মালিককে বের করে দিয়ে ভবন দখলের অভিযোগ

প্রকাশ | ০৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ১৮:০৮

রাঙামাটি প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

রাঙামাটি শহরে মালিককে মারধর করে বের করে দিয়ে ভবন বেদখলের অভিযোগ পাওয়া গেছে। শুক্রবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনের পর সরেজমিনে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড ভবনের পেছনে গিয়ে এর সত্যতা পাওয়া যায়। 

কোতয়ালি থানার পুলিশও ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছে। এ ঘটনায় একটি মামলা নেয়া হয়েছে।

ভুক্তভোগী পরিবারের আঞ্জু আরা বেগম (৭০) শুক্রবার সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেন, ‘বুধবার  দুপুরে ১টার দিকে বাড়িতে অবস্থান করছিলাম। এ সময় লংগদু উপজেলার শাহজাহান, তার মেয়ে মৌসুমি, রেশমি, জুলিসহ ৮-১০ জনের মেয়ের একটি দল ঘরে ঢুকে আমাকে মারধর করে। জোর করে সাদা কাগজে স্বাক্ষর নেয়ার চেষ্টা করে। না দিলে মারধর করে। এতে আমার শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম হয়। এক পর্যায়ে আমাকে ঘর থেকে বের করে দেয়া হয়।’

প্রত্যক্ষদর্শী সাদ্দাম হোসেন বলেন, ‘আহত আঞ্জু আরাকে হাসপাতালে পাঠানো হয়। এ কাজটি যারা করেছে, তারা অমানবিক কাজ করেছে। দীর্ঘ বছর ধরে আঞ্জু আরা এখানে বসবাস করছেন। ভবনও করেছেন আঞ্জু আরা। এখন হঠাৎ ওরা বেদখল করতে এলো। এর আগেও একবার এসেছিল তখন এলাকার মানুষ তাদের তাড়িয়ে দেয়। কিন্তু বুধবার কেউ কথা বলল না। এখানে অর্থ কাজ করেছে।’

তথ্য অনুসন্ধানে জানা গেছে, আঞ্জু আরা বেগমের কাছে ২০১৫ সালে ২ লাখ টাকার বিনিময়ে জায়গাটি বিক্রি করেন শাহজাহান। জায়গা হস্তান্তর দলিলে বর্তমান পৌর কাউন্সিলর করিম আকবরের স্বাক্ষরও আছে।

এ ব্যাপারে করিম আকবর বলেন দলিলে আমার স্বাক্ষরটি ঠিক আছে।

শুক্রবার ভবন দখলের সত্যতা জানতে ঘটনাস্থলে যাওয়া হয়। এসময় ভবনের ভেতরে একাধিক মহিলাকে মারমুখী অবস্থায় দেখা যায়। এ সময় অভিযুক্ত হামলাকারী মৌসুমী সাংবাদিককে বাড়িতে প্রবেশে বাধা দেন। তিনি বারবার স্থানীয় একটি পত্রিকার সম্পাদকের নাম উচ্চারণ করেন। সাংবাদিকের সাথে কথা বলার জন্য কাউন্সিলর করিম আকবরকে ফোনে ডেকে আনেন মৌসুমী।

করিমের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে একের পর এক অসংলগ্ন কথা বলতে থাকেন। এক পর্যায়ে দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।

পরে অভিযুক্ত শাহজাহান সাংবাদিকের সামনে আসেন। এ সময় তিনি ভবন ও জায়গাটি তার বলে দাবি করেন। বলেন, ‘আমি আঞ্জু আরাকে তত্তাবধায়ক হিসেবে রেখেছিলাম। তার কাছে জায়গা বিক্রি করেছি ঠিক, কিন্তু এটি করিনি। এ ব্যাপারে দলিলের স্বাক্ষরটি তার বলে নিশ্চিত করেন।’

এক পর্যায়ে বলেন, ‘আমার স্বাক্ষরটি ঠিক থাকলেও দলিলের লেখাগুলো জাল।’

তবে ভবনটি যে তার এ ব্যাপারে কোন দলিল দেখাতে পারেননি। বলেন, ‘আজকে শুক্রবার। নামাজ আছে- সেজন্য দিতে পারব না।’

ভবন নির্মাণমিস্ত্রি কায়দে আজম বলেন, ‘ভবন নির্মাণের কাজ আমি করেছি। আঞ্জু আরা বেগম এ ভবনটি করেছেন। শাহজাহান যা বলছেন, তা মিথ্যা বলেছেন। যা করা হয়েছে- গায়ের জোরে। আঞ্জু আরা নারী বলে সাহস পেয়েছেন দখলকারীরা। বয়স্ক মহিলাকে অন্যায়ভাবে মারধর করা হয়েছে, এর বিচার হওয়া দরকার।’

কোতয়ালি থানার ওসি মীর জাহেদুল হক রনি বলেন, ‘দখলকারীদের কথাবার্তা অসংলগ্ন পেয়েছি। তাদের বিরোধ নিয়ে আদালতে আগের মামলা চলমান আছে। বুধবারের ঘটনাটি ফৌজধারী অপরাধ হিসেবে আমলে নিয়ে মামলা নেয়া হয়েছে।’

(ঢাকাটাইমস/৬সেপ্টেম্বর/এলএ)