জৌকুড়া-নাজিরগঞ্জ রুটে ফেরি চলাচল বন্ধে দুর্ভোগ

রাজবাড়ী প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ৩১ আগস্ট ২০১৯, ১১:৪১ | প্রকাশিত : ৩১ আগস্ট ২০১৯, ০৮:৪২

রাজবাড়ীর জৌকুড়া ও পাবনার নাজিরগঞ্জ ঘাটের মধ্যে ফেরি চলাচল চার দিন ধরে বন্ধ রয়েছে। পদ্মা নদীতে নতুন করে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ও স্রোতের বেগ বেড়ে যাওয়ায় ফেরি চলাচল বন্ধ রেখেছে কর্তৃপক্ষ। ফলে কম সময়ে দক্ষিণবঙ্গের সঙ্গে উত্তরবঙ্গে যাওয়ার এই রুটটিতে ফেরিতে যান পারাপার ব্যাহত হওয়ায় মানুষকে পোহাতে হচ্ছে দুর্ভোগ।

রাজবাড়ী সড়ক ও জনপথ বিভাগের ফেরি বিভাগ সূত্র থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।

নৌপথে রাজবাড়ী ও পাবনার সহজ যোগাযোগ মাধ্যম জৌকুড়া-নাজিরগঞ্জ নৌরুট। কিন্তু পদ্মায় তীব্র স্রোতের কারণে চার দিন ধরে এই রুটে ফেরি চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন এই রুট দিয়ে নদী পারাপার হওয়া যাত্রীরা। এ ছাড়া আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে ইজারাদারের। উপায় না পেয়ে অনেকে ঝুঁকি নিয়ে ট্রলারে করে নদী পার হচ্ছেন।

জানা গেছে, রাজবাড়ী সড়ক ও জনপথ বিভাগের তত্ত্বাবধানে রাজবাড়ী ধাওয়াপাড়ার জৌকুড়া ও পাবনার নাজিরগঞ্জ রুটে দুটি ছোট ফেরি এবং ইজারাদারের মাধ্যমে দুটি লঞ্চ চলাচল করে। কিন্তু নদীর তীব্র স্রোতের কারণে গত বুধবার থেকে ফেরিগুলো স্রোতের বিপরীতে চলতে পারছে না। ফলে ফেরি চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। তবে যাত্রী পারাপারে স্রোতের মধ্যে ঝুঁকি নিয়েই চলছে লঞ্চ ও ইঞ্জিনচালিত ট্রলার। লঞ্চ ও ট্রলারে প্রতিদিন পাঁচটি করে মোট ১০ ট্রিপ দেওয়া হচ্ছে।

রাজবাড়ীর ধাওয়াপাড়ার জৌকুড়া-নাজিরগঞ্জ ফেরিঘাটের ইজারাদারের ম্যানেজার মো. নুরুল ইসলাম ও লঞ্চঘাট ম্যানেজার সোহেল রানা বলেন, স্রোতের বেড় বাড়ার কারণে রুটটি দিয়ে কয়েকদিন ফেরি চলাচল বন্ধ থাকলেও সাবধানতা অবলম্বন করে যাত্রী পারাপারে লঞ্চ চলাচল করেছে। এই রুটে চলাচলকারী লঞ্চগুলো পুরাতন হলেও মেরামত করে চলাচলের উপযোগী করা হয়েছে।

এ রুট দিয়ে চলাচলকারীরা জানান, জৌকুড়া-নাজিরগঞ্জ রুটে যে দুটি ফেরি চলাচল করে তা অনেক পুরাতন এবং ছোট। নদীর স্রোতের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চলা ওই ফেরির পক্ষে সম্ভব না। দুটি জেলার গুরুত্বপূর্ণ এ নৌরুটে নতুন এবং বড় ফেরি প্রয়োজন। ফেরির এ অবস্থা জেনে যানবাহন কম আসে এ ঘাটে। এ ছাড়া এই রুটে চলাচলকারী দুটি লঞ্চ রয়েছে, যা অত্যন্ত ছোট এবং লক্কড়ঝক্কড়। লঞ্চে উঠলে নৌকার মতো দোলে। পাশাপাশি নৌকায়ও যাত্রী পারাপার করা হয়। কিন্তু যথাযথ কর্তৃপক্ষের কোনো মাথাব্যথা নেই এ নিয়ে। এ ছাড়া ফেরি ঘাটের পল্টুনের অবস্থাও ভালো না। ফেরি, লঞ্চ ও নৌকা একই পল্টুনে ভেড়ে। যাত্রীদের বাথরুম, দাঁড়ানো বা বসারও কোনো ব্যবস্থা নেই।

রাজবাড়ী সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. আশিকুর রহমান জানান, জৌকুড়া ও নাজিরগঞ্জ নৌরুটে বিগত ১৫ বছর ধরে দুটি ইউটিলিটি ফেরি দিয়ে তারা ইজারার মাধ্যমে যানবাহন পারাপার করে আসছেন। তবে ফেরি দুটি অনেক পুরাতন। ফলে চলতি বছর পদ্মায় দ্বিতীয় দফায় অস্বাভাবিক পানি বৃদ্ধির কারণে ওই ফেরি দুটি যানবাহন লোড করে স্রোতের বিপরীতে কিছুতেই ঘাটে যেতে পারছে না।

গত ২৮ আগস্ট জৌকুড়া থেকে তিনটি গাড়ি নিয়ে একটি ফেরি নাজিরগঞ্জ যাবার সময় স্রোতের টানে ৪/৫ কিলেমিটার ভাটিতে রাজবাড়ীর গোদারবাজার এলাকায় চলে যায়। পরে ওই ফেরিটি নদীর কুল দিয়ে অনেক কষ্টে অন্য একটি নৌযানের সাহায্যে ঘাটে ফিরে যায়। এরপর থেকে গত চার দিন ধরে আর কোনো ফেরি পারাপার হচ্ছে না। স্রোতের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চলতে না পারায় দুর্ঘটনা এড়াতে জৌকুড়া-নাজিরগঞ্জ রুটে বুধবার থেকে ফেরি চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। স্রোত কিছুটা কমলে পুনরায় ফেরি চলাচল শুরু করা হবে। এ ছাড়া এ রুটে পারাপার হওয়া যানবাহনগুলো এখন লালন শাহ সেতু ব্যবহার করছে। আগামীকাল রবিবার ফেরি চলাচল শুরু করা যাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

ঢাকাটাইমস/৩১আগস্ট/প্রতিনিধি/এমআর

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :