ডেঙ্গু রোগী কমলেও থামছে না মৃত্যু

প্রকাশ | ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ২১:৪৫ | আপডেট: ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ২১:৪৭

আশিক আহমেদ, ঢাকাটাইমস
ফাইল ছবি

প্রতিদিন আড়াই হাজার বা তার চেয়ে বেশি মানুষের ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তির চিত্র পাল্টেছে। তবে যত মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে, সেই সংখ্যাটি এখনো উদ্বেজনক, যদিও তা জুলাই মাসের শেষ দিকের তুলনায় চার ভাগের একভাগ। তবে রোগীর সংখ্যা কমলেও মৃত্যুর সংখ্যা থামছেই না। গত ২৪ ঘণ্টাতেও দেশে দুইজনের মৃত্যুর তথ্য পাওয়া গেছে। 

এই দুটি মৃত্যু হিসাবে ধরলে ডেঙ্গুতে ১৯৯ জনের মৃত্যুর তথ্য মিলেছে। তবে হাসপাতালের তথ্য পর্যালোচনা করে জাতীয় রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা সংস্থা আইইডিসিআর মৃত্যুর সংখ্যা কম বলছে।

বুধবারের আগ পর্যন্ত ১৯৭টি মৃত্যুর তথ্য পেয়েছে আইইডিসিআর। এর মধ্যে ১০১টি মৃত্যু পর্যালোচনা করে ৬০ জনের মৃত্যু ডেঙ্গুতে বলে নিশ্চিত করেছে সংস্থাটি। বাকিদের মৃত্যু ‘অন্য কারণে’ হয়েছে বলছে তারা।

ডেঙ্গুর ভয়াবহ বিস্তারের পর থেকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইর্মাজেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের পক্ষ থেকে হাসপাতালে প্রতিদিন কত রোগী ভর্তি হয়েছেন, সে তথ্য জানানো হয়। সেখান থেকে পাঠানো তথ্য বলছে, মঙ্গলবার সকাল আটটা থেকে বুধবার সকাল পর্যন্ত সারাদেশে ৬৩৪ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন হাসপাতালে। আর ঢাকার চেয়ে মফস্বলের রোগীর পরিমাণ প্রায় দ্বিগুণ। ২৪ ঘণ্টায় রাজধানীর হাসপাতালগুলোতে যেখানে ২২১ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন, সেখানে ঢাকার বাইরে ভর্তি হয়েছেন ৪১৩ জন।

এই সময় ঢাকা এবং যশোরে একজন করে মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা গেছে আড়াই বছরের শিশু খাদিজা আক্তার। বুধবার বিকালে মৃত্যু হয়।

খাদিজার চাচা মোহাম্মদ ইব্রাহিম ঢাকা টাইমসকে জানান, ৭ সেপ্টেম্বর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয় শিশুটি। পরদিন তাকে মুগদা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে বিকাল পৌনে চারটার দিকে নেয়া হয় ঢাকা মেডিকেলের জরুরি বিভাগে। পরে নেয়া হয় আইসিইউতে। কিন্তু পৌনে পাঁচটার দিকে সবাইকে কাঁদিয়ে চলে যায় শিশুটি।

রাজধানীর কদমতলী থানার ধনিয়া নাসির উদ্দিন রোডের ৭৪৪ নম্বর বাড়িতে থাকে খাদিজার পরিবার। তার বাবার নাম ইসমাইল হোসেন। তার বাড়ি মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলায়।

একই রোগে সকালে যশোর সদর হাসপাতাল মৃত্যু হয় জাহিদা নামের এক গৃহবধূর। তিনি মনিরামপুর উপজেলার আব্দুল কাদেরের স্ত্রী।

হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক আবুল কালাম আজাদ লিটু ঢাকাটাইমসকে জানান, গত সোমবার ডেঙ্গু জ¦রে আক্রান্ত হয়ে জাহিদাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কিন্তু অবস্থার কোনো উন্নতি হচ্ছিল না। চিকিৎসকরা উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেয়ার পরামর্শ দিলেও পরিবারের আর্থিক সঙ্গতি না থাকায় তা পারেনি।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাবমতে, চলতি বছরে ১ জানুয়ারি থেকে বুধবার পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে ৭৮ হাজার ৬১৭ জন। এদের মধ্যে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছে ৭৫ হাজার ২২৫ জন।

বুধবার সকাল পর্যন্ত দেশের সরকারি বেসরকারি হাসপাতালে বর্তমানে ভর্তি তিন হাজার ১৬৫ জন। এর মধ্যে রাজধানীর ৪১টি হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা এক হাজার ৪৩৪ জন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইর্মাজেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের সহকারী পরিচালক আয়েশা আক্তার ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে এখন ১৬ ভাগ রোগী কম। গত ২৪ ঘণ্টায় আরও কম রোগী ভর্তি হয়েছে। কিছু কিছু জায়গায় যারা ভর্তি হয়েছে তারাও চিকিৎসা নিয়ে নিয়ে চলে যাচ্ছেন।’

(ঢাকাটাইমস/১১সেপ্টেম্বর/এএ/ডব্লিউবি/জেবি)