দুর্নীতির অভিযোগে আন্দোলন

জাবিতে ছাত্রলীগ নেতার ‘মাস্তানি’তে বসল না আলোচনা

প্রকাশ | ০৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ১৮:০৮ | আপডেট: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ১৮:৫০

জাবি প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগের বিচার বিভাগীয় তদন্তসহ তিন দফা দাবিতে চলমান আন্দোলন সমাধানের লক্ষ্যে নিধর্অরিত আলোচনা বসতে পারল না ছাত্রলীগের এক নেতার ‘মাস্তানি’র কারণে।

আজ সকাল ১০টায় আন্দোলনরত শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের আলোচনায় বসার সময় নির্ধারণ ছিল।

কিন্তু তার আগে সকাল সাড়ে নয়টায় শাখা ছাত্রলীগের এক সাংগঠনিক সম্পাদক আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয় থিয়েটারের সাধারণ সম্পাদককে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করায় ঘটনা ভিন্নদিকে মোড় নেয়। বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন আন্দোলনকারী শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। ফলে ভেস্তে যেতে বসেছে সংকট সমাধানের আলোচনা।

এর আগে গত ২৭ আগস্ট আন্দোলনে অংশ নেওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আল-বেরুনী হলে প্রথম বর্ষের এক শিক্ষার্থী ছাত্রলীগকর্মীর হাতে মারধরের শিকার হন।

এই দুই ঘটনায় জড়িত ছাত্রলীগ নেতাকর্মীর বিচার এবং অবৈধ শিক্ষার্থীদের হল থেকে বের করে না দেয়া পর্যন্ত আলোচনায় বসতে রাজি নন বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন আন্দোলনরত শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। তারা হামলার বিচার দাবিতে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন।

আলোচনায় অংশ নিতে বেলা ১১টার দিকে উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম নতুন প্রশাসনিক ভবনে যান। এ সময় আন্দোলনরত শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা মারধরের বিষয়টি সামনে এনে আলোচনায় বসতে অনীহা প্রকাশ করেন।

দুপুর ১২টার দিকে উপাচার্য আলোচনায় অংশ নিতে আসা শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলতে গেলে তারা মারধরের বিচার দাবিসহ অন্যান্য বিষয় তুলে ধরে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তারা ওই দুই ঘটনায় জড়িতদের তাৎক্ষণিক বিচার দাবি করেন এবং এরপর আলোচনায় বসার কথা জানান। এমন দাবির মুখে উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন।

তিন দফা দাবিতে ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর’-এর ব্যানারে গত মঙ্গল, বুধ ও বৃহস্পতিবার টানা তিন দিন বিশ্ববিদ্যালয়ের দুটি প্রশাসনিক ভবন অবরোধ করে রাখে আন্দোলনরতরা। বৃহস্পতিবার উপাচার্য তাদের আলোচনার বসার প্রস্তাব দিলে ‘দাবির ব্যাপারে আন্তরিকতার শর্তে’ তারা রাজি হন। তারই পরিপ্রেক্ষিতে আজ সকাল ১০টায় আলোচনায় বসার কথা ছিল দুই পক্ষের।   

শারীরিক লাঞ্ছনার ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আজ সকাল সাড়ে নয়টার দিকে আন্দোলনরত জাহাঙ্গীরনগর থিয়েটারের সাধারণ সম্পাদক ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের ৪৪তম আবর্তনের শিক্ষার্থী নুরুল ইসলাম সাইমুম শহীদ রফিক-জব্বার হলসংলগ্ন এক দোকানে নাশতা করতে যান। এ সময় শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অভিষেক মণ্ডলের হাতে শারীরিক লাঞ্ছনার শিকার হন তিনি। অভিষেক বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের ৪১তম আবর্তনের শিক্ষার্থী। এক বছর আগে তার ছাত্রত্ব শেষ হয়েছে।

মারধরের অভিযোগ সম্পর্কে অভিষেক মন্ডল বলেন, সাইমুম ‘মোবাইল ফোনে উচ্চস্বরে কথা বলছিলেন এবং তার পরিচয় জানতে চাওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বদলে সংগঠনের পরিচয় আগে দেওয়ায়’ এমন ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় তিনি নিজেও আহত হয়েছেন বলে দাবি করেন।

এর আগে গত ২৭ আগস্ট আন্দোলন কর্মসূচিতে যাওয়ায় ওই দিন রাতে আল-বেরুনী হলে ৪৮তম আবর্তনের ছাত্র সোহায়েব ইবনে মাসুদকে মারধর করেন ৪৭তম আবর্তনের শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ কর্মী সাইফুর রহমান।  

(ঢাকাটাইমস/৭সেপ্টেম্বর/মোআ)