জাবিতে শিক্ষার্থীদের অবরোধ কর্মসূচি অব্যাহত

প্রকাশ | ০৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ১৭:২৮

জাবি প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নয়ন প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগের বিচার বিভাগীয় তদন্ত, মহাপরিকল্পনা পুনর্বিন্যাসসহ তিন দফা দাবিতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের অবরোধ কর্মসূচি পালন অব্যাহত রয়েছে। বুধবার সকালে দ্বিতীয় দিনের মতো প্রশাসনিক ভবন অবরোধ করে কর্মসূচি পালন করেন তারা। অবরোধ চলে বিকেল চারটা পর্যন্ত।

গতকাল মঙ্গলবার সকাল আটটা থেকে ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর’ ব্যানারে এ অবরোধ কর্মসূচি শুরু হয়। ফলে মঙ্গলবারের মতোই আজও সকল প্রশাসনিক কার্যক্রম বন্ধ ছিল।

এদিকে আজ বেলা একটার দিকে উপাচার্য অধ্যাপক ড. ফারজানা ইসলাম বলেন, আন্দোলনকারীদের পক্ষ থেকে আলোচনায় বসার প্রস্তাব এসেছে। আমরাও চাই বিষয়টি আলোচনার মাধ্যমে সমাধান হোক। তবে কোন শর্ত দিয়ে আলোচনা সফল হবে না।

এর আগে সকাল সোয়া নয়টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক আমির হোসেন ও উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) নূরুল আলম বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরোনো প্রশাসনিক ভবনের সামনে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলেন। কিন্তু বনিবনা না হওয়ায় তারা ফিরে যান।

পরে সকাল ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ শেখ মো. মনজুরুল হক ও ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর আ স ম ফিরোজ-উল-হাসানসহ প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা সেখানে গিয়ে আন্দোলনরকারী শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন। এ আলোচনাও ব্যর্থ হলে প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরা ফিরে যান।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের মধ্যে জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি আশিকুর রহমান বলেন, ‘প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিদের সাথে আমাদের কথা হয়েছে। আমরা আমাদের দাবি জানিয়েছি। তবে আনুষ্ঠানিক আলোচনায় বসার কোন প্রস্তাব পাইনি। আমরা জানিয়ে দিয়েছি তিন দফা দাবির ব্যাপারে ইতিবাচক সাড়া পেলে আমরা আলোচনায় বসবো।’

বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক জয়নাল আবেদীন শিশির বলেন, ‘আমরা আমাদের দাবির স্বপক্ষে অনড়। আমাদের দাবি মেনে নিলে আমরা অবরোধ প্রত্যাহার করে নেব। অন্যথায় আরও কঠোর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবো।

গত বছরের ২৩ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর উন্নয়নের জন্য ১ হাজার ৪৪৫ কোটি ৩৬ লাখ টাকার প্রকল্প অনুমোদন দেয় জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)।

গত ৩০ মে এই প্রকল্পের প্রথম ধাপে পাঁচটি হলের নির্মাণকাজের উদ্বোধন করেন উপাচার্য ফারজানা ইসলাম। এসব হল নির্মাণের জন্য নির্ধারিত স্থানে প্রায় ১২ শ গাছ ছিল। এই গাছ কাটার প্রতিবাদ ও প্রকল্পের মহাপরিকল্পনা ‘অপরিকল্পিত’ দাবি করে আন্দোলন করতে শুরু করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের একাংশ।

এর মধ্যেই উপাচার্যের বাসভবনে বৈঠক করে প্রকল্পের কাজ সুষ্ঠুভাবে করার জন্য ছাত্রলীগকে দুই কোটি টাকা ভাগাভাগি করে দেওয়ার অভিযোগে গত ২৩ আগস্ট একটি জাতীয় দৈনিকে সংবাদ প্রকাশিত হয়। পরের দিন থেকে টাকা লেনদেনের অভিযোগের বিচার বিভাগীয় তদন্ত ও মহাপরিকল্পনা পুনর্বিন্যাসসহ তিন দফা দাবিতে ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর’ ব্যানারে আন্দোলনে নামেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। এরই অংশ হিসেবে গতকাল মঙ্গলবার থেকে এ আন্দোলন চলছে।

ঢাকাটাইমস/০৪সেপ্টেম্বর/ইএস