চার নদীর সীমানা নির্ধারণে ‘শত বছরের গ্যারান্টি খুঁটি’

কাজী রফিক
 | প্রকাশিত : ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০৮:০৭

রাজধানীর চার নদীর শত বছরের সীমানা নির্ধারণ করে দেয়া হচ্ছে। খুঁটি স্থাপন করে বুড়িগঙ্গা, তুরাগ, শীতলক্ষ্যা ও বালু নদীর সীমানা পুনঃনির্ধারণ করছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহণ কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)। এই চার নদীর দুই তীরের ২২০ কিলোমিটারে সীমানা খুঁটি স্থাপনের কাজ চলছে। প্রায় সাড়ে তিনশ কোটি টাকা ব্যয়ে এসব খুঁটি শত বছরের গ্যারান্টি থাকবে বলে দাবি সংশ্লিষ্ট কতৃৃপক্ষের।

বিআইডব্লিউটিএ বলছে, প্রতিটি সীমানা খুঁটি কমপক্ষে ৩০-৩৫ ফুট মাটির নিচে থাকবে, যা আরসিসি ঢালাই করা হবে। মাটির উপরে দৃশ্যমান হবে খুঁটির বাকি ১৬ ফুট। নদীর দুই তীরে প্রায় ২২০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে দশ হাজার ৮২০টি সীমানা খুঁটি স্থাপনের কথা রয়েছে। এক্ষেত্রে প্রতিটি খুঁটির দাম পড়ছে প্রায় সাড়ে তিন লাখ টাকা করে। আর খুঁটিগুলো আগামী একশো বছর পর্যন্ত টিকে থাকবে বলে জানিয়েছে বিআইডব্লিউটিএ।

বিআইডব্লিউটিএ’র যুগ্ম পরিচালক (ঢাকা নদী বন্দর) এ কে এম আরিফ উদ্দিন ঢাকা টাইমসকে জানান, গত ৬ জুলাই থেকে মূলত সীমানা পিলার স্থাপনের কাজ শুরু হয়। এরপর টেন্ডার প্রক্রিয়ার জন্য কাজ কিছুটা ধীর গতিতে আগালেও বর্তমানে পুরোদমে কাজ চলমান আছে।

এখন পর্যন্ত প্রায় ৩০টির বেশি সীমানা খুঁটি স্থাপন করা হয়েছে। কয়েকদিনের মধ্যে কাজের গতি আরও বৃদ্ধি পাবে। প্রতিদিন ২০ থেকে ২৫টি খুঁটি স্থাপনের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে কাজ চলমান রয়েছে বলে তিনি জানান।

এদিকে নদী উদ্ধারে ২০১০ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত নদী তীরে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে ৬১২.২২ একর জমি উদ্ধার করেছে। এর মধ্যে ঢাকার চারপাশে ৩৭৮.৬২ একর এবং নারায়ণগঞ্জে ২৩৩.৬০ একর জমি উদ্ধার করে বিআইডব্লিউটিএ। এসময় ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জ এলাকায় ১৫ হাজার ৫৯২টি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। এর মধ্যে ঢাকায় ১২ হাজার ৪৭৮টি এবং নারায়ণগঞ্জে ৩ হাজার ১১৪টি উচ্ছেদ করা হয়েছে।

বুড়িগঙ্গা-তুরাগ ও বালু নদী উদ্ধারে গত ২৯ জানুয়ারি বুড়িগঙ্গা নদীর খোলামোড়া ঘাট এলাকা থেকে উচ্ছেদ অভিযান শুরু করে বিআইডব্লিউটিএ। ২৪ জুলাই পর্যন্ত তিন পর্বে মোট ৫০ কার্যদিবস অভিযান পরিচালনা করে বিআইডব্লিউটিএ।

নদী তীরভূমির ১৫৭ কিলো মিটার এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে অবৈধ ভাবে গড়ে তোলা ৪ হাজার ৭৭২টি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়। এসময় উদ্ধার হয় তীরভূমির ১২১ একর জায়গা। যা প্রায় অর্ধশত বছর ধরে তীরভূমিতে বসবাসকারী, বিভিন্ন কোম্পানির দখলে ছিল।

উচ্ছেদকৃত স্থাপনার মধ্যে রয়েছে ৭২৫টি পাকা ভবন, ৯৮৬টি আধা পাকা ভবন, ৩২১টি সীমানা দেয়ালসহ ছোট-বড় মিলিয়ে মোট ৩ হাজার ৫৭৫টি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়। এর মধ্য দিয়ে নদীর ৯১ একর জায়গা অবমুক্ত করা হয়েছে বলে জানায় বিআইডব্লিউটিএ।

এছাড়া জরিমানার মাধ্যমে আদায় হয়েছে ১০ লাখ ৬৯ হাজার টাকা। উচ্ছেদকৃত মালামাল নিলামে বিক্রি করে আরও ১০ কোটি ৮২ লাখ ৩২ হাজার ৪০০ টাকা আদায় হয়েছে। নদী দখলের কারণে ২২ জনকে আসামি করে ছয়টি মামলাও দায়ের করেছে অভিযান পরিচালনাকারী সংস্থাটি।

নদী রক্ষায় নৌ-মন্ত্রণালয়ের প্রায় ২ হাজার ২০০ কোটি টাকার প্রকল্পের মধ্যে এই সীমানা খুঁটি স্থাপন একটি অংশ। এরপর শুরু হবে নদীর পাড় বাঁধাই, ৫২ কিলোমিটার ওয়াকওয়ে নির্মাণ, বনায়ন, তিনটি ইকোপার্ক, ছয়টি পন্টুন, ৪০ কিলোমিটার কি-ওয়াল, ১৯টি আরসিসি জেটি, ৪০ টি স্পার্ড ও ৪০৯টি বসার বেঞ্চ নির্মাণ কাজ। যা ২০২২ সালের মধ্যে সম্পন্ন হওয়ার কথা রয়েছে।

(ঢাকাটাইমস/১৭সেপ্টেম্বর/কেআর/ডিএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

রাজধানী বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

রাজধানী এর সর্বশেষ

পাঁচ বছরেও শেষ হয়নি বনানীর এফআর টাওয়ারে অগ্নিকাণ্ডের বিচার

এক হাতে ইফতারের পানির বোতল, আরেক হাতে যান চলাচলের ইশারা ডিসির

এলিফ্যান্ট রোডে বাসা থেকে শিক্ষার্থীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার

ঢাকাস্থ কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা কল্যাণ সমিতির ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত

অসুস্থতার যন্ত্রণা সইতে না পেরে ছুরিকাঘাতে রিকশাচালকের আত্মহত্যা

রাজধানীর ধোলাইপাড়ে পুলিশ কনস্টেবলের স্ত্রীর ‘আত্মহত্যা’

বুধবার থেকে এক ঘণ্টা বাড়ছে মেট্রোরেল চলাচলের সময়

ঈদকে সামনে রেখে ডিবি-সাংবাদিক পরিচয়ে অপহরণের ফাঁদ

ভবিষ্যৎ নগর উন্নয়নে জাইকা ও ইঞ্জিনিয়ার ইনস্টিটিউটের সঙ্গে রাজউকের সভা

২৭ মার্চ থেকে রাত ৯টার পরও চলবে মেট্রোরেল

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :