রোগীর সঙ্গে দুর্ব্যবহার করায় চিকিৎসককে সতর্কতা

প্রকাশ | ০৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ১৬:৩১

ভোলা প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

ভোলার লালমোহন হাসপাতালে এক বৃদ্ধ রোগীর সঙ্গে দুর্ব্যবহারের ভিডিও প্রকাশের পর চিকিৎসককে সতর্ক করা হয়েছে। বলা হয়েছে, ভবিষ্যতে এমন আচরণ করলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

ওই চিকিৎসক বলছেন, রোগী আহত না হলেও প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। কিন্তু তাকে কেউ মানাতে পারছিলেন না। পরে তিনি মেজাজ হারান।

লালমোহন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার মহসিন খান এক প্রবীণ রোগীকে ধমকাচ্ছেন বলে একটি ভিডিও সম্প্রতি ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। দুই মিনিটের ভিডিওটি প্রচার হওয়ার পর তীব্র সমালোচনা হচ্ছে।

ভিডিওটিতে দেখা যায়, হাসপতালের একটি শয্যায় ঘুমানোর জন্য প্রবীণ একজন মানুষকে ধমকাচ্ছেন চিকিৎসক মহসিন খান। তিনি তাকে ‘শয়তানের বাচ্চা’ বলেও গালি দিয়েছেন। শয্যায় বিছানো চাদরটিও নিজ হাতে টেনে ছিড়ে ফেলছেন।

চিকিৎসক ধমকে বলছিলেন, ‘তোকে আমি রাতে ওয়ার্ড থেকে বের করে দিয়েছি না? তোকে বিছানার চাদর দিয়েছে কে? আজকে এইটা ছিড়ে এখানে টানিয়ে রাখব। তুই কিসের অসুস্থ? তোকে দুই-তিনটা কিল-ঘুষি দিছে। তুই মারামরি করে মেডিকেল সার্টিফিকেটের জন্য হাসপাতালে ভর্তি হইছস। তোকে আমি সাদা কাগজে চিকিৎসা দিমু। কিন্তু কোনো সার্টিফিকেট দিমু না। তোর থেকেও বেশি অসুস্থ রোগী বাড়িতে গিয়ে চিকিৎসা নেয়।’

ফেসবুকে ভিডিওটির নিচে শত শত মানুষ কমেন্ট করছেন। তারা প্রশ্ন তুলছে, যদি রোগী সুস্থই হন, তাহলে তাকে ডাক্তার তাকে ভর্তি করিয়েছেন। আর কেনই বা এরকম একটি বয়ষ্ক লোককে গালমন্দ করা হচ্ছে। সরকারি টাকায় কেনা একটি চাদর একজন সরকারি চাকুরে ছিড়ে ফেলতে পারেন কি না, এ নিয়েও উঠেছে প্রশ্ন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে চিকিৎসক মহসিন খান বলেন, ‘হাসপাতালে রোগীর ধারণক্ষমতা ৫০ জন। কিন্তু প্রতিদিন এখানে ৮০ জনের বেশি ভর্তি থাকে। এরপরও প্রতিদিন ১০-১৫ জন রোগী মারামারি করে প্রতিপক্ষকে ফাঁসানোর জন্য মেডিকেল সার্টিফিকেট নিতে হাসপাতালে ভর্তি হয়। এই রোগীদের জন্য গুরুতর অসুস্থ রোগীরা সিট না পেয়ে হাসপতালের ফ্লোরে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে।’

‘আমি মারামারি করে আহত রোগীদের জন্য হাসপাতালের বারান্দার ফ্লোরে আলাদা সিটের ব্যবস্থা করেছি। কিন্তু বৃদ্ধ লোকটি বাইরে না থেকে বেডে এসে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। এর কারণে অনেক গুরুতর রোগীকে বারান্দার ফ্লোরে থাকতে হয়েছে। হাসপাতালের ওয়ার্ডবয় বৃদ্ধ লোকটিকে বললে তিনি তার সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন। এজন্যই ওই লোকটির উপর আমার মেজাজ খারাপ হয়। আর আমি তাকে কথাগুলো বলেছি। এছাড়া যে বেডসিটটি ছেড়া হয়েছে সেটি পুরনো ছিল।’

ভোলার সিভিল সার্জন রথিন্দ্রনাথ মজুমদার বলেন, ‘বিষয়টি আমি শুনেছি। লালমোহন হাসপাতালে চিকিৎসক সংকটের কথা বিবেচনা করে তাকে প্রথম বারের মতো সতর্ক করা হয়েছে। পরবর্তীতে এরকম কাজ করলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এছাড়া কিছু লোক একটি চক্রের প্ররোচনায় হাসপাতালে এসে বিশৃঙ্খলা করে। যার কারণে এসকল ঘটনার সৃষ্টি হয়।’

ঢাকাটাইমস/০৮সেপ্টেম্বর/প্রতিনিধি/ডব্লিউবি