মৃত্যুফাঁদ কুমিল্লার বানাশুয়া রেলব্রিজ

প্রকাশ | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০৮:৫৫

মাসুদ আলম, কুমিল্লা

কুমিল্লার বানাশুয়া রেল ব্রিজ যেন মৃত্যুফাঁদ হয়ে উঠছে। গেল আগস্টের শেষের দিকে পরপর চারজনের মৃত্যু হয়েছে এই ব্রিজ এলাকায়। এছাড়া কয়েকটি পরিবহনও দুর্ঘটনার শিকার হয়। ব্রিজের পাশে ওয়াকওয়ে না থাকায় আশপাশ এলাকায় কফি শপ গড়ে উঠে ভিড় বৃদ্ধি এখানে দুর্ঘটনা বৃদ্ধির কারণ বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

রেলওয়ে ও রেল পুলিশের সূত্র জানায়, বিভিন্ন কারণে এখানে দুর্ঘটনা বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিশেষ করে রেল ব্রিজটির আশপাশে গোমতী নদীর তীরে কফি শপ গড়ে উঠেছে। এখানে মানুষের ভিড় হয়। এসব মানুষ কেউ সময় বাঁচাতে, কেউ শখ কওে রেল ব্রিজ পাড়ি দেয়। এছাড়া ব্রিজের দুই পাশে কোনো ওয়াকওয়ে নেই। ট্রেন এলে একপাশে যাওয়ারও সুযোগ নেই।

এদিকে ব্রিজের দুই মাথায় দুইটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক রয়েছে। সড়কের সামনে নেই অনুমোদিত রেলগেইট। এছাড়া ব্রিজের দক্ষিণ দিকটি ৪৫ ডিগ্রি বাঁক রয়েছে। লাইনের পাশে গাছ ও ঝোপঝাড় থাকায় ট্রেন আসলে দেখার সুযোগ নেই। কুমিল্লা রেলস্টেশন দুই কিলোমিটার দূরে হওয়ায় ট্রেনের গতিও বেশি থাকে।

গত ২৫ আগস্ট বানাশুয়া রেল ব্রিজের নিচে গোমতী নদী থেকে শুভ বিকাশ চাকমা নামে এক বৌদ্ধ ভিক্ষুর লাশ উদ্ধার করা হয়। তিনি খাগড়াছড়ি সদর উপজেলার ভিটিতলা এলাকার ভারত চন্দ্র চাকমার ছেলে। ট্রেনের ধাক্কা লেগে রেল ব্রিজ থেকে পড়ে তিনি নিহত হয়েছেন বলে ধারনা।

তার একদিন আগে ২৩ আগস্ট এখানে ট্রেনে কাটা পড়ে জেলার সদর উপজেলার শাসনগাছা এলাকার মনিরুল হকের ছেলে স্বপ্নীল হক আদিত্য এবং ধর্মপুর এলাকার সুবল রায়ের মেয়ে সেতু রায় নিহত হন।

কুমিল্লা রেলওয়ে ফাঁড়ির ইনচার্জ উপ-পরিদর্শক মিজবাহুল আলম চৌধুরী জানান, এখানে দুর্ঘটনা আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। এবিষয়ে রেলওয়ে জেলা চট্টগ্রামের পুলিশ সুপার বরাবর বিভিন্ন কারণ উল্লেখ করে চিঠি পাঠিয়েছি। সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করলে দুর্ঘটনা কমবে বলে তিনি জানান।

রেলওয়ে কুমিল্লার ঊর্ধ্বতন উপ-সহকারী প্রকৌশলী (পথ) লিয়াকত আলী মজুমদার বলেন, ‘রেল লাইন ও ব্রিজে হাঁটা-চলা বেআইনি। কিন্তু বাজার, আবাসস্থল সবকিছু রেললাইনের পাশে করা হচ্ছে। যার কারণে দুর্ঘটনা বাড়ছে।’

‘বানাশুয়া রেল ব্রিজের স্থলে নতুন ব্রিজ হবে। সেখানে ব্রিজের পাশে ওয়াকওয়ে থাকবে। এটি হয়ে গেলে দুর্ঘটনা কমবে।’

ঢাকাটাইমস/১৫সেপ্টেম্বর/প্রতিনিধি/ডিএম