বড় হবে। গাছে আম আসবো, বড় হয়ে ওরা খাবে, সঙ্গে আমরাও। সত্যিই ভাল লাগছে।’

বিল মহেড়া গ্রামের জুলহাস মিয়া বলেন, ‘মেয়ে হওয়ার খবরে চেয়ারম্যান বাড়িতে আম ও ইউকালিপটাস গাছ লাগিয়ে দিয়েছেন। এটি নিঃসন্দেহে ভাল উদ্যোগ।’

চার নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আগাছাওয়ালী গ্রামের বাসিন্দা দেওয়ান পারভেজ বলেন, ‘কর্মসূচিটি গ্রহণের আগে চেয়ারম্যান পরিষদের সকলকে নিয়ে আলোচনা করেছেন। আমরা তাকে সাহায্য করছি। চেয়ারম্যান সাহেব গাছ লাগানোর পর বাচ্চার হাতে কিছু টাকাও দেন। এই টাকা বিশেষ করে যারা দরিদ্র তাদের বেশি উপকারে আসে।’

ঢাকাটাইমস/২৪আগস্ট/প্রতিনিধি/এমআর

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :