তিন কোটি টাকার সেতুতেও কাটেনি দুর্ভোগ

প্রকাশ | ০২ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০৯:১২

বদরুল ইসলাম বিপ্লব, ঠাকুরগাঁও

ঠাকুরগাঁও ও পঞ্চগড় এই দুই জেলার মানুষের যোগাযোগের একমাত্র রাস্তা বালিয়াডাঙ্গী-লাহিড়ী সড়ক। এই সড়কের তীরনই নদীর উপর রয়েছে একটি সেতু। পুরোনো সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে যাওয়ার পর প্রায় তিন কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয়েছে নতুন একটি সেতু। কিন্তু ৬৯ মিটার আরসিসি গার্ডার ব্রিজটি পুরোপুরি কাজে আসছে না। দুই ধারের সংযোগ রাস্তা পাকা না হওয়ায় ভারী যানবাহন চলাচল করতে পারছে না ওই সেতু দিয়ে। এতে ভোগান্তি কমেনি ওই সড়কে যাতায়াতকারীদের।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চলতি বছর বর্ষার পানিতে ভেসে যায় ব্রিজের উত্তর পাশে করা হেরিং বন্ডের ইট। পরে স্থানীয় প্রকৌশল অধিদপ্তর পুনরায় ব্রিজের উত্তর পার্শ্বে হেরিং বন্ড করে দিলেও দীর্ঘ পাঁচ মাসে উদ্যোগ নেয়নি ব্রিজের দুই পাশের রাস্তা পাকাকরণের।

লাহিড়ীহাট ঠাকুরগাঁও জেলার একটি ঐতিহ্যবাহী হাট। প্রতি শুক্র ও সোমবার প্রায় ৫০ হাজার মানুষের সমাগম ঘটে এখানে। ঠাকুরগাঁও সদর, নেকমরদ, রাণীশংকৈল, হরিপুর, পীরগঞ্জসহ দিনাজপুর জেলার বীরগঞ্জের বেশির ভাগ মানুষ পশু বেচাকেনার জন্য এখানে আসেন। ধান চাল গম ভুট্টাসহ পশু পরিবহন করতে প্রতি হাটে শতাধিক ট্রাক আসে এখানে। ২০১৬ সালের ৬ জানুয়ারি গরু কিনে নছিমনে করে পুরাতন ঝুঁকিপূর্ণ ব্রিজটি দিয়ে বাড়ি ফেরার সময় নছিমন উল্টে ফজলুল করিম ও সাদ্দাম হোসেন নামে দুই গরু ব্যবসায়ী নিহত হন। আহত হন বেশ কয়েকজন। একই বছরের ১৫ অক্টোবর সেই ব্রিজে আরেক দুর্ঘটনায় আইনুল ইসলাম নামে এক সবজি ব্যবসায়ী নিহত হন।

পরে সাধারণ মানুষের ভোগান্তির কথা চিন্তা করে স্থানীয় সাংসদ ব্রিজ নির্মাণের উদ্যোগ নেন। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর ২০১৭-২০১৮ অর্থবছরে দুই কোটি ৯৩ লাখ টাকা ব্যয়ে ব্রিজটির নির্মাণকাজ শুরু করে। চলতি বছরের মার্চ মাসে ব্রিজটির নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। ৬৯.০৫ মিটার আরসিসি গার্ডার ব্রিজটির নির্মাণকাজ সম্পন্ন করে রামবাবু নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।

ধানবোঝাই ট্রাক নিয়ে ফেরার সময় ট্রাকচালক ফরিদুল ইসলাম ঢাকাটাইমসকে জানান, বড় একটি ব্রিজ নির্মাণ হলেও দুই পাশের রাস্তা পাকা না করায় ট্রাক নিয়ে যাওয়া যাচ্ছে না। তাছাড়া রাস্তার দুই পাশের বাঁধগুলোর অবস্থা খুবই খারাপ। যেকোনো সময় ধসে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।

অটোচালক করিমুল ইসলাম ঢাকাটাইমসকে বলেন, ব্রিজের দুই পাশের হেরিং বন্ড ঠিকমত করেনি কর্তৃপক্ষ। বালিয়াডাঙ্গী-লাহিড়ী দুবার অটো নিয়ে যাতায়াত করলে অটো মেরামত করা লাগে। তাই কোনো উপায় না থাকায় পুরাতন ব্রিজটি দিয়েই ঝুঁকি নিয়ে যেতে হচ্ছে।

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান রামবাবু কন্ট্রাকশনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ব্রিজ নির্মাণ করা তাদের কাজ। রাস্তা মেরামত তাদের কাজ নয়। ব্রিজ নির্মাণকাজ সম্পন্ন করে তারা বিল তুলে নিয়েছেন।

উপজেলা প্রকৌশলী মাইনুল ইসলাম ঢাকাটাইমসকে জানান, বালিয়াডাঙ্গী-লাহিড়ী রাস্তা শিগগির মেরামত করা হবে। রাস্তা মেরামতের সময় ব্রিজের উভয় পাশে সংযোগ সড়ক পাকা করা হবে। তাছাড়া ব্রিজের দুই পাশে রাস্তা বের করতে গিয়ে জমি নিয়ে কিছু জটিলতা ছিল। জমিসংক্রান্ত প্রতিবন্ধকতা দূর করতে গিয়ে রাস্তা পাকাকরণে একটু দেরি হচ্ছে।

ঢাকাটাইমস/২সেপ্টেম্বর/প্রতিনিধি/এমআর