প্রেমিকার জন্য গায়ে আগুন দেয়া সেই প্রেমিকের মৃত্যু

প্রেমিকাকে ভালবেসে না পেয়ে শরীরে কেরোসিন দিয়ে আগুন জ্বালিয়ে দেন বিশ্বজিত দে। পরে আগুন সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়লে বাঁচতে পুকুরে ঝাঁপ দেন বিশ্বজিত। এরপর স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে তালা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে দেয়। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় সেখান থেকে চিকিৎসকরা খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করে তালা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

৩১ আগস্ট সকাল ১০টার দিকে সাতক্ষীরার তালা উপজেলার খলিলনগর ইউনিয়নের হরিশচন্দ্রকাটি দাসপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে। বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান বিশ্বজিত দে। তিনি তালা উপজেলার ইসলামকাটি ইউনিয়নের গোপালপুর গ্রামের সন্তোষ দের ছেলে।

বিশ্বজিত দের মামা সঞ্জয় দত্ত জানান, হরিশ্চন্দ্রকাটি গ্রামের এক কিশোরীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল বিশ্বজিতের। সে সুবাদে প্রেমিকার বাড়িতে গেলে তাদের বাড়ির লোকজন বিশ্বজিতকে মারপিট করে গায়ে আগুন জ্বালিয়ে দেয়। এরপর পুকুরে ফেলে দেয়। পরে স্থানীয়রা উদ্ধার করে তালা হাসপাতালে ভর্তি করে। পরে খুলনায় পাঠানো হয় বিশ্বজিতকে। বৃহস্পতিবার চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে বিশ্বজিত।

তবে ঘটনার বিষয়ে সে সময়ে খলিলনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আজিজুর রহমান রাজু জানিয়েছিলেন, বিশ্বজিত কিশোরী প্রেমিকাকে বিয়ে করবে বলে ৩০ আগস্ট দুপুরে ১৫-২০ জনকে মেয়েটির বাড়িতে পাঠায়। মেয়েটির বিয়ের বয়স না হওয়ায় পরে বিয়ে দেয়া হবে বলে জানানো হয়। এরপর ওই দিন সন্ধ্যায় বিশ্বজিতের আরও তিন বন্ধু মেয়েটির বাড়িতে এসে মেয়েকে বিয়ে দেয়ার জন্য বোঝায়। তবে মেয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে সাফ জানিয়ে দেয়া হয় বয়স না হলে বিয়ে দেবে না।

তিনি আরও জানান, এরপর শনিবার সকাল ১০টার দিকে বিশ্বজিত প্রেমিকা মেয়েটির বাড়িতে যেয়ে বিয়ের জন্য প্রস্তাব দেয়। মেয়ের পরিবার রাজি না হওয়ায় সেখানেই গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন জ্বালিয়ে দেয়। একপর্যায়ে আগুন গায়ে ছড়িয়ে পড়লে সইতে না পেরে বিশ্বজিত পাশের একটি পুকুরে লাফ দেয়। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে তালা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।

তালা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার রাজীব সরদার জানিয়েছিলেন, বিশ্বজিতের শরীরের ৪৫ শতাংশ পুড়ে গেছে। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।

তালা থানার ওসি মেহেদী রাসেল বলেন, প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে ছেলে ও মেয়েটির মধ্যে প্রেমজ সম্পর্ক ছিল। এ ঘটনায় এখনো কোন লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি। বিশ্বজিত নামে ছেলেটি মারা গেছে বলে শুনেছি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

(ঢাকাটাইমস/৫সেপ্টেম্বর/এলএ)