এনআরসিতে নাম নেই ১২ লাখ হিন্দুর, আসামে প্যাঁচে বিজেপি

প্রকাশ | ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ১১:৩৪

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, ঢাকা টাইমস

ভারতের আসামে চূড়ান্ত জাতীয় নাগরিক তালিকা (এনআরসি) থেকে বাদ পড়েছে প্রায় ১৯ লাখ মানুষের নাম। সারা আসাম বাঙালি যুব ছাত্র ফেডারেশনের দাবি,  এর মধ্যে বাঙালি হিন্দুর সংখ্যা ১০ থেকে ১২ লক্ষ। বাঙালি মুসলিম বাদ পড়েছেন দেড় থেকে দু’লক্ষ।

এই ঘটনায় অস্বস্তিতে বিজেপি। কারণ তারা মনে করেছিল, বাদ পড়াদের তালিকায় মূলত সংখ্যালঘুদের নাম থাকবে। কিন্তু বাস্তবে হয়েছে ঠিক উল্টো। যারা বাদ পড়েছেন, তাদের অর্ধেকের বেশি হিন্দু, গোর্খা এবং স্থানীয় আদিবাসী সমাজের লোক।

এদের নাম এনআরসি থেকে বাদ পড়ার ফলে আগামী দিনে দলের হিন্দু ভোট-ব্যাঙ্ক ধাক্কা খাবে বলে আশঙ্কা করছেন আসামের বিজেপি নেতারা। যদিও পশ্চিমবঙ্গের বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষের দাবি, ‘সরকার নাগরিকত্ব আইন সংশোধন করে হিন্দুদের নাগরিকত্ব দিয়ে দেবে’।

কিন্তু আসামের কংগ্রেস নেত্রী সুস্মিতা দেবের অভিযোগ, বিজেপি মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে। কারণ, ১৯৭১ সালের আগে যারা আসামে এসেছেন, তারা কোনভাবেই নাগরিকত্ব আইনের সুবিধে পাবেন না। তার কথায়, ‘নাগরিকত্ব বিলে ১৯৭১ সালের পরে যারা ভারতে এসেছেন, তাদের নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা বলা রয়েছে। তার আগে যারা এসেছেন, তারা ওই সুযোগ পাবেন না’।

সুস্মিতাদেবীর দাবি, এনআরসিতে বাদ পড়া বাঙালিদের একটি বড় অংশ হলফনামা দিয়ে জানিয়ে রেখেছেন যে তারা ১৯৭১ এর আগে এ দেশে এসেছেন। ফলে তাদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত রয়েই গেল। পরিস্থিতি বেগতিক বুঝে মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে সাম্প্রদায়িক মেরুকরণের রাজনীতি করছে বিজেপি।

এদিকে দেড় হাজার কোটি টাকার বেশি খরচ করে এমন ত্রুটিপূর্ণ একটি তালিকা তৈরির পিছনে কারা রয়েছে, তা খুঁজে বের করার জন্য সিবিআই তদন্ত দাবি করেছে সারা আসাম বাঙালি যুব ছাত্র ফেডারেশন। কাল দিল্লিতে হওয়া একটি আলোচনাচক্রে সংগঠনের পক্ষ থেকে আশঙ্কা প্রকাশ করে বলা হয়, ফের পরিকল্পিত ভাবে বাঙালিদের আসাম ছাড়া করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।

সংগঠনের সভাপতি উৎপল সরকার দাবি করেন, ‘অতীতে অস্ত্র দেখিয়ে আসাম থেকে বাঙালিদের তাড়ানো হয়েছিল। এবার কাগজে-কলমে নাম না তুলে ফের বাঙালিদের ভিটে থেকে উৎখাত করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে’। তার দাবি, কোনো পরিবারের বাবা-মায়ের নাম থাকলেও, ছেলের নাম এনআরসিতে নেই। বাবা-মা ভারতীয় হলেও বলা হয়েছে, ছেলে বিদেশি। বড় ভাইয়ের নাম রয়েছে। ছোটো ভাইয়ের নেই। কেন, কোনো যুক্তি নেই। উৎপলবাবুর কথায়, ‘জনগণের টাকায় বাঙালি তাড়ানোর পিছনে কারা রয়েছে তা সিবিআইয়ের মাধ্যমে খতিয়ে দেখা হোক’। একই সঙ্গে সংগঠনের আশ্বাস, নাম বাদ পড়া বাঙালি পরিবারদের প্রয়োজনে আইনি সাহায্য দেবে তারা।

ঢাকা টাইমস/১২সেপ্টেম্বর/একে