ধানের লোকসান পোষাতে মাল্টা চাষে ঝুঁকছেন চাষিরা

সুকুমল কুমার প্রামানিক, রাণীনগর (নওগাঁ)
 | প্রকাশিত : ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০৮:২৬

দেশের উত্তরাঞ্চলের খাদ্যভাণ্ডার হিসেবে পরিচিত নওগাঁর রাণীনগর উপজেলা। ধান চাষে লোকসান গুনতে গুনতে এখন এখানকার চাষিরা ঝুঁকছে মাল্টা চাষে। বিদেশি এই ফলটি এখন রাণীনগর উপজেলার বিভিন্ন স্থানে চাষ হচ্ছে। এই ফল চাষে চাষিরা বেশ লাভবান হচ্ছেন বলে জানিয়েছেন।

ধানের দাম না থাকায় উপজেলার কৃষকরা লাগাতার লোকসান দিয়ে আসছিলেন। যার কারণে এই অঞ্চলের মানুষ ধানের পাশাপাশি অধিক লাভজনক মাল্টা চাষের দিকে দিন দিন ঝুঁকছেন। প্রথমে হাতেগোনা কয়েকজন এই ফলের চাষ করলেও এখন তাদের দেখাদেখি অনেকেই এই ফলটি চাষ করছেন।

বর্তমানে ছয় হেক্টর জমিতে উপজেলা কৃষি অফিসের সার্বিক সহযোগিতায় ভার্মিক পদ্ধতিতে বারি-১ জাতের মাল্টার বাগান তৈরি করা হয়েছে। ইতিমধ্যে এসব বাগানে মাল্টার গাছে থোকায় থোকায় মাল্টা এসেছে। এই বাগানগুলো দেখার জন্য প্রতিদিনই অন্যান্য এলাকার মানুষেরা ভিড় করছেন। দো-আঁশ ও বেলে দো-আঁশ মাটিতে ভালো জাতের মাল্টা গাছের চারা রোপণ করতে পারলে এবং নিবিড় পরিচর্যায় মাল্টার ফলন ভালো হয় বলে জানা গেছে। এই অঞ্চলে উৎপাদিত মাল্টার স্বাদ ও গুণগত মানও খুবই ভালো।

রাণীনগর উপজেলার খট্টেশ্বর গ্রামের মাল্টা চাষি সরফরাজ খাঁন বলেন, তিনি ১৫ শতাংশ পতিত জমিতে কৃষি বিভাগের পরামর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে দুই বছর আগে তাদের সরবরাহকৃত মাল্টা চারা নিয়ে তৈরি করেন মাল্টা বাগান। বর্তমানে তার বাগানের প্রতিটি মাল্টা গাছে থোকায় থোকায় সবুজ মাল্টা ঝুলছে। গাছ লাগানোর ১৮ মাস পরই গাছে মাল্টা ধরতে শুরু করেছে। স্বাদে ও গুণে বিদেশি মাল্টার মতোই। বর্তমানে তিনি প্রতি কেজি মাল্টা ৭০-৮০ টাকা দরে কেজিতে বিক্রি করছেন। চলতি মৌসুমে প্রতিটি গাছে প্রায় ১০ কেজি করে মাল্টা এসেছে। আগামী বছরে প্রতিটি গাছে ৭০-৮০ কেজি মাল্টা পাওয়া যাবে বলে তিনি জানান। তিনি আগামীতে এই বাগানের পরিসর আরও বাড়াবেন বলে জানান।

প্রতিদিনই তার মাল্টার বাগান দেখতে বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকজন আসছে। তারাও এই রকম বাগান তৈরি করার আশা প্রকাশ করছে। প্রথম বছরেই তিনি মাল্টা চাষে অভাবনীয় সফলতা পেয়েছেন বলে জানান তিনি।

সরফরাজ খাঁনের মাল্টা বাগান দেখতে আসা দর্শনার্থী রফিকুল ইসলাম, জব্বার মিয়াসহ অনেকেই ঢাকা টাইমসকে বলেন, মাল্টা চাষে সরফরাজ খাঁন একজন মডেল। তার বাগানে গাছে মাল্টা ফল দেখে মন ভরে গেছে। তিনি দেখিয়ে দিলেন বিদেশি ফলও আমাদের এলাকায় চাষ করা সম্ভব। এটি নাকি অনেক লাভজনক একটি ফসল। তাই আমরাও আগামীতে মাল্টার বাগান তৈরি করবো।

এ ব্যাপারে রাণীনগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম ঢাকা টাইমসকে বলেন, এই উপজেলার মাটি ও আবহাওয়া মাল্টা চাষের জন্য খুবই পজেটিভ। মাল্টা পুষ্টিকর ও রসালো একটি ফল। বাজারে মাল্টার চাহিদা বেশি থাকায় দামও ভালো রয়েছে। তাই মাল্টা চাষিরা দাম ভালো পেয়ে অনেক খুশি। ধানে লোকসান হওয়ার কারণে এলাকার মানুষেরা দিন দিন অধিক লাভজনক ফসল মাল্টা চাষের দিকে বেশি ঝুঁকছেন। যারা এই ধরনের বাগান তৈরি করবেন তাদের জন্য আমাদের সার্বিক সহযোগিতা ও পরামর্শ দেওয়ার জন্য সব সময় আমার অফিসের দুয়ার খোলা আছে।

ঢাকাটাইমস/১৬সেপ্টেম্বর/প্রতিনিধি/এমআর

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :