পৃথিবীতে ডাইনোসর বিলুপ্তির কারণ গ্রহাণুর আঘাত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, ঢাকা টাইমস
 | প্রকাশিত : ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ১০:৪৬

ডাইনোসররা নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছিল পৃথিবীর ওপর এক বিশাল গ্রহাণুর আঘাতের পরিণামে। একদল বিজ্ঞানী সেই ঘটনাটির বিশদ বিবরণ তৈরি করেছেন সেকেন্ড-মিনিট-ঘন্টা ধরে ধরে।

পৃথিবীর বুকে এক সময় বিচরণ করত যে অতিকায় ডাইনোসররা, আজ শুধু পাওয়া যায় তাদের হাড়গোড়। কারণ, এখন থেকে প্রায় ছয় কোটি ৬০ লাখ বছর আগে এক ভয়ংকর ঘটনার পরিণতিতে তারা সবাই মারা গেছে।

গবেষকরা মনে করেন পৃথিবীতে এক বিরাট আকারের গ্রহাণুর আঘাতে যে বিস্ফোরণ ও পরিবেশগত পরিবর্তন হয়েছিল সেটাই ডাইনোসরদের নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবার কারণ। ডাইনোসরদের বিলুপ্তির পর পৃথিবীতে শুরু হয় স্তন্যপায়ী প্রাণীদের যুগ।

বিজ্ঞানীরা বলছেন, সেই গ্রহাণুটি ছিল ১২ কিলোমিটার চওড়া। সেটা এসে পড়েছিল মেক্সিকো উপসাগর তীরবর্তী ইউকাটান উপদ্বীপ এলাকায়। সেই এলাকায় তৈরি হওয়া বিশাল জ্বালামুখের ভূপ্রকৃতি এবং শিলার গঠন তন্ন তন্ন করে পরীক্ষা করে দেখেছেন টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গবেষক দল এবং সেই গ্রহাণুর আঘাতের চিহ্ন তারা খুঁজে পেয়েছেন।

গবেষকরা বলছেন, এত জোরে এটি পৃথিবীর বুকে আছড়ে পড়েছিল যে তাতে ২০০ কিলোমিটার চওড়া এবং কয়েক কিলোমিটার গভীর একটি গর্ত বা জ্বালামুখ তৈরি হয়েছিল। গর্তটির কিনারগুলো ভেতর দিকে ধসে পড়ে। এর ফলে সাগরে সৃষ্টি হয়েছিল এক ভয়াবহ সুনামি, তৈরি হয়েছিল দানবাকৃতির ঢেউ।

এই গর্তটির বড় অংশই এখন আছে সমুদ্রের তলায়- তার ওপর জমেছে ৬০০ মিটার পুরু পলির আস্তরণ। মাটির ওপর যে অংশ আছে তা চুনাপাথর দিয়ে ঢাকা। বিজ্ঞানীরা ওই এলাকাটির উপাদান পরীক্ষা করে কোন সালফার বা গন্ধকের উপস্থিতি পান নি। কিন্তু সমুদ্রের তলদেশের ওই জায়গাটির এক তৃতীয়াংশই ছিল জিপসামের তৈরি- যার অন্যতম উপাদান সালফার।

বিজ্ঞানীরা বলছেন, সেই সালফার হয়ত ওই গ্রহাণুর আঘাতজনিত বিস্ফোরণে সাগরের পানির সঙ্গে মিশে গিয়েছিল এবং তা আকাশে ছড়িয়ে পড়েছিল। তার ফলে নাটকীয়ভাবে আবহাওয়া অত্যন্ত ঠান্ডা হয়ে যায়, এবং কোন প্রাণী বা গাছপালার বেঁচে থাকা দুরূহ হয়ে ওঠে।

বিজ্ঞানীদের অন্যতম টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শন গুলিক বলেন, একশ গিগাটন (এক গিগাটন মানে হলো ১০০ কোটি টন) সালফার বায়ুমন্ডলে মিশে যাবার ফলে তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চাইতে অন্তত ২৫ ডিগ্রি নিচে নেমে যায়। তার মানে পৃথিবীর বেশির ভাগ এলাকার তাপমাত্রা তখন নেমে গিয়েছিল শূন্য ডিগ্রির নিচে।

তিনি বলেন, রক্ষণশীল হিসেবে মনে করা হয় যে ওই ঘটনায় পৃথিবীর বায়ুমন্ডলে প্রায় ৩২৫ গিগাটন সালফার ছড়িয়ে গিয়েছিল। এত ঠান্ডা আবহাওয়ায় স্তন্যপায়ী প্রাণীরা বেঁচে থাকতে পেরেছিল কিন্তু ডাইনোসররা বাঁচতে পারেনি।

ডাইনোসররা কেন সহসাই পৃথিবী থেকে নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছিল- তার সম্ভাব্য কারণ ব্যাখ্যা করে যেসব তত্ত্ব আছে, তার মধ্যে এটি বিজ্ঞানীদের মধ্যে জনপ্রিয়।

ঢাকা টাইমস/১০সেপ্টেম্বর/একে

সংবাদটি শেয়ার করুন

আন্তর্জাতিক বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

আন্তর্জাতিক এর সর্বশেষ

ইরানের হামলার প্রতিক্রিয়া জানানোর প্রয়োজন নেই: সাবেক ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী

ভারতের কাশ্মীরে নৌকাডুবে ৬ জনের প্রাণহানি, নিখোঁজ ১৫

ইসরায়েলে হামলার পর পরমাণু স্থাপনা সাময়িক বন্ধ করে ইরান

২০ বছর পর নতুন প্রধানমন্ত্রী পাচ্ছে সিঙ্গাপুর

ইসরায়েলের পাল্টা হামলার ঘোষণায় উদ্বিগ্ন ইরানিরা

সাইপ্রাসে পুলিশি অভিযানে পাঁচতলা ভবন থেকে ঝাঁপ দিয়ে বাংলাদেশি নিহত 

পাকিস্তানে ভারী বষর্ণ ও বজ্রপাতে নিহত ৩৯

ইরানে সম্ভাব্য হামলার প্রস্তুতি চূড়ান্ত করল ইসরায়েলি বিমান বাহিনী

হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্রগুলো ঠেকাতে পারেনি ইসরায়েল ও তার মিত্ররা

পপি জ্যাসপার আন্তর্জাতিক উৎসবে অনুষ্ঠিত হবে ‘ইরান ডে’

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :