সরকারের কাছে এক সুতা জমিও আশা করি না: রুমিন ফারহানা

প্রকাশ | ২৫ আগস্ট ২০১৯, ১৯:১৯

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
ফাইল ছবি

১০ কাঠা জমি বরাদ্দ পেলে ‘চিরকৃতজ্ঞ’ থাকবেন বলে লিখিত আবেদনে লিখলেও সংরক্ষিত নারী আসনে বিএনপির সংসদ সদস্য রুমিন ফারহানা বলছেন, তিনি সরকারের কাছ থেকে এক সুতা জমিও আশা করেন না।

‘অবৈধ সরকারের’ কাছে প্লট চেয়ে আবেদন করার বিষয়টি প্রকাশ হওয়ার পর রুমিন চটেছেন কেন এটি গণমাধ্যমে এলো? তার দাবি, এটি ফাঁস করেছে সরকার। আর সেটা তাদের অপকর্ম ঢাকতে।

রবিবার এই চিঠিটি ভাইরাল হয়ে যায় নেটের দুনিয়ায়। আর রুমিন গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলে তার অবস্থান তুলে ধরেন।

বলেন, ‘আমি স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই, আমি এই সরকারের কাছ থেকে এক সুতা জমিও আশা করি না, আমি চিন্তাও করি না। এটা একটা প্রসিডিউর, একটা ফরমালিটিজ- যেটা সব এমপি করেছেন, আমিও করেছি।’

গত ৩ আগস্ট রুমিন ফারহানার স্বাক্ষরে সংসদ সদস্যের প্যাডে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রীর কাছে চিঠি পাঠানো হয়। সেখানে বলা হয়, ঢাকা শহরে তার নামে কোনো ফ্ল্যাট বা জমি নেই। ওকালতি ছাড়া তার অন্য আর কোনো ব্যবসা বা পেশা নেই। এ জন্য ঢাকার পূর্বাচল আবাসিক এলাকায় তার ১০ কাঠার একটি প্লট প্রয়োজন।

“এমতাবস্থায়, আপনার নিকট আমার আবেদন, আমার নামে ১০ কাঠা প্লট বরাদ্দ করলে আমি আপনার কাছে ‘চির কৃতজ্ঞ’ থাকব।”

সংসদ সদস্যরা আইন অনুযায়ীই কিছু সুযোগ সুবিধা পান, যার একটি হলো সরকারি প্লট। তবে যেহেতু তিনি সরকার ও সংসদকে অবৈধ বলেছেন, তাই এমন আবেদনের নৈতিকতা নিয়েই উঠেছে প্রশ্ন।

তবে রুমিনের ‘যুক্তি’ তিনি সরকারের কাছ থেকে প্লট চাননি, চেয়েছেন রাষ্ট্রের কাছে। বলেন, ‘একজন সংসদ সদস্য রাষ্ট্রের কাছে জমির জন্য আবেদন করতে পারেন, তিনি বিনা শুল্কে গাড়ি আমদানি করতে পারেন। তিনি বেতন-ভাতা পান এবং পাঁচ বছরের জন্য একটি অ্যাপার্টমেন্ট পান- এই চারটি হচ্ছে রাষ্ট্রীয় সুযোগ। যিনি সংসদ সদস্য হবেন তিনিই এই রাষ্ট্রীয় সুযোগ পাবেন। সেজন্য আমি একটি আবেদনপত্র দিয়েছি। শুধু আমি একা নই, তিনশ থেকে সাড়ে তিনশ এমপি এপ্লিকেশন দিয়েছেন।

এই আবেদন প্রকাশ হওয়াতেই চটেছেন বিএনপি নেত্রী। বলেন, ‘ফেইসবুকে আমার যে চিঠিটা ভাইরাল হয়েছে- সেটা না অবৈধ না অনৈতিক।...আমার প্রশ্ন হল- আমার চিঠিটা মন্ত্রণালয় থেকে বেরুল কী করে? যেখানে আমার ব্যক্তিগত টেলিফোন নম্বর দেওয়া আছে।’

‘আমি এখন চ্যালেঞ্জ করব। যতজন এমপি এপ্লিকেশন করেছেন সব প্রকাশ করা হোক। রুমিন কেন একলা?’

রুমিনের অভিযোগ, তিনি সরকারের বিরুদ্ধে সোচ্চার বলে তার আবেদন ‘ভাইরাল করা হয়েছে’।

‘এটা ভাইরাল কেন হল তার উত্তর আমি নিজেই দিচ্ছি। আবুল মাল আবদুল মুহিত (সাবেক অর্থমন্ত্রী) কোনো পদে না থাকা অবস্থায় শুল্কমুক্ত সুবিধায় গাড়ি এনেছেন। সরকার তার সেই নোংরামি ও অসততাকে চাপা দেওয়ার জন্যে আমার বৈধ এপ্লিকেশন নোংরাভাবে পাবলিক করেছে। একটা সরকারি নথি যখন পাবলিক হয়, তখন সেখানে সরকারের মদদ থাকে।’

‘যারাই সরকারের বিরুদ্ধে কথা বলে, যারাই সরকারের কাজের সমালোচনা করে, যারাই সরকারকে সঠিক পথে আনার জন্যে কথা বলবে এবং সরকারের মনমত কথা বলবে না, তাদের কোনো না কোনোভাবে হেনস্তা করার এক ধরনের চেষ্টা সরকারের থাকে।’

আবেদন করার ওই চিঠিতে বাক্যের বেশ কিছু অসঙ্গতি আছে, বানানও ভুল বেশ কয়েকটি। এ বিষয়ে বিএনপি নেত্রী বলেন, ‘ওই চিঠির খসড়া তৈরি করেছেন আমার ব্যক্তিগত সহকারী, যেমনটা সব এমপির ক্ষেত্রে করা হয়।’

(ঢাকাটাইমস/২৫আগস্ট/বিইউ/ডব্লিউবি)