সাড়ে চার বছর পর পরিবার পেল জুথি
গৃহকর্তার নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়ে অজানার উদ্দেশ্যে পা বাড়িয়েছিল আট বছরের জুথি। তারপর আশ্রয় হয়েছিল ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে। কিন্তু জুথির পরিবারের সন্ধান পাওয়া যাচ্ছিল না।
অবশেষে সাড়ে চার বছরেরও বেশি সময় পর জুথির পরিবারকে খুঁজে পাওয়া গেছে। বুধবার বিকালে জুথি ফিরেছে তার পরিবারে।
আমেনা খাতুন জুথির বয়স এখন ১৩ বছর। কুমিল্লার লাঙ্গলকোটে তার বাড়ি।
জুথির বাবা বাহরাইন প্রবাসী। ২০১৫ সালের ২ জানুয়ারি ভোরে জুথি রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশনে বসে কাঁদছিল। তখন তার বয়স ছিল আট বছর। ফেরদৌস হোসেন নামে এক ব্যক্তি তাকে উদ্ধার করে নগরীর শাহমখদুম থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছিলেন। সেই থেকে রাজশাহীতেই ছিল জুথি।
রাজশাহী মহানগর পুলিশের (আরএমপি) মুখপাত্র গোলাম রুহুল কুদ্দুস জানান, ঢাকায় একটি বাড়িতে গৃহকর্মীর কাজ করতো জুথি। সেখানে তাকে নির্যাতন করা হতো। তাই একদিন বাড়ি থেকে পালায় মেয়েটি। এরপর ট্রেনে চড়ে চলে এসেছিল রাজশাহী। জুথিকে উদ্ধারের পর সে শুধু তার বাড়ি কুমিল্লার লাঙ্গলকোট বলে জানিয়েছিল। আর বলেছিল, তার বাবা প্রবাসী। কিন্তু এতোটুকু সূত্র নিয়ে তার পরিবারকে তখন খুঁজে পাওয়া যায়নি।
তাই তাকে আরএমপির ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে রাখা হয়েছিল। এরপর দীর্ঘমেয়াদী পুনর্বাসনের জন্য তাকে বেসরকারি সংস্থা অ্যাসোসিয়েশন ফর কম্যুনিটি ডেভেলেপমেন্টের (এসিডি) ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু পুলিশের পক্ষ থেকে তার পরিবারের সন্ধান চালিয়ে যাওয়া হচ্ছিল।
এ নিয়ে সম্প্রতি আবারও লাঙ্গলকোট থানায় জুথির ছবি পাঠানো হয়। জুথির পরিচয় জানতে চেয়ে থানার একজন উপ-পরিদর্শক (এসআই) সেই ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করেন। এরপরই ছবিটি পড়ে জুথির স্বজনদের দৃষ্টিতে। তারা যোগাযোগ করেন পুলিশে। বুধবার জুথির মা-বাবা রাজশাহী আসেন।
এরপর আইনগত প্রক্রিয়া শেষে জুথিকে তাদের হাতে তুলে দেওয়া হয়। এ সময় দীর্ঘদিন পর মেয়েকে পেয়ে তারা আবেগে কেঁদে ফেলেন। জুথিকে হস্তান্তরের সময় আরএমপির ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে দায়িত্বরত সহকারী কমিশনার সোনিয়া পারভীন, পুলিশ পরিদর্শক পলি দাস প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
(ঢাকাটাইমস/২৮আগস্ট/এলএ)