এডিসের অতিবিস্তার রোধ হলো গরমে

প্রকাশ | ০৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০৯:৪১ | আপডেট: ০৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০৯:৫৯

সৈয়দ ঋয়াদ

জুলাইয়ে মারাত্মক আকার নিয়ে আগস্টে দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়া মশাবাহিত ডেঙ্গুর প্রকোপ দিন দিন কমে আসছে। সরকারি হিসাবে আগের চেয়ে এখন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে আসছে কম। চলতি মাসে শুরুর দিন থেকে প্রতিদিনই কমে আসছে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা। এর জন্য এডিস মশার অতিবিস্তার ঠেকানো ও জনসচেতনতা বৃদ্ধির প্রভাব বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

তবে হঠাৎ বৃষ্টিতে ডেঙ্গু পরিস্থিতি বদলে যাওয়ার শঙ্কাও রয়েছে। চলতি ভাদ্র মাসে সারাদেশে তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। গত দুই সপ্তাহের ভ্যাপসা গরমের কারণে প্রায় শুষ্ক আবহাওয়ায় এডিস মশার অতিবিস্তার অনেকাংশেই কমেছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই গরমের মধ্যে বৃষ্টি না হওয়ায় জমা জল না পেয়ে এডিস মশার লার্ভা থেকে বাচ্চা জন্ম নেয়ার হার কমে যায়। যদি বৃষ্টি হয় তাহলে পরিস্থিতি বদলে যেতে পারে বলেও মনে করেন তারা। কারণ বৃষ্টির পানিতে লার্ভা থেকে পুনরায় এডিস মশা বিস্তার করতে পারে।

বাংলাদেশ কৃষি বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও কীটতত্ববিদ আলিমুল ইসলাম ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘ডিম পারার সময় এডিস মশার প্রচুর শক্তি প্রয়োগ করতে হয়। সে কারণে প্রজনন সময়ে এডিস  প্রচুর রক্ত খেয়ে থাকে। গরম আর বৃষ্টি না হওয়ার কারণে মশার ব্রিডিং অনকাংশেই কম হচ্ছে। যদি বৃষ্টি হতো তাহলে মশার বংশবৃদ্ধিটা বেশি হতো। কিন্তু এখন বৃষ্টি না হওয়ায় সুফল মিলছে।’

এই কীটতত্ববিদের মতে, একটি পুরুষ মশার আয়ুষ্কাল সাত থেকে দশ দিন। স্ত্রী মশাগুলো বাঁচে এক মাস থেকে দেড়মাস। প্রতিটি স্ত্রী মশা প্রতিবার এক থেকে তিনশ ডিম দেয়। জীবদ্দশায় এরা প্রায় এক হাজারে মতো ডিম পারতে পারে। আর যে তাপমাত্রায় এডিস  মশার জন্ম হয় সেই টেম্পারেচারও এখন নেই। একদিকে তাপমাত্রা বেশি, অন্যনিকে বৃষ্টি না থাকায় স্ত্রী মশারা ডিম পাড়ার পরিবেশ পাচ্ছে না। যে কারণে বলা যায় গরম ডেঙ্গু কমাতে দারুনভাবে সহায়ক ভূমিকা পালন করছে।

তবে ডেঙ্গু মোকাবেলায় সাধারণ মানুষের ভূমিকা সবচেয়ে বেশি বলে মনে করেন অধ্যাপক আলিমুল। তিনি বলেন, ‘সরকারের পৃষ্ঠপোষকতার পাশাপাশি সাধারণ মানুষর সচেতন হওয়ার দরুন ডেঙ্গু পরিস্থতিতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছে।’

জুলাইয়ে ডেঙ্গু পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার নেয়ার পর অন্যান্য হাসপাতালের মতো রোগীর চাপ ছিল মুগদা সরকারি হাসপাতালেও। তবে সেই পরিস্থিতি এখন বদলে গেছে।

মুগদা সরকারি হাসপাতালের উপ-পরিচালক মো. খায়রুল আলম ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘গত তিন মাস যে পরিস্থিতি ছিল সেটা অনেকাংশেই কমে এসেছে। এখন ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যাও কমে এসেছে।’

‘এমনকি হাসপাতালের ডাক্তার এবং নার্সদের একটি বড় অংশই ডেঙ্গুকে আক্রান্ত হয়। তবে এই মাসের শুরু থেকেই প্রথম তিন দিনেই ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী ভর্তির সংখ্যা কমে এসেছে। চলতি সপ্তাহে  অবস্থা অরো উন্নতির দিকে যাবে বলে আমরা আশা করছি।’

(ঢাকাটাইমস/০৪সেপ্টেম্বর/এসআর/ডিএম)