দক্ষিণ আফ্রিকায় সন্ত্রাসীর গুলিতে শরীয়তপুরের দুই যুবক নিহত

শরীয়তপুরের দুই যুবককে গুলি করে হত্যা করেছে দক্ষিণ আফ্রিকার সন্ত্রাসীরা। রবিবার স্থানীয় সময় রাত পৌনে আটটার দিকে কেপটাউন শহরের মালমাজবেরি এলাকার একটি বিপনি বিতানে হামলা চালিয়ে তাদের হত্যা করা হয়।

নিহত যুবকরা হলেন- শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলার মহিসার ইউনিয়নের কাইচকুড়ি গ্রামের মৃত শহর আলী মাঝির ছেলে উজ্জ্বল মাঝি ও তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের শ্রমিক নড়িয়া উপজেলার বিঝারী ইউনিয়নের কাপাশপাড়া গ্রামের আলম মোল্যা।

প্রিয়জনকে হারিয়ে দিশেহারা স্বজনরা, চলছে শোকের মাতম। স্বজনরা লাশ দেশে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে সরকারি সহযোগিতা চেয়েছেন।

দক্ষিণ আফ্রিকায় বসবাসকারী প্রবাসী ও নিহতদের স্বজনদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ভেদরগঞ্জ উপজেলার কাইচকুড়ি গ্রামের উজ্জ্বল মাঝি ২০০৮ সালে সাউথ আফ্রিকা যান। সেখানে তিনি একটি বিপনি বিতান খুলে বসেন। গত ১০ বছরে তিনি চারটি বিপনি বিতান খোলেন। গত রবিবার স্থানীয় সময় রাত পৌনে আটটার দিকে কেপটাউন শহরের মালমাজবেরি এলাকার বিপনি বিতানে সন্ত্রাসীরা হামলা চালায়। সন্ত্রাসীরা উজ্জ্বলের মাথায় অস্ত্র ঠেকিয়ে গুলি করে হত্যা করে। এসময় তারা ওই দোকানের শ্রমিক নড়িয়া উপজেলার আলম ম্যোলাকেও গুলি করে হত্যা করে। তখন সন্ত্রাসীদের এলোপাথারি গুলিতে ওই প্রতিষ্ঠানের ক্রেতা কালরড নামে এক দক্ষিণ আফ্রিকার নাগরিক গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান এবং আরো তিনজন আহত হন।

নিহত উজ্জ্বলের বোন জামাই সুলতান মাহমুদ বলেন, এক যুগ ধরে দক্ষিণ আফ্রিকায় বসবাস করছেন আমার শ্যালক। জানুয়ারিতে বাড়িতে এসে বিয়ের পিড়িতে বসার কথা ছিল তার। এর জন্য পছন্দ মতো মেয়ে দেখে আংটি ও কাবিন করে রাখা হয়েছে। তবে সন্ত্রাসীর গুলিতে কেড়ে নিয়েছে সেই স্বপ্ন। সরকারের কাছে দাবি, দ্রুত যেন লাশ আনার ব্যবস্থা করা হয়।

আলম মোলার চাচাতো চাচা ফোরহাদ হোসেন বলেন, আলম দক্ষিণ আফ্রিকার কেপটাউন শহরের সুপার মার্কেটের একটি দোকানে চাকরি করত। ওই দোকানটিতে পাঁচজন কমর্চারী ছিল। রবিবার রাতে কিছু সন্ত্রাসী দোকানে ঢুকে চাঁদা দাবি করে। চাঁদা না দেয়ায় সন্ত্রাসীরা এলোপাথারি গুলি চালায়। আলম গুলিবিদ্ধ হয়, পরে মারা যায়।

আলম মোল্যার স্ত্রী রুমা আক্তার বলেন, আমার ছেলেমেয়ে কাকে বাবা বলে ডাকবে? আমার সংসার কিভাবে চলবে?

শরীয়তপুর জেলা প্রশাসক কাজী আবু তাহের বলেন, দক্ষিণ আফ্রিকার কেপটাউন শহরে সন্ত্রাসীর গুলিতে শরীয়তপুরের দুই ব্যক্তি নিহতর সংবাদ লোকমুখে শুনেছি। কিন্তু সরকারিভাবে কোন খবর আমাদের কাছে আসেনি। নিহতর পরিবারকে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে।

(ঢাকাটাইমস/২৭আগস্ট/এলএ)