চসিকের স্মার্টসিটি ও নগর ভবন নির্মাণ প্রকল্প অনুমোদনের অপেক্ষায়

চট্টগ্রাম ব্যুরো, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ২৭ আগস্ট ২০১৯, ২০:৫৪

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনে আধুনিক নগর ভবণ নির্মাণ ও স্মার্ট সিটি প্রকল্প আগামী ২৯ শে আগস্ট অনুষ্ঠিতব্য প্রি-একনেক সভায় অনুমোদনের জন্য উত্থাপিত হচ্ছে।

চসিকের আধুনিক নগর ভবণ নির্মাণে ২০৪ কোটি টাকা এবং স্মার্ট সিটি ২৭০ কোটি টাকাসহ মোট ৪৭৪ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে। এই প্রকল্প দুটি প্রি একনেকে অনুমোদিত হওয়ার পর একনেক সভায় উত্থাপিত হবে।

আজ মঙ্গলবার সকালে সিটি করপোরেশনের কনফারেন্স হলে চসিক প্রকৌশল বিভাগের মাসিক সমন্বয় সভায় এ তথ্য জানানো হয়। সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিটি মেয়র আলহাজ্ব আ.জ.ম. নাছির উদ্দীন। চসিক প্রধান প্রকৌশলী লে. কর্নেল মহিউদ্দিন আহমদের সভাপতিত্বে সভায় প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সামসুদ্দোহা, সিটি মেয়রের একান্ত সচিব মোহাম্মদ আবুল হাশেম, প্রধান হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা মো. সাইফুদ্দিন, চসিক অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম মানিক, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আবু সালেহ,আনোয়ার হোছাইন,কামরুল ইসলাম,মনিরুল হুদা, নিবার্হী প্রকৌশলী আবু ছিদ্দিক, আবু সাদাত মো. তৈয়ব, অসীম বড়ুয়া, বিপ্লব দাশ, মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন,ফরহাদুল আলম, শাহীনুল ইসলাম,মনজুরুল হক তালুকদার, জয়সেন বড়ুয়া, ফজলুল কাদের প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

সভায় নগরীর জনগুরুত্বপূর্ণ ছয়টি প্রকল্প বিগত বছর বিভিন্ন সময়ে একনেক সভায় অনুমোদিত হয় বলে জানানো হয়।

এডিপি’র অর্থায়নে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সার্বিক তত্ত্বাবধানে এসব প্রকল্পসমূহ বাস্তবায়িত হবে। প্রকল্প গুলোর মধ্যে বন্যা ও জলাবদ্ধতায় ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তার উন্নয়ন এবং নালার প্রতিরোধ দেয়াল, ব্রিজ ও কালভার্ট এর নির্মাণ/পুনর্নির্মাণ ব্যয় ৭১৬ কোটি ২৮ লাখ ৫০ হাজার টাকা। কাজের ভৌত অগ্রগতি ৮৪ শতাংশ। প্রকল্পের মেয়াদ ডিসেম্বর ২০১৯ পর্যন্ত ধরা হয়েছে।

বিভিন্ন এলাকায় অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প, অবকাঠামো উন্নয়ন ব্যয় বাবদ ১২০ কোটি টাকা ধরা হয়েছে। এই প্রকল্পের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক এবং ব্রিজ সমূহের উন্নয়নসহ আধুনিক যান-যন্ত্রপাতি সংগ্রহ ও সড়ক আলোকায়ন বাবদ ৩৮২ কোটি ১৯ লাখ ৪৪ হাজার টাকা ধরা হয়েছে। প্রকল্পের মেয়াদ জুন ২০২০ইং পর্যন্ত।

বহদ্দারহাট বাড়ইপাড়া হতে কর্ণফুলী নদী পর্যন্ত নতুন খাল খনন ব্যয় ১ হাজার ২৫৬ কোটি টাকা ধরা হয়েছে। প্রকল্পের মেয়াদ ৩০ জুন ২০২০পর্যন্ত। ২৩১ কোটি টাকায় চসিক সেবক নিবাসের জন্য সাতটি ভবন নির্মাণ করা হবে। এ প্রকল্পের মেয়াদ ৩০ জুন ২০২০ পর্যন্ত।

বিভিন্ন ওয়ার্ডের সড়ক নেটওয়ার্ক উন্নয়ন এবং বাস/টার্মিনাল নির্মাণ ব্যয় ১ হাজার ২৩০ কোটি টাকা, এরমধ্যে রাস্তার উন্নয়ন ৫৫৪ কি.মি, প্রতিরোধ দেয়াল ২০৬ কি.মি, ড্রেইন ৮৯৫ কি.মি, ফুটপাত ৩৭৩ কি. মি, ব্রিজ ১৭৪ টি, কালভার্ট ৩৭ টি, ভূমি অধিগ্রহণ ৮.১০ একর। এ প্রকল্পের মেয়াদ ৩০ জুন ২০২০ পর্যন্ত।

এই ৬টি প্রকল্প বাবদ প্রকল্প ব্যয় ধরা হয়েছে ৩ হাজার ৯ শত ৭৪ কোটি ৫৬ হাজার টাকা। প্রকল্প ব্যয়ের মধ্যে ৩০ জুলাই ২০১৯ পর্যন্ত চসিক ব্যয় করেছে ১৫ শত কোটি ৪৫ লাখ ৪৫৭ টাকা।

এছাড়া এয়ারপোর্ট রোড সম্প্রসারণসহ বিভিন্ন অবকাঠামো উন্নয়ন ২৭০০ কোটি টাকা এবং সলিট ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট প্রকল্প ১১০০ কোটি টাকা, নগরীর ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তা সমূহ পূনর্বাসন/উন্নয়ন ও এ্যাসফল্টপ্ল্যান্ট স্থাপন ১৯৯ কোটি ৯৯ লাখ ২৫ হাজার টাকা, বিএমডিএফ ১৬৫ কোটি টাকার প্রকল্প, জলাবদ্ধতায় ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তা সংস্কার ১২২ কোটি টাকা, জাইকার অর্থায়নে স্কুল, সাইক্লোন সেন্টার ও ডিজেস্টার মেনেজমেন্ট ৯০০ কোটি টাকা, পশু জবাইখানা ৮৩ কোটি টাকা, থোক বরাদ্দ প্রকল্প, অতিবর্ষনে নগরীর রাস্তা সমূহের সংস্কার ও মেরামত, চক বাজার ও বহদ্দারহাট মার্কেট নির্মাণ, টিউবলাইট ফ্যাক্টরি, ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট, রং ফ্যাক্টরী বিষয়ে আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। প্রধান অতিথির বক্তব্যে নগর অবকাঠামোগত উন্নয়নে একনেক সভায় যে সমস্ত প্রকল্প অনুমোদিত হয়েছে,সে সমস্ত প্রকল্প সমূহ যথাসময়ে বাস্তবায়নের উপর গুরুত্বারোপ করেন সিটি মেয়র।

তিনি বলেন, এই সমস্ত প্রকল্প বাস্তবায়নে সময়ক্ষেপণ কোনোভাবে কাম্য হবে না। এতে কোনো অজুহাত নয়, কাজের গুণগত মান অক্ষুন্ন রেখে আন্তরিকতার সাথে কাজ শেষ করতে এখনি মাঠে নেমে পড়তে হবে। এই কাজে কোনো ধরনের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হলে সঙ্গে সঙ্গে তাকে অবহিত করারও আহবান জানান মেয়র।

প্রয়োজনে একটি কাজকে একাধিক ভাগে বিভক্ত করে কাজ সম্পন্ন করার পরামর্শ দেন মেয়র। আর যে সমস্ত প্রকল্প একনেক সভায় অনুমোদিত হয়েছে অথচ টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়নি, সেই সমস্ত কাজের টেন্ডার প্রক্রিয়া সেপ্টেম্বরের মধ্যে সম্পন্ন করার জন্য তিনি তাগিদ দেন। মেয়র বলেন, কর আদায়ের ওপর চসিকের সকল উন্নয়ন কাজ নির্ভরশীল। তাই এটি বৃদ্ধির তাগিদ দেন। পাশাপাশি আয়বর্ধক প্রকল্প গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্টদের উদ্যোগী হওয়ার আহবান জানান মেয়র।

এই প্রসঙ্গে সিটি মেয়র বলেন, চসিক শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা সচল রাখতে শিক্ষক ও ডাক্তার নিয়োগ অপরিহার্য।

শিক্ষার জন্য শিক্ষক এবং স্বাস্থ্য বিভাগের জন্য ডাক্তার নিয়োগ করা হলে করপোরেশনের বর্তমান ব্যয়ের সাথে বছরে আরো ১২ কোটি টাকা বৃদ্ধি পাবে বলে সভায় তিনি উল্লেখ করেন।

ঢাকাটাইমস/২৭আগস্ট/ইএস

সংবাদটি শেয়ার করুন

বন্দর নগরী বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :