নর্দমা নয় এটি রাস্তা

সাইফুল ইসলাম, নাটোর প্রতিনিধি
 | প্রকাশিত : ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ১৩:০৩

‘কেন যে বাবায় বিয়ে দিল এই গ্রামে! আগে জানলে বিয়েই বইতাম না। ভাই এই রাস্তার কথা আর কি কমু, ডেলিভারি রোগীর যে কি কষ্ট? মাইয়া মানুষ হয়ে এই গ্রামে বিয়ে বইলেই বুঝতে পারতেন। আমার যখন প্রসব বেদনা উঠছিল তখন এই কাদামাটি মাড়িয়ে হাসপাতালে যেতে হইছিল।’

কথাগুলো বলছিলেন নাটোরের সিংড়া উপজেলার রামানন্দ খাজুরিয়া ইউনিয়নের বালাহার গ্রামের গৃহবধূ সাথী বেগম।

গত বুধবার সকাল ১১টায় সোয়াইড় কমিউনিটি ক্লিনিকে চিকিৎসা নিয়ে তিন মাসের শিশুকে নিয়ে কাঁদাপানি মাড়িয়ে বাড়ি ফেরার সময় এফিরছিলেন সাথী। এ সময় গ্রামের রাস্তা নিয়ে এমন কষ্টের কথা জানান তিনি। শুরু সাথীই নন, সোয়াইড়-বালাহার গ্রামে শত শত মহিলাও এমন কষ্টের কথা জানান।

জানা যায়, উপজেলার সোয়াইড়-বালাহার গ্রামের দেড় কিলোমিটার অংশ কাচা। বর্ষা মৌসুমসহ বছরের অর্ধেক সময়ই এই রাস্তায় জমে থাকে কাদাপানি। উপায় না পেয়ে কাদাপানি মাড়িয়েই প্রতিদিন অসুস্থ রোগী, শিক্ষার্থীসহ শত শত সাধারণ মানুষকে যাতায়াত করতে হয়। বিশেষ করে গর্ভবতী নারী ও শিশু শিক্ষার্থীদের চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়।

সোয়াইড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থী রিয়া মনি ও সুমি খাতুন বলেন, কাদায় পিছলে অনেক সময় বই-খাতা নষ্ট হয়ে যায়। রাস্তার মাটি পিচ্ছিল হওয়ায় পড়ে যাওয়া ভয়ে অনেক সময় আমরা স্কুলে যাই না।

স্থানীয় পরিবেশ কর্মী শাহেদ আলী বলেন, সোয়াইড়-বালাহার গ্রামটি খাজুরা ইউনিয়নের মধ্যে সবচেয়ে বড় গ্রাম। এই গ্রাম থেকে সিংড়া শহর বা বিভিন্ন স্কুল ও কলেজে যেতে একটি মাত্র কাচা রাস্তা। প্রতিদিন সহস্রাধিক মানুষকে কাদাপানি ডিঙিয়ে যাতায়াত করতে হয়। এলাকাবাসীর দীর্ঘ দিনের দাবি রাস্তাটি যেন চলাচলের উপযোগী করা হয়।

স্থানীয় ইউপি সদস্য নাজিম উদ্দিন ডালিম বলেন, কাদাপানির কারণে মানুষের চলাচল করতে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। বিশেষ করে অসুস্থ রোগী ও শিক্ষার্থীদের কষ্টটা হয় বেশি। পরিষদের সমন্বয় মিটিংয়ে রাস্তাটির বর্তমান অবস্থা উপস্থাপন করা হয়েছে।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান তপন কুমার সরকার বলেন, কাবিখা প্রকল্পের আওতায় ২০১৭ সালে মাটি কেটে রাস্তাটি সংস্কার করা হয়েছিল। পরে তা ভেঙে নষ্ট হয়ে গেছে। এখানে পরিকল্পিতভাবে কাজ করা দরকার। কারণ রাস্তার অবস্থা এতটাই খারাপ যে, পরিকল্পনা না থাকলে রাস্তা কোনো অবস্থাতেই টেকসই হবে না। আর এজন্য বিশেষ বরাদ্দ দরকার বলে মনে করেন তিনি।

ঢাকাটাইমস/১৩সেপ্টেম্বর/প্রতিনিধি/এমআর

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :