শ্রমিকদের কল্যাণে কাজ করায় চসিক মেয়রকে সংবর্ধনা

প্রকাশ | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ১৮:৫৩

চট্টগ্রাম ব্যুরো, ঢাকাটাইমস

চট্টগ্রাম সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন দায়িত্ব নেওয়ার পর সিটি করপোরেশনে কর্মরত অস্থায়ী কর্মচারী কর্মকর্তাদের একের পর এক দাবি পূরণ করে চলেছেন। স্থায়ীদের মতো অস্থায়ীরা সমান পরিশ্রম ও দায়িত্ব পালন করলেও তারা দৈনিক ভিত্তিক নিম্ন বেতনে জীবন নির্বাহ করতেন। এতে করে অস্থায়ীদের মাঝে ক্ষোভ, হতাশা বিরাজ করত। অবস্থা এমনও দাঁড়িয়েছে অনেক অস্থায়ী কর্মকর্তা-কর্মচারীরা একপর্যায়ে করপোরেশনের চাকরি থেকে অব্যাহতি দিয়ে চলে গেছেন।

১৯৮৮ সালের অর্গানোগ্রামের প্রবিধানমালা অনুমোদন না হওয়ায় স্থায়ীকরণেও নানামুখী জটিলতা সৃষ্টি হয়। মেয়র নাছিরই প্রথম অস্থায়ী কর্মকর্তা কর্মচারীদের দুঃখ কষ্ট লাঘবে আন্তরিক হন। তিনি উপলব্ধি করেন স্থায়ীদের মত অস্থায়ীরাও সমান দায়িত্ব পালন করেন। তবে বেতন ভাতা বা বিভিন্ন সুবিধা প্রাপ্তির ক্ষেত্রে অস্থায়ীরা আইনি বৈষম্যের শিকার।

মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন দায়িত্ব গ্রহণের প্রথম সময়েই অস্থায়ীদের বেতন প্রায় ৩৫% বৃদ্ধি করেন। পরবর্তীতে স্থায়ীদের সাথে বোনাস প্রদানের সিদ্ধান্তও প্রদান করেন। এতে করে হতাশ ক্ষুব্ধ অস্থায়ী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে প্রাণ চঞ্চলতা ফিরে আসে। করপোরেশনের কাজে ফিরে আসে দায়িত্ব প্রবণতা।

এদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সকল সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারীদের যখন উৎসব ভাতা প্রদানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন তখন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের স্থায়ী কর্মকর্তা কর্মচারীরাও এই সুবিধার আওতায় আসেন। কিন্তু আইনিভাবে অস্থায়ীরা এই সুবিধা পাচ্ছিলেন না। একদিন মেয়র নাছির স্বপ্রণোদিত হয়ে করপোরেশনের সকল অস্থায়ী কর্মকর্তা কর্মচারীদেরকে ডাকেন। তিনি তাদের দুঃখের কথা শোনেন।

সরকারিভাবে বেতন বৃদ্ধি পাওয়ায় মেয়র নাছিরকে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মাসিক ৯ কোটি টাকা ব্যয় থেকে ২০ কোটি টাকা ব্যয়ের বোঝা কাঁধে নিতে হয়। আবার অন্যদিকে, প্রকল্প কাজ বাবদ ঠিকাদারদের বিগত সময়ের প্রায় ২৫০ কোটি টাকা বকেয়ার বোঝা। এমন অবস্থায় অস্থায়ী কর্মকর্তা কর্মচারীদের জন্য সিটি মেয়র আরেকটি যুগান্তকারী উদ্যোগ নেন। তিনি স্থায়ীদের মতো অস্থায়ী কর্মকর্তা কর্মচারীদেরও উৎসব বোনাস প্রদানের সিদ্ধান্ত নেন। তিনি ২০% বৈশাখী ভাতা প্রদান করেন। করপোরেশনের বর্ধিত বিশাল অংকের ব্যয়ভারের মধ্যেও শ্রমিক অন্তপ্রাণ মেয়র নাছির অস্থায়ীদের দাবি পূরণে কখনো দ্বিমত করেননি। নানামুখী চাপের মধ্যেও অস্থায়ীদের দাবি পূরণে তিনি সচেষ্ট ছিলেন।

এবার দায়িত্ব পালনের সাড়ে চার বছরের মাথায় তিনি আরেকটি উদ্যোগ নিয়েছেন। অস্থায়ী কর্মকর্তা কর্মচারীদের জন্য আরো এক দফা বেতন বৃদ্ধি করেছেন। সবমিলিয়ে মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন এই পর্যন্ত অস্থায়ীদের প্রায় ৪৫% বেতন বৃদ্ধি করেছেন।

অস্থায়ী কর্মকর্তা কর্মচারীদের জন্য সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের আন্তরিকতার স্বীকৃতি স্বরূপ চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন শ্রমিক কর্মচারী লীগ সিবিএ মেয়রকে সংবর্ধনা প্রদান করেছে।

রবিবার চট্টগ্রাম আউটার স্টেডিয়ামের সবুজ মঞ্চে আয়োজিত সভায় চসিক শ্রমিক কর্মচারী লীগ সিবিএ মেয়রকে লাল গোলাপ সংবর্ধনা প্রদান করে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন নগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী।

বক্তব্যে তিনি বলেন, শ্রমিকদের কল্যাণে আওয়ামী লীগ সরকার যা করেছে কোনো সরকারই আর তা করেননি। আমার বাবা মরহুম জহুর আহমদ চৌধুরী জাতির জনকের নেতৃত্বে এই চট্টগ্রামের শ্রমিকদেরকে ঐক্যবদ্ধ করেছিলেন। তার সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শ্রমিকদের জন্য নানামুখী উদ্যোগ বাস্তবায়ন করে চলেছেন। নগর উন্নয়নে তিনি চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের দায়িত্বশীল কর্তব্য পালনের আহবান জানান।

 

সংবর্ধিত অতিথির বক্তব্যে মেয়র তার দায়িত্ব পালনকালীন সময়ে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের অস্থায়ী কর্মকর্তা কর্মচারীদের জন্য গৃহীত পদক্ষেপসমূহ বিস্তারিত তুলে ধরেন।

চসিক সিবিএ সভাপতি ফরিদ আহমদের সভাপতিত্বে সংবর্ধনায় কেন্দ্রীয় শ্রমিক লীগ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব শফর আলী, চসিক প্রধান নির্বাহি কর্মকর্তা মো. সামসুদ্দোহা, কাউন্সিলর হাসান মুরাদ বিপ্লব, গিয়াস উদ্দিন, শৈবাল দাশ সুমন, সচিব আবু শাহেদ চৌধুরী, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মুফিদুল ইসলাম, প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তা সুমন বড়ুয়া, মেয়রের একান্ত সচিব আবুল হাশেম, প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তা শফিকুল মান্নান সিদ্দিকী, পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা মোরশেদুল আলম, চসিক সিবিএ'র পক্ষে জাহেদুল আলম চৌধুরী, মো ইয়াসিন, রূপন কান্তি দাশ,রতন দত্ত, তারেক সুলতান, আবুল মাসুদ, কল্লোল দাশ, রতন চৌধুরী, মো ফরিদ, মো মোস্তফা, ওয়ালিদুল আজিম সোহেল, সুভাষ চক্রবর্তী, দিলাবর, যোগেশ, দিলীপ, কৃষ্ণাসহ অন্যন্য কর্মচারীবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।

ঢাকাটাইমস/১৫সেপ্টেম্বর/ইএস