নারীদের সেবায় ৯০ বছরেও অনন্য জহিরন বেওয়া
বাংলাদেশের সামাজিক বাস্তবতা হার মেনেছে জহিরন বেওয়ার কাছে। বয়স ৯০ পেরিয়ে গেছে। তবুও কমেনি এই নারীর উদ্যম। বাইসাইকেল চালিয়ে গ্রাম থেকে গ্রামে ছুটে চলেন তিনি। প্রত্যন্ত অঞ্চলের নারীদের পরিবার পরিকল্পনাসহ নানা স্বাস্থ্য পরামর্শ দেন তিনি। এলাকায় তার পরিচিতি ছড়িয়েছে ‘বাংলার নানি’ নামে। এ নামেই তাকে চেনে লালমনিরহাটের মানুষ।
যে বয়সে অন্যের সাহায্য ছাড়া চলাফেরাই মুশকিল, সেই বয়সে বাইসাইকেল চালিয়ে দরিদ্র মানুষের স্বাস্থ্যসেবা দিচ্ছেন জহিরন বেওয়া। অল্প বয়সে স্বামী হারান তিনি। তিন সন্তানকে বড় করেছেন কষ্টেসৃষ্টে। ১৯৭৩ সালে পরিবার পরিকল্পনা বিষয়ে ধাত্রীবিদ্যায় প্রশিক্ষণ নেন। এরপর বিভিন্ন সময় স্থ্যকর্মীদের সঙ্গে কাজ করে অর্জন করেন অভিজ্ঞতা। প্রথমে সামান্য মজুরিতে চুক্তিভিত্তিক চাকরি করলেও এখন কোনো স্বার্থ ছাড়াই কাজ করছেন মানবসেবায়।
পরিবার পরিকল্পনা বিষয়ে পরামর্শ, কিশোরীদের মাঝে সচেতনতা সৃষ্টি ও গর্ভবতী নারীদের স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ায় খুশি পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের কর্মকর্তারাও। লালমনিরহাট পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের উপপরিচালক হারুন অর রশিদ বলেন, ‘বয়সকে তোয়াক্কা না করে তিনি পরিবার পরিকল্পনার এই কাজে নিবেদিত। এ রকম আরও বাংলার নানি যদি আমরা গ্রামে গ্রামে সৃষ্টি করতে পারতাম, তাহলে আমাদের লক্ষ্য পূরণ করতে পারতাম আরও দ্রুত।’
মানবসেবা যার নেশা তার কাছে বয়স কোনো বাধা নয় তারই নজির ‘বাংলার নানি’। পুরো বাংলাদেশের কাছে বাংলার এবং মানবতার নানী হিসেবে পরিচিতি লাভ করাই জীবনের শেষ চাওয়া বলে জানান জহিরন বেওয়া।
ঢাকাটাইমস/৪সেপ্টেম্বর/এমআর