দুরদানার জন্য শুভকামনা

প্রকাশ | ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ১০:৫৮ | আপডেট: ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ১১:০৩

শওগাত আলী সাগর
ছবিতে দুরদানা ইসলাম

১০ সেপ্টেম্বর ম্যানিটোবার প্রাদেশিক সংসদের নির্বাচন । এই নির্বাচনে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত দুরদানা ইসলাম এনডিপির প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। সিয়াইন রিভার নামে যে রাইডিং থেকে দুরদানা প্রার্থী হয়েছেন, সেখানে মাত্র ১৮ শতাংশ অভিবাসী। আর ৯০ শতাংশের বেশি বাসিন্দাই বাড়ির মালিক। এই তথ্যটা উল্লেখ করলাম এই কারণে, রাইডিংটি আসলে অর্থিকভাবে স্বচ্ছল মানুষদের এলাকা। সেই এলাকা থেকে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত দুরদানা ইসলামকে প্রার্থী হিসেবে বেছে নিয়েছে এনডিপি।

নির্বাচনে দুরদানা বিজয়ী হয়ে বাংলাদেশি কমিউনিটির জন্য নতুন একটি ইতিহাস রচনা করতে পারবেন কি না- তা জানার জন্য আমাদের আগামীকাল পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। তবে ওই নির্বাচনী এলাকায় এনডিপির প্রার্থী টানা বিজয়ী হয়েছেন। গতবার কনজারভেটিভ পার্টি সেটি ছিনিয়ে নিয়েছে। দুরদানা বর্তমান এমএনএ’র সাথেই ভোটের লড়াই করছেন। সামগ্রিক বিবেচনায় দুরদানা এই আসনে শক্তিশালী এবং সম্ভাবনাময় প্রার্থী।

ডলি বেগমের পর দুরদানা ইসলামের প্রার্থিতা আমাকে বিশেষভাবে আকৃষ্ট করেছে। আমরা সব সময়ই মূলধারার রাজনীতিতে বাংলাদেশিদের সম্পৃক্ত হবার, ভোটের লড়াইয়ে প্রার্থী হবার কথা বলি। কেবল ভোটে দাঁড়িয়ে যাওয়াই মূলধারার রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হওয়া নয়। অন্যান্য প্রার্থীর সাথে লড়াই করার জন্য নিজের যোগ্যতার ফিরিস্তিটাও জোরালো হওয়া জরুরি। দুরদানা ইসলামের ব্যক্তিগত যোগ্যতার মাপকাঠিটা তেমনি জোরালো।

তবে ডলি বেগমের সাথে দুরদানার পার্থক্য হচ্ছে, ডলির বেড়ে ওঠা, লেখাপড়ার প্রায় পুরোটাই কানাডায়। দুরদানা বাংলাদেশে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে পড়াশোনা শুরু করে তারপর অভিবাসী হয়েছেন। এসএসমির সম্মিলিত মেধা তালিকায় কুমিল্লা বোর্ড থেকে প্রথম স্থান অধিকার করা দুরদানা, অষ্ট্রেলিয়া এবং কানাডা থেকে দুটি মাস্টার্স ডিগ্রি নিয়ে প্রাকৃতিক সম্পদ এবং জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে পিএইচডি করেছেন। কানাডার মূলধারায় পুরস্কার বিজয়ী গবেষক হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন।

‘বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত’ পরিচয় নিয়ে দুরদানারা যখন ভোটে দাঁড়ান-তখন বাংলাদেশ কমিউনিটি সম্পর্কেও কানাডিয়ানদের মনে উচ্চ ধারণা তৈরি হয়। এর আগে ক্যালগেরি থেকে খালিশ আহমেদও ফেডারেল নির্বাচেন প্রার্থী হয়েছিলেন। তার প্রোফাইলটাও ছিল এমন উঁচু।

ডলির মতো, খালিশের মতো, দুরদানার মতো উচ্চশিক্ষিত, পেশাদার, যোগ্য ব্যক্তিরা যখন কানাডার মূলধারার রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হয়, তখন বাংলাদেশি কমিউনিটির মাথা আরও উঁচু হয়ে যায়।

আমরা জানি, ম্যানিটোবার নির্বাচনে বাংলাদেশি কমিউনিটি হিসেবে আমাদের হয়তো তেমন কিছুই করার নেই। আমরা তার জন্য শুভকামনা করতে পারি। একুশে পদক পাওয়া বংশীবাদক ওস্তাদ আজিজুল ইসলামের মেয়ে দুরদানা ইসলাম কানাডার রাজনীতিতে নতুন একটা সুর তুলুক। ম্যানিটোবায় আমাদের আরেকটা ইতিহাস নির্মিত হোক। দুরদানা ইসলামের জন্য আন্তরিক শুভ কামনা।

লেখক: কানাডা প্রবাসী সাংবাদিক