বশেমুরবিপ্রবি উপাচার্যের অপসারণে মুক্তিযোদ্ধা মঞ্চের আল্টিমেটাম
ফেইসুবকে মতামত প্রকাশের কারণে ছয় শিক্ষার্থীকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্বববিদ্যালয় উপাচার্যের অপসারণে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ। অন্যথায় ভিসির কুশপুতুল দাহ করাসহ শিক্ষা মন্ত্রণালয় ঘেরাও করার ঘোষণা দিয়েছে সংগঠনটি ।
সোমবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এক মানববন্ধনে এসব ঘোষণা দেয় সংগঠনটি।
এ সময় তারা বহিষ্কৃত শিক্ষার্থী ফাতেমাতুজ জিনিয়ার ছাত্রত্ব ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি জানান।
মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের আহ্বায়ক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. আ ক ম জামাল উদ্দীনের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে শতাধিক শিক্ষার্থী অংশ নেন।
মানববন্ধনে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল বলেন, প্রত্যেক শিক্ষার্থীর মত প্রকাশের স্বাধীনতা রয়েছে। স্বাধীনভাবে কথা বলার অধিকার রয়েছে। বঙ্গবন্ধু সারাজীবন স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছেন আর সেই মহান নেতার নামে প্রতিষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ে এই উপাচার্য স্বৈরশাসন কায়েম করেছেন। আমরা এটি হতে দিতে পারি না। তিনি বশেমুরবিপ্রবি'র উপাচার্যকে উদ্দেশ্যে করে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা মুক্তচিন্তা চর্চা করবে। আর আপনি তাদের সেই মুক্ত চিন্তাকে প্রতিহত করছেন। এ সময় তিনি তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ে না থেকে আশ্রম বা ক্যান্টেনমেন্ট পরিচালনারও পরামর্শ দেন।
মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের আহবায়ক অধ্যাপক ড. আ ক ম জামাল উদ্দীন বলেন, উপাচার্য খন্দকার নাসির উদ্দীন স্বেচ্ছাচারী ও স্বৈরাচারী মনোভাব নিয়ে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের পবিত্র ভূমিতে স্বৈরাচারী শাসন কায়েম করেছে। বঙ্গবন্ধুর পবিত্র ভূমিতে আমরা এই কুলাঙ্গার ভিসিকে থাকতে দেব না। প্রয়োজন হলে গোপালগঞ্জ গিয়ে তার প্রশাসন ঘেরাও করব। এই সময় তিনি শিক্ষামন্ত্রণালয় এবং বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন ঘুমিয়ে আছে কিনা বলেও প্রশ্ন রাখেন।
তিনি আরো বলেন, ‘এই উপাচার্য ছাত্রজীবনে স্বাধীনতাবিরোধী সংগঠনের সাথে জড়িত ছিলেন। কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদলের নেতা ছিলেন। যুক্তরাজ্যে তিনি ছাত্রদলের সংগঠক ছিলেন। শুধু মাত্র আত্মীয়তার কারণে আমাদের জাতির জনক যেখানে শুয়ে আছেন সেখানে তিনি নিয়োগ পেতে পারেন না। আমরা প্রধানমন্ত্রিকে, শিক্ষামন্ত্রীকে অনুরোধ করব অবিলম্বে এই উপাচার্যকে অপসারণ করা হোক। এই ভিসি ফাতেমা তুজজিনিয়া নামে এক শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করেছে। আর এর কারণ ছিলো সে শুধু ফেইসবুকে লিখেছিলো ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাজ কী’। এরও আগে ট্রিপল ‘ই’ বিভাগের আরো পাঁচজন শিক্ষার্থীকে অবৈধভাবে বহিষ্কার করেছে এই কুলাঙ্গার উপাচার্য।’
মানববন্ধনে সংহতি প্রকাশ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সভাপতি রায়হানুল ইসলাম আবির বলেন, সামান্য কারণে উপাচার্য শিক্ষার্থীদের বহিষ্কার করেছেন। গুন্ডা বাহিনী ব্যবহার করে প্রতিবাদকারীদের ওপর হামলা করা হয়েছে। অনতিবিলম্বে সেই হামলার বিচার ও বহিষ্কৃতদের ছাত্রত্ব ফিরিয়ে দেওয়া না হলে বাংলাদেশের সকল সাংবাদিক সমিতি নিয়ে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।
উল্লেখ্য, ফাতেমাতুজ জিনিয়া ইংরেজি দৈনিক দ্যা ডেইলি সান এবং অনলাইন পোর্টাল দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস এর বশেমুরবিপ্রবি প্রতিনিধি ।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মাহদী আল মুহতাসিম বলেন, ভিন্নমত প্রকাশ গণতন্ত্রের সৌন্দর্য। কিন্তু বশেমুরবিপ্রবি উপাচার্য শিক্ষার্থীর মত প্রকাশের স্বাধীনতা হরণ করে সংবিধান লঙ্ঘন করেছেন। তিনি আরো বলেন, আমাদের দাবি দ্রুত জিনিয়ার ছাত্রত্ব ফিরিয়ে দেওয়া হোক এবং স্বৈরাচারী প্রশাসকের বিরুদ্ধে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া হোক।
মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক আল মামুন এর সঞ্চালনায় মানববন্ধনে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের বিভিন্ন নেতারা বক্তব্য রাখেন।
ঢাকাটাইমস/১৬সেপ্টেম্বর/ইএস