কেন স্যার বলতে হবে?

আশিক আহমেদ
| আপডেট : ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ১৬:০২ | প্রকাশিত : ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০৮:৩৫

‘স্যার’ না ডাকায় এক সরকারি কর্মকর্তা সাংবাদিদেরকে অফিস থেকে বের করে দেওয়ার সমালোচনা করেছেন সাবেক দুজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা। তারা বলছেন, এই সম্বোধন শোনার আকাঙক্ষা ঔপনিবেশিক মানসিকতা। অফিসের কোনো কর্মকর্তাকে বাইরের কাউকে কেন স্যার ডাকতে হবে, সে প্রশ্নও তুলেছেন তারা।

সম্প্রতি যশোরের অভয়নগর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা আবদুস সোবহান তার কার্যালয় থেকে চারজন সাংবাদিককে বের করে দিয়েছেন। গণমাধ্যম কর্মীরা জানিয়েছেন, ‘স্যার’ না বলে ‘ভাই’ বলায় ক্ষিপ্ত হয়েছেন ওই কর্মকর্তা। গত সোমবার এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় আগামী রবিবার মানববন্ধনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন স্থানীয় সাংবাদিকরা।

সাবেক সচিব শফিক আলম মেহেদী ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘এটা ঔপনিবেশিক মানসিকতা। একটি স্বাধীন দেশের সরকারি কর্মকর্তাদের এমন মানসিকতা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। আমাদের মানসিকতা পরিবর্তন প্রয়োজন। আমরাও চাকরি করেছি কখনো এমন প্রত্যাশা করিনি।’

সাবেক মহা হিসাব নিরীক্ষক মাসুদ আহমেদ বলেন, ‘কাউকে স্যার বলার জন্য জোর করা যাবে না। কারণ তিনি তো আমার অফিসের অধীন কেউ নন। কেউ যদি সম্মান করে স্যার বলেন তো বলবেন, না বললেও কিছুই বলা নেই।’

পশ্চিমা বিশ্বে সরকারি বা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে সেবা নিতে গেলে সেখানকার কর্মীরাই সাধারণকে ‘স্যার’ সম্বোধন করে জানতে চান, কী উপকার করতে পারেন তারা। কিন্তু বাংলাদেশে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোতে এটি কখনো দেখা যায় না। জনহণকে স্যার ডাকতে পুলিশকে নির্দেশনা দিয়েও তা করা যায়নি।

অভয়নগরের ঘটনাটিতে প্রথম ভুক্তভোগী হন ‘দৈনিক খুলনা অঞ্চল’ পত্রিকার অভয়নগর প্রতিনিধি রিপানুল ইসলাম। ঢাকা টাইমসকে তিনি বলেন, ‘অভয়নগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাসহ অনেক কর্মকর্তা নিয়মিত অফিসে আসেন না। গত সোমবার সকাল ১০টায় ওই অফিসে গিয়ে কৃষি কর্মকর্তাকে না পেয়ে কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা আবদুস সোবহানের অফিসে যাই। আমার আগে ছিলেন আতিয়ার ভাই। সেখানে গিয়ে আতিয়ার ভাই দেখতে পান আবদুস সোবাহান দুজন মহিলাকে নিয়ে খোশগল্প করছেন। আতিয়ার তাকে ভাই উল্লেখ করে কৃষি কর্মকর্তা কোথায় আছেন জানতে চান। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তিনি আমাদের দিকে তেড়ে আসেন। এরপর অফিসের পিওনকে ডাকাডাকি করে আমাদের বের করে দিতে বলেন।’

‘এ ঘটনার পর দৈনিক জনতার অভয়নগর প্রতিনিধি কামরুল ইসলাম ও দৈনিক খুলনা টাইমসের অভয়নগর প্রতিনিধি শেখ জাকারিয়া রহমান বিষয়টি জানতে ওই কর্মকর্তার কাছে যান। তারাই ওই কর্মকর্তাকে ভাই বললে তাদেরও অফিস থেকে বের করে দেওয়া হয়। এ সময় কৃষি কর্মকর্তা বলেন, ‘আমি একজন বিসিএস ক্যাডার, আমার সঙ্গে কীভাবে কথা বলতে হয় জানেন না?’

সাংবাদিক রিপানুল ইসলাম বলেন, ‘এ ঘটনাটি আমরা যশোরের জেলা কৃষি কর্মকর্তাকে জানিয়েছি। এর যদি কোনো সুরাহা না হয় তাহলে আমরা আগামী রবিবার মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভা করব।’

অভয়নগর উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা গোলাম ছমাদানী ঢাকা টাইমসকে বলেছেন, এ ঘটনা আমরা যশোরের উপপরিচালকে জানিয়েছি। আর সাংবাদিকের সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে। এটা আসলে ছিল ভুল বোঝাবুঝি। তাদের সাথে আমাদের মীমাংসা হয়ে গেছে।’

এ ব্যাপারে কথা বলতে অভয়নগর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা আবদুস সোবহানের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি সেটি রিসিভ করেননি।

সংবাদটি শেয়ার করুন

জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

জাতীয় এর সর্বশেষ

বাংলাদেশের সমৃদ্ধির সহায়তায় দৃঢ়ভাবে অঙ্গীকারবদ্ধ যুক্তরাষ্ট্র: পিটার হাস

ভোজ্যতেলে পূর্বের দামে ফিরে যাওয়ার সুযোগ নেই: বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী

সমৃদ্ধিতে ভারত ও পাকিস্তানের চেয়ে এগিয়ে বাংলাদেশ

সারাদেশে তাপপ্রবাহ, গরমের দাপট কমবে কবে? কী বলছে আবহাওয়া দপ্তর?

রহস্যে ঘেরা মুক্তিপণকাণ্ড!

সারাদেশে রেলসেবা ছড়িয়ে দিতে বিশেষ প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে: রেলমন্ত্রী

‘ন্যাশনাল ব্যাংকের পর আপাতত একীভূতকরণ প্রস্তাব আর নয়’

ধর্ষণের দায়ে আ.লীগ নেতা বড় মনিরকে দল থেকে অব্যাহতি

শেখ হাসিনার দেশ পরিচালনার যাত্রা মসৃণ

পরিবেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণে মানুষের প্রত্যাশা পূরণ করতে হবে: পরিবেশমন্ত্রী

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :