মাদকের টাকা জোগাড় করতে ছিনতাইয়ের পর হত্যা

প্রকাশ | ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ১৭:২০ | আপডেট: ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ১৭:৩৪

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

মাদকের টাকা জোগাড় করতে প্রাণ আরএফএল কর্মকর্তা কামরুল ইসলামের কাছ থেকে নগদ টাকা ও মূল্যবান জিনিস ছিনিয়ে নেয় তিন ছিনতাইকারী। ছিনতাই শেষে সুইচ গিয়ার চাকু দিয়ে পায়ে ছুরিকাঘাত করা করে দুর্বৃত্তরা। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে রাস্তায় জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন কামরুল। গভীর রাতে রাস্তায় লোকজন না থাকায় সেখানেই তার মৃত্যু হয়।

শনিবার রাত সাড়ে চারটার দিকে গাজীপুরের টঙ্গী কলেজ গেইট এলাকায় এই হত্যার ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর পাশের একটি সিসিটিভি ক্যামেরায় এই হত্যাকাণ্ডের দৃশ্য ধরা পড়ে। তাদের ধরতে অভিযানে নামে র‌্যাব। সোমবার ভোরে টঙ্গীর এরশাদ নগর এলাকায় অভিযান চালিয়ে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তারা হলেন- আব্দুল হক রনি ওরফে বাবু, সুজন শাহজালাল, আউয়াল হাওলাদার।

সোমবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে এই হত্যাকাণ্ডের বর্ণনা দেন র‌্যাব-১ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল সারওয়ার-বিন কাশেম।

র‌্যাব কর্মকর্তা বলেন, ‘এই হত্যার সঙ্গে যারা জড়িত সবাই পেশাদার ছিনতাইকারী। গ্রেপ্তার বাবু বাসের চালক, আউয়াল অটোরিকশা চালক ও সুজন বাসের কন্ট্রাক্টর। ছিনতাই কাজের সুবিধার জন্য তারা এসব পেশা বেছে নিয়েছে। তাদের বাসে নিয়মিত যাতায়াতকারীদের গতিবিধি অনুসরণ করত এবং তাদের বেতন কবে হবে সেই খোঁজ রাখত। পরে সুযোগ বুঝে তাদের সব ছিনিয়ে নেওয়া হতো।’

‘এমনকি বাস ভাড়া নেওয়ার সময় যাত্রীর কাছে কী পরিমাণ টাকা আছে এবং মূল্যবান জিনিস আছে কি-না সেটা অনুমান করার চেষ্টা করত। কোনো যাত্রীর কাছে মোটা অঙ্কের টাকা অথবা মূল্যবান সামগ্রী থাকলে তাদের দলের সদস্য ভুক্তভোগীদের নির্জন জায়গায় নিয়ে যেত। পরে অস্ত্রের মুখে ভয় দেখিয়ে সবকিছু ছিনিয়ে নিতো।’

সারওয়ার বলেন, ‘ঘটনার দিন মাদকের টাকা জোগাড় করতে তিনজন একসঙ্গে হন। রাস্তায় প্রাণ আরএফএল কর্মকর্তা কামরুলকে একা পেয়ে নগদ ৩৫ হাজার টাকা, ল্যাপটপ ও মোবাইল ছিনিয়ে নেন তারা। তিনি যাতে চিৎকার বা তাদের পিছু না নিতে পারেন সেজন্য পায়ে ছুরিকাঘাত করেন বাবু। পরে তারা পালিয়ে যান। ছিনতাইকারীদের ছুরিকাঘাতে কামরুলের অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ শুরু হলে তিনি রাস্তায় পড়ে যান। আশপাশে কেউ না থাকায় সেখানেই তার মৃত্যু হয়।’

‘ক্লু-লেস এই হত্যার ঘটনা অনুসন্ধানে নেমে র‌্যাব একটি সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে। ফুটেজে হত্যার দৃশ্য ধরা পড়লেও সেটা অস্পষ্ট ছিল। পরে বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়।’

র‌্যাব জানায়, নিহত কামরুল ইসলাম বাড়ি নাটোরের শ্রীকৃঞ্চপুর। তিনি আরএফএলের সিলেট জেলার জেনারেল ম্যানেজার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ঘটনার দুই দিন আগে সাপ্তাহিক ছুটিতে নাটোরে নিজ বাড়িতে যান। কোম্পানির প্রধান অফিসে মিটিংয়ে অংশ নিতে বাড়ি থেকে রওনা দিয়ে টঙ্গী আসেন। তার এক সহকর্মীর বাড়িতে রাত কাটাতে কলেজ গেইট এলাকায় যাচ্ছিলেন। এসময় ছিনতাইকারীরা অস্ত্রের মুখে তার সঙ্গে থাকা সব ছিনিয়ে নেয়। পরে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়।

(ঢাকাটাইমস/০৯সেপ্টেম্বর/এসএস/জেবি)