হৃদরোগ হাসপাতালে শিশু নুপূরের সফল অপারেশন

বুক না কেটে হার্টের অস্ত্রোপচার

খরচ মাত্র পাঁচ হাজার, এখন থেকে করা যাবে নিয়মিত

প্রকাশ | ২৬ আগস্ট ২০১৯, ১৯:৪৮

বোরহান উদ্দিন, ঢাকাটাইমস

বুক কেটে হৃদরোগের অস্রোপচারের কথা শুনে যারা ভীতি পান বা খরচের কথা চিন্তা করে পিছিয়ে আসেন, তাদের জন্য সুখবর এসেছে। বুক না কেটে ছিদ্র করে হৃদযন্ত্রের সফল অস্রোপচার হয়েছে জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট হাসপাতালে।

সুখবর হচ্ছে এখন হাসপাতালে বুক না কেটে নিয়মিত এ ধরনের অস্ত্রোপচার করা যাবে। এজন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি রয়েছে ও চিকিৎসকদেরও প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।

রবিবার রাতে হাসপাতালে সহকারী অধ্যাপক আশরাফুল হক সিয়ামের নেতৃত্বে এই অস্ত্রোপচার করা হয়। ১২ বছর বয়সী শিশু নূপুরের এ অস্ত্রোপচারে মোট ১০ জন চিকিৎসক অংশ নেন।

নূপুরের অস্ত্রোপচারে প্রায় আড়াই ঘণ্টা সময় নেন চিকিৎসকরা। সে এখন সুস্থ আছে ও তিন ধাপে পর্যবেক্ষণ পর তাকে হাসপাতাল থেকে বাসায় যাওয়ার জন্য ছাড়পত্র দেওয়া হবে।

হৃদরোগের অস্রোপচারের ক্ষেত্রে এমন সাফল্যের বিষয়টি ঢাকা টাইমসকে নিশ্চিত করেছেন অস্ত্রোপচারে নেতৃত্ব দেওয়া চিকিৎসক আশরাফুল হক সিয়াম।

ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনে দেশে এ ধরনের অস্ত্রোপচার প্রথম করা হয়েছিল। সরকারিভাবে এটাই প্রথম। আর এই অস্ত্রোপচারে খরচ হয়েছে পাঁচ হাজার টাকার  মতো।

চিকিৎসা বিজ্ঞানের পরিভাষায় এই ধরনের অস্ত্রোপচারকে বলা হয়, মিনিমাল ইনভ্যাসিভ কার্ডিয়াক সার্জারি (এমআইসিএস)। এ প্রক্রিয়ায় বুকে ওপেন হার্ট সার্জারির পরিবর্তে ছোট একটি ছিদ্রের মধ্য দিয়ে অস্ত্রোপচার করা হয়।

চিকিৎসকরা বুকের হাড় অর্থাৎ স্টানার্ম না কেটে দুটি হাড়ের (রিবস) মধ্য দিয়ে অস্ত্রোপচার করেন। এতে ব্যথা কম লাগে, রোগীরাও দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠেন।

নূপুর অ্যাট্রিয়াল সেপটাল ডিফেক্টের (এএসডি) রোগী। তার হার্টের ওপরের দুটি চেম্বারে ছিদ্র ছিল।

আশরাফুল হক সিয়াম ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘বুকের পাঁজরের তিন বা চার নম্বর রিবসের মধ্যে দিয়ে আমরা ছোট্ট একটি ছিদ্র করি, দুই ইঞ্চির মতো আড়াআড়ি ভাবে কেটে তারপর অপারেশন করি। ফুসফুসকে চাপা দিয়ে কাজটি করা হয়।’

‘লেপারোস্কোপি সার্জারি সম্পর্কে অনেকেই জানেন। এটিকে হার্টের লেপারোস্কোপি সার্জারি বলতে পারেন। খুব ছোট্ট একটা ছিদ্র করে এ কাজ করা হয়। এতে সাধারণত ইনফেকশনের ঝুঁকি কম থাকে, রক্তক্ষরণের ঝুঁকিও কম, অস্ত্রোপচার পরবর্তী অস্বস্তি কম হয়, ক্ষত দ্রুত সারে, রোগী তাড়াতাড়ি হাসপাতাল থেকে রিলিজ নিয়ে বাসায় যেতে পারেন।’

এই অস্ত্রোপচার সব হাসপাতালে করা সম্ভব হবে কি না, এমন প্রশ্নে এই চিকিৎসক বলেন, ‘এটি অনেক চ্যালেঞ্জিং কাজ ছিল। সরকারি হাসপাতালে চাইলেই সব কিছু করা যায় না। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়ে জেনে আমাদের সার্বিক সহযোগিতা করেছেন। ওনার জন্যই এটি শুরু করা গেছে।’

হাসপাতালকে বিশেষ বরাদ্দের পাশাপাশি অস্ত্রোপচারের জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতিও আমদানি হয়েছে শেখ হাসিনার আগ্রহে।

ঢাকাটাইমস/২৬আগস্ট/বিইউ/ডব্লিউবি