দ্বিতীয় প্রান্তিকে রবির মুনাফায় নেতিবাচক প্রভাব

প্রকাশ | ২৯ আগস্ট ২০১৯, ১৫:৩১

তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

 

 

মোট রাজস্বের উপর ন্যূনতম ২ শতাংশ কর, ডিজএলাওয়েন্সেসের (এক্সেস পারকুইজিট এবং অন্যান্য) ওপর প্রত্যক্ষ কর আরোপ এবং প্রতিকূল টেলিযোগাযোগ নীতিমালার কারণে চলতি বছরে দ্বিতীয় প্রান্তিকে রবির আর্থিক ফলাফলে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। এর ফলে এই প্রান্তিকে মাত্র ১ দশমিক ২ কোটি টাকা মুনাফা করেছে রবি। কিন্তু ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে আর্থিক ক্ষেত্রে আইএফআরএস সিক্সটিন বাস্তবায়ন করায় অর্জিত এই স্বল্প মুনাফা ৩২ দশমিক ২ কোটি টাকার লোকসানে পরিণত হয়েছে। 

রবির রাজস্ব গত প্রান্তিকের তুলনায় ১ দশমিক ৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে, যা টাকার অঙ্কে ১ হাজার ৮৫৮ দশমিক ৭ কোটি টাকা। গত বছরের একই প্রান্তিকের তুলনায় রাজস্ব বৃদ্ধি পেয়েছে ১২ দশমিক ৪ শতাংশ।

ভয়েস থেকে কোম্পানির রাজস্ব গত প্রান্তিকের তুলনায় ২ দশমিক ৮ শতাংশ এবং গত বছরের একই প্রান্তিকের তুলনায় ৯ দশমিক ৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। অন্যদিকে গত প্রান্তিকের তুলনায় ডেটা থেকে রাজস্ব বৃদ্ধি পেয়েছে ২ দশমিক ৫ শতাংশ এবং গত বছরের একই প্রান্তিকের তুলনায় তা বৃদ্ধি পেয়েছে ২৮ দশমিক ৯ শতাংশ।

এ বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে গ্রাহক সংখ্যা ১ দশমিক ৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ৪ কোটি ৭৯ লাখে দাঁড়িয়েছে যা দেশের মোট মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীর ২৯ দশমিক ৬ শতাংশ। গত বছরের একই প্রান্তিকের তুলনায় গ্রাহক সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে ৭ দশমিক ২ শতাংশ। ২০১৯ সালের দ্বিতীয় প্রান্তিক শেষে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর গ্রাহকের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩ কোটি ১ লাখে যা মোট গ্রাহকের ৬২ দশমিক ৮ শতাংশ।

আইএফআরএস সিক্সটিন’র ফিন্যান্সিয়াল ইমপ্লিকেশনগুলো বিবেচনায় না নিয়ে ৩৫ দশমিক ৬ শতাংশ মার্জিনসহ ২০১৯ সালের দ্বিতীয় প্রান্তিকে রবির ইবিআইটিডিএ দাঁড়িয়েছে ৬৬২ দশমিক ৬ কোটি টাকায়। পার্সেন্টেজ পয়েন্টে (পিপি) রবির ইবিআইটিডিএ মার্জিন প্রবৃদ্ধি গত প্রান্তিকের তুলনায় বেড়েছে ৬ দশমিক ৬ পিপি (আইএফআরএস সিক্সটিন বিবেচনায় না নিয়ে) এবং গত বছরের একই প্রান্তিকের তুলনায় তা বেড়েছে ১১ দশমিক ০ পিপি (আইএফআরএস সিক্সটিন বিবেচনায় না নিয়ে)। আইএফআরএস সিক্সটিন বিবেচনায় নিলে ২০১৯ সালের দ্বিতীয় প্রান্তিক শেষে  রবি’র ইবিআইটিডিএ দাঁড়ায় ৮৪৯ দশমিক ৯ কোটি টাকায়।

এ বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে রবির মূলধনী বিনিয়োগ গত প্রান্তিক থেকে ১১ দশমিক ৭ শতাংশ কমে ২৬৯ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে। দেশজুড়ে ৪.৫জি নেটওয়ার্কের বিস্তৃতি এবং অন্যান্য নেটওয়ার্কের আধুনিকায়নের জন্য এ মূলধনী বিনিয়োগ করা হয়েছে। দেশজুড়ে ৮ হাজার ৮০টি সক্রিয় ৪.৫জি সাইট নিয়ে এখন পর্যন্ত দেশের বৃহত্তম ৪.৫জি নেটওয়ার্ক গড়ে তুলেছে রবি। কার্যক্রম শুরুর পর থেকে ২০১৯ সালের দ্বিতীয় প্রান্তিক পর্যন্ত রবির মোট মূলধনী বিনিয়োগের পরিমাণ ২৩ হাজার ৭২০ কেটি টাকা। এই একই সময়ে রবি তার শেয়ারহোল্ডারদের লভ্যাংশ হিসেবে প্রদান করেছে মাত্র ২৯০ কোটি টাকা।

দ্বিতীয় প্রান্তিকে রবি রাষ্ট্রীয় কোষাগারে ৬৭৯ দশমিক ৭ কোটি টাকা জমা দিয়েছে যা এ প্রান্তিকের মোট রাজস্বের ৩৫ দশমিক ৬ শতাংশ। কার্যক্রম শুরুর পর থেকে এই প্রান্তিক পর্যন্ত রাষ্ট্রীয় কোষাগারে ২৫ হাজার ১৯০ কোটি টাকা জমা দিয়েছে রবি।

রবির ম্যানেজিং ডিরেক্টর অ্যান্ড সিইও মাহতাব উদ্দিন আহমেদ বলেন, রাজস্বের উপর ন্যূনতম ২ শতাংশ কর, ডিজএলাওয়েন্সেসের (এক্সেস পারকুইজিট এবং অন্যান্য), এবং বিদ্যমান প্রতিকূল টেলিযোগাযোগ নীতিমালার কারণে এ বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে রবির আর্থিক ফলাফলে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। এছাড়া সিম কর দ্বিগুণ করা এবং সম্পূরক শুল্ক বাড়ানো আমাদের আর্থিক পরিস্থিতিকে সামনের দিনগুলোতে আরও ঝুঁকিতে ফেলবে। এ প্রান্তিকে আমাদের রাজস্ব অর্জন    সন্তোষজনক হলেও পরিবর্তিত করব্যবস্থা বাজারের প্রচলিত চ্যালেঞ্জগুলোর চেয়ে বড় প্রতিবন্ধক হিসেবে দেখা দিয়েছে।

রবির নেয়া ডিজিটাল পদক্ষেপগুলো সম্পর্কে তিনি বলেন, ডিজিটাল অগ্রযাত্রায় এ প্রান্তিকে রবি বেশ কয়েকটি উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ নিয়েছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে ডেটা সায়েন্টিস্ট ও ডেটা ইঞ্জিনিয়ারদের জন্য আয়োজিত দেশের প্রথম ডেটাথন, সমন্বিত লাইফস্টাইল অ্যাপ নূর মাধ্যমে অনুদান প্রদানের সুযোগ এবং নারীদের জন্য ডিজিটাল লাইফস্টাইল সল্যুশন প্যাক ‘ইচ্ছেডানা’ চালু করা।

(ঢাকাটাইমস/২৯আগস্ট/এজেড)