বাবা-মাকে ডেকে অপমান, কলেজছাত্রের আত্মহত্যার চেষ্টা

প্রকাশ | ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ১৭:৩৯ | আপডেট: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ১৭:৪৫

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

পরীক্ষায় খারাপ ফলাফলের কারণে বাবা-মাকে ডেকে অপমান করায় কলেজ ভবন থেকে লাফিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন শাহরিয়ার আলম আকাশ নামে এক শিক্ষার্থী। তিনি ওই কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী। ঘটনার পর বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা কলেজ ভাঙচুর এবং নয় দফা দাবিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্লাস পরীক্ষা বর্জনের ডাক দিয়েছেন।

সোমবার দুপুরে রাজধানীর মিরপুরের বনফুল আদিবাসী গ্রিনহার্ট কলেজে এই ঘটনা ঘটে। বর্তমানে আকাশ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। 

২০১৮ সালের ডিসেম্বরে রাজধানীর ভিকারুননিসা স্কুল অ্যান্ড কলেজে এ ধরনের ঘটনা ঘটে। বাবা-মাকে ডেকে অপমান করার ঘটনায় অরিত্রি অধিকারী নামে নবম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী তখন আত্মহত্যা করেছিল।

অরিত্রী অধিকারীকে আত্মহত্যার প্ররোচনা দেওয়ার মামলায় প্রতিষ্ঠানটির দুই শিক্ষক নাজনীন আক্তার ও জিনাত আরার বিচার শুরুর আদেশ দিয়েছে আদালত।

আত্মহত্যার চেষ্টাকারী শিক্ষার্থী আকাশের বন্ধু আদনান ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘আকাশ ক্লাস পরীক্ষায় খারাপ ফলাফলের কারণে কলেজের রেক্টর সজল কান্তি রায় ওর বাবা-মাকে কলেজে ডেকেছিলেন। সবার সামনে তাদেরকে অপমান এবং খারাপ আচরণ করা হয়। বিষয়টি সহ্য করতে না পেরে আকাশ কলেজের তিনতলা থেকে লাফ দেয়। এতে ওর মাথা ফেটে যায়। পরে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ঘটনা কলেজে জানাজানি হলে শিক্ষার্থীরা উতপ্ত হয়ে ক্লাস রুম ভাঙচুর করে।’

আদনান বলেন, ‘আকাশের মা সম্প্রতি ব্রেন স্ট্রোক করায় পরীক্ষায় খারাপ ফলাফল করেছে। বিষয়টি কলেজের রেক্টর জানলেও তিনি ওর পরিবারকে ডেকে খারাপ আচরণ করেছেন।’

তার দাবি ‘কলেজের সিসিটিভি ফুটেজে আত্মহত্যা চেষ্টার ভিডিও ধারণ থাকলেও সেগুলো কলেজ কর্তৃপক্ষ নষ্ট করেছে। ক্যামেরা খুলে ফেলেছে। ফুটেজ ডিলিট করার কারণে সবাই উত্তেজিত হয়ে ভাঙচুর চালায়।’

এদিকে রেক্টর সজল কান্তির অপসারণ ও ঘটনার সুষ্ঠু বিচারের দাবিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্লাস বর্জনের ডাক দিয়েছেন কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

আন্দোলনের নেতৃত্বে থাকা শিক্ষার্থীরা জানিয়েছে, মঙ্গলবার থেকে কলেজে ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ থাকবে। রেক্টরের পদত্যাগ, ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত, আহত ছাত্রের চিকিৎসার সব দায়িত্ব, কোচিং বাণিজ্য বন্ধসহ নয় দফা দাবি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত তারা ক্লাস বা পরীক্ষায় অংশ নেবে না।

মনিকা নামে এক অভিভাবক ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘ঘটনার সময় আমরা কলেজের ভেতরে ছিলাম। হঠাৎ ছেলেটা তিনতলা থেকে লাফ দেয়। পরে সবাই তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। এরপর অভিভাবকদের কলেজ থেকে বের করে দেওয়া হয়।’

কলেজের অধ্যক্ষ সুধির কুমার মণ্ডল ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘ছেলেটা কোথা থেকে কীভাবে লাফ দিয়েছে সেটা খোঁজা হচ্ছে। এছাড়া বাবা-মাকে অপমানের যে বিষয়টি বলা হচ্ছে তা নিয়ে তদন্ত করা হবে। তদন্তে আইনগত যা হবে তাই আমরা করব।’

(ঢাকাটাইমস/১৬সেপ্টেম্বর/এসএস/জেবি)