আসামে এনআরসি: বাদ পড়াদের পাশের রাজ্যে ঢুকতে দেবে না ভারত

প্রকাশ | ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ১২:২৩ | আপডেট: ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ১৩:২৩

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, ঢাকা টাইমস

সম্প্রতি জাতীয় নাগরিক তালিকা প্রকাশ করেছে ভারতের আসাম রাজ্য। ওই চূড়ান্ত তালিকায় নাম ওঠেনি রাজ্যের ১৯ লাখ বাসিন্দার। এনিয়ে চরম উদ্বেগে রয়েছেন তালিকায় নাম না ওঠা মানুষেরা। এই ইস্যুতে ক্ষমতাসীন বিজেপির বিভিন্ন নেতা হুঁশিয়ারিমূলক কথা বলছেন। এমন অবস্থায় নাগরিক তালিকায় নাম না থাকাদের বিষয়ে উদ্বেগজনক মন্তব্য করেছেন দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ।

অমিত শাহ বলেন, নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন আসবেই। কিন্তু তার জেরে কোনও রাজ্যের নিজস্ব আইন বা জনজাতির অধিকার খর্ব হবে না। আসাম থেকে অনুপ্রবেশকারীদের তাড়ালেও তারা পাশের রাজ্যে ঢুকে বাঁচতে পারবে না। খবর আনন্দবাজারের।

গুয়াহাটিতে নেডার (নর্থ-ইস্ট ডেমোক্র্যাটিক অ্যালায়েন্স) চতুর্থ অধিবেশনে এমনই দাবি করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। অমিত শাহ জানান, সংশোধনী বিলে ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বরের তারিখ বেঁধে দেওয়া হচ্ছে। তাই নাগাড়ে বিদেশ থেকে আসা হিন্দুদের মোটেই নাগরিকত্ব দেওয়া হবে না। আট মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে এ নিয়ে বৈঠকেও মিলিত হন বিজেপির অত্যন্ত প্রভাবশালী এই নেতা।

এই প্রথম উত্তর-পূর্বে ৮ রাজ্য একই রাজনৈতিক মঞ্চের শাসনাধীন। ২০১৬ সালে যে লক্ষ্য বেঁধে নেডা জোট গড়েছিলেন তদনীন্তন বিজেপি সভাপতি অমিত, মাত্র তিন বছরের মাথায় সেই লক্ষ্য অর্জন করেছে এই জোট।

এ দিন নেডা চেয়ারম্যান হিমন্ত বিশ্বশর্মা বলেন, এনআরসিতে অনেক ভারতীয় বাদ পড়েছেন, বিদেশিদের নাম ঢুকেছে। নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলে হিন্দুদের নাগরিকত্ব দেওয়ার প্রস্তাব নিয়েও অনেক আপত্তি উঠছে। গঠনমূলক সমালোচনার মাধ্যমে, সকলের মত নিয়ে এই ব্যাপরে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

মেঘালয়ের মুখ্যমন্ত্রী কনরাড সাংমা বলেন, ‘মেঘালয়ে নিজস্ব আবাসিক সুরক্ষা আইন আছে। তিন রাজ্যে আইএলপি রয়েছে। আছে ষষ্ঠ তফশিলের সংরক্ষণ। রাজ্যের আইন ও স্থানীয় জনজাতির অধিকার খর্ব করে যদি কেন্দ্রীয় আইন চাপানো হয়, তা নিয়ে আমরা আশঙ্কায় আছি। আসমের এনআরসি থেকে বাদ পড়ারা মেঘালয়ে ঢুকতে থাকলেও বিপদ।’

একই আশঙ্কা জানান, নাগাল্যান্ড, অরুণাচল, মিজোরামের মুখ্যমন্ত্রীরাও। মিজোরামের মুখ্যমন্ত্রী জোরামথাঙ্গা বলেন, কেন্দ্র একতরফা কিছু করলে জনসংখ্যার বিন্যাসে বদল আসবে। প্রতিবাদ হবে।

উত্তরে অমিত আশ্বাস দেন, কোনো অনুপ্রবেশকারীকে আসাম থেকে পালিয়ে পাশের রাজ্যে ঢুকতে দেওয়া হবে না। ৩৭১ অনুচ্ছেদ উত্তর-পূর্বের স্থায়ী ও বিশেষ ধারা। তা বজায় থাকবেই। রাজ্যগুলিতে জনজাতিদের স্বার্থ সুরক্ষিত করতে ষষ্ঠ তফসিল ও স্থানীয় আইনে হাত পড়বে না।

২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বরকে ভিত্তি তারিখ রেখে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন আনা হবে। তারপর ভারতে ঢোকা কেউ নাগরিকত্ব পাবে না। নতুন নাগরিকত্ব পাওয়া কেউ ইনারলাইন আইনের আওতায় থাকা রাজ্যে বাড়ি কিনতে বা স্থায়ী বাসিন্দা হতে পারবে না।

মুখ্যমন্ত্রীরা জানিয়েছেন, নিজের রাজ্যে গিয়ে সকলের সঙ্গে কথা বলে ফের বৈঠকে বসবেন। সাংবাদিকদের কাছে মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী বীরেন সিংহ বলেন, মণিপুরেও তারা আসামের মতো এনআরসি চান।

আরএসএস এর বক্তব্য, আসামে এনআরসিতে কিছু ভুলভ্রান্তি আছে। সেগুলো শুধরে নিয়ে এগোনো উচিত। তবে সার্বিক ভাবে এনআরসিকে ইতিবাচক পদক্ষেপ বলেই দাবি করেছে তারা।

ঢাকা টাইমস/১০সেপ্টেম্বর/একে