‘সংগ্রাম নয় ভাগ্য আমার সহায় ছিল’

প্রকাশ | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ১৭:২৪ | আপডেট: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ১৭:৪৫

বিনোদন প্রতিবেদক

অনিমেষ আইচ। একাধারে নাট্যনির্মাতা, চলচ্চিত্র পরিচালক এবং লেখক। তবে পরিচালক হিসেবে সমধিক পরিচিত। দিয়েছেন শিল্পনির্দেশনাও। ‘গেরিলা’ ছবির জন্য সেরা শিল্পনির্দেশক হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার জিতেছেন। অভিনয়ও করেন প্রায় নিয়মিত। তবে অভিনয়টা করেন অভিনয়ের বোধটা নিজের মধ্যে জারি রাখার জন্য। এসবের পাশাপাশি এখন আবার শুরু করেছেন ইউটিউব চ্যানেল। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে তার পথচলা, কাজ আর ভবিষ্যৎ ভাবনার কথা তুলে ধরেন অনিমেষ আইচ।

আপনার কাজ সম্পর্কে কিছু জেনে নিই আগে।

ভাস্কর্যের ওপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলায় পড়াশোনা করেছি। পাশাপাশি প্রাচ্যনাট নামে একটি দলের সঙ্গে থিয়েটার করেছি। তিনটি সিনেমা এবং কিছু নাটক নির্মাণ করেছি। এখনো এই দুটা নিয়েই কাজ করছি। পাশাপাশি উপন্যাস লিখছি, যার দুটি ইতোমধ্যে প্রকাশ হয়েছে। এ ছাড়া মাঝে মাঝে ছোটগল্পও লিখি।

আপনার কেরিয়ারের প্রথম কাজ কোনটি?

আমার প্রথম কাজ ছিল ‘কুফা’ নামে একটি টেলিভিশন নাটক। ২০০৩ সালে এটি প্রচার হয়েছিল। পরবর্তী সময়ে নাটকটি দর্শকদের মধ্যে যথেষ্ট সাড়া ফেলেছিল এবং এটার জন্য পুরস্কারও জিতেছিলাম।

সিনেমা পরিচালনা শুরুর ক্ষেত্রে কোন জিনিসটা আপনাকে অনুপ্রেরণা দিয়েছিল?

অনেক আগে থেকেই ছবি আঁকি। এ ছাড়া একটা থিয়েটারের সঙ্গে যুক্ত ছিলাম। এই জিনিসগুলো আমার কেরিয়ারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। পাশাপাশি নির্মাতা হিসেবে আমার অনুপ্রেরণার উৎস হলো ‘জলছবি’ নামের একটি জায়গা। সেখানে মোস্তফা সরয়ার ফারুকী, তারেক শাহরিয়ার, নুরুল আলম আতিকের মতো চলচ্চিত্র নির্মাতারা বসে আড্ডা দেন, চলচ্চিত্র নির্মাণ বিষয়ে কথা বলেন। আসল অনুপ্রেরণাটা সেখান থেকেই পেয়েছি।

অভিনয় যাত্রা সম্পর্কে কিছু জানতে চাই।

আমি পেশাদার অভিনেতা নই। তবে মাঝে মাঝে ছোট চরিত্রে অভিনয় করি। আমি শুধু এতটুকু অভিনয় করি অভিনয়ের অনুভূতিটা পাওয়ার জন্য। আমি জানতে চাই, অভিনেতারা ক্যামেরার সামনে দাঁড়ালে তারা কেমন বোধ করেন। শেষ আমি ‘দেবী’ ছবিতে অভিনয় করেছি। আমার মনে হয়, অভিনয়ের ক্ষেত্রে আমি স্বচ্ছ, কিন্তু কখনো এটাকে অর্জন করতে পারব না।

কেরিয়ার গড়তে গিয়ে আপনার সংগ্রামটা কেমন ছিল?

অভিনয় জগতে সংগ্রাম করে কেরিয়ার গড়া একটি স্বাভাবিক ব্যাপার। প্রত্যেক অভিনয়শিল্পী ও নির্মাতাকেই এমন সংগ্রাম করতে হয়। তবে আমি এখনো নিজেকে ভাগ্যবান মনে করি যে, আমার প্রথম সৃষ্টি দর্শকদের মধ্যে বেশ সাড়া ফেলেছিল। খুব অল্প সময়ের মধ্যেই কাজের স্বীকৃতি পেয়েছিলাম। তাই বলতে পারি, খুব বেশি সংগ্রাম আমাকে করতে হয়নি। যেহেতু ভাগ্য আমার সহায় ছিল।

আপনার সব কাজই কি সমান আনন্দ দিয়েছে আপনাকে? কিংবা বিশেষ কোনো একটি কাজ?

এ পর্যন্ত যা কিছু বানিয়েছি, সবকিছুতেই আনন্দ পেয়েছি। তার মধ্যে ‘হলুদ’ নামে একটি নাটক নির্মাণের কথা বলব। সাত-আট বছর আগে নাটকটি প্রকাশ হয়েছিল। চেষ্টা করেছিলাম নাটকের গল্পটা একটু ভিন্নভাবে তুলে ধরার। তাই ‘হলুদ’ নির্মাণের অভিজ্ঞতাটা একটু ব্যতিক্রম ছিল।

এখন কোন কাজগুলো নিয়ে ব্যস্ততা বেশি?

বর্তমানে একটা সিনেমা নিয়ে কাজ করছি। যদিও এর শুটিং শুরু হয়নি এখনো। বাচ্চাদের জন্য একটি সিরিজ নিয়েও কাজ করছি। সেটির স্ক্রিপ্ট লেখা হচ্ছে। পাশাপাশি নিজের ইউটিউব চ্যানেল শুরু করেছি। সেটার ব্র্যান্ডিংয়ের জন্যও প্রচুর খাটতে হচ্ছে।

টিভি চ্যানেল, ইউটিউব চ্যানেল- এখন তো নানা প্ল্যাটফরম। অনেক নির্মাতা আসছে। কী বলবেন তাদের?

গল্প বলার ক্ষেত্রে সৎ থাকতে বলব সবাইকে। অন্যের স্টাইল নকল করা থেকে দূরে থাকতে হবে। সম্মান ও শ্রদ্ধা অর্জন এবং কারও অনুপ্রেরণা হওয়ার ক্ষেত্রে নিজের দিক থেকে সঠিক থাকতে হবে।

ফেসবুক-ইউটিউবের এই যুগে দর্শক-প্রতিক্রিয়া সরাসরি জানা যাচ্ছে। এর ভালো-মন্দ নিয়ে বলুন।

সবাইকে একটা অনুরোধ করতে চাই, আপনারা খারাপ কিছু প্রচারের পরিবর্তে ভালো কিছু দেখলে সেটা প্রচার করুন। তাতে যিনি সেটা নির্মাণ করেন বা সৃষ্টি করেন, তিনি উৎসাহ পাবেন।

(ঢাকাটাইমস/১৫ সেপ্টেম্বর/এএইচ/মোআ)