শিশুদের ভবিষ্যৎ গড়ে দিতে না পারার আক্ষেপ ফখরুলের

প্রকাশ | ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ১৪:৫০ | আপডেট: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ১৫:৪২

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

দেশের সব ক্ষেত্রে অনিশ্চয়তা, অস্থিতিশীলতা ও ভয়-শঙ্কা কাজ করছে বলে মনে করছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। শিশুদের শিশুদের জন্য সুন্দর একটি ভবিষ্যৎ গড়ে দিতে না পারার আক্ষেপও ঝরেছে তার কণ্ঠে। বলেন, ‘আমাদের শিশুরা এখন ভীতি আর অনিশ্চয়তার মধ্যে বেড়ে উঠছে।’

মঙ্গলবার রাজধানীর আইডিইবি ভবনে জিয়া শিশু একাডেমি কর্তৃক আয়োজিত ১১তম জাতীয় শিশু শিল্পী প্রতিযোগিতা ‘শাপলাকুঁড়ি-২০১৯’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যকালে বিএনপিনেতা এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জিয়া শিশু একাডেমির মহাপরিচালক এম. হুমায়ুন কবির।

ফখরুল বলেন, ‘শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান চেয়েছিলেন শিশুরা পাখির মতো ডানা মেলে উড়বে, সুশিক্ষা ও দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে জীবন গড়ার মাধ্যমে বিশ্বকে দেবে এক নতুন বাংলাদেশ। কিন্তু আজ দেশের শিশুরা অধিকারবঞ্চিত, অমানবিক নির্যাতনের শিকার হয়ে কুশিক্ষা ও অপসংস্কৃতির রোষানলে আবদ্ধ। প্রতিনিয়ত শিশুর ওপর চলছে পৈশাচিক নির্যাতন, যা ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ গড়ার ক্ষেত্রে বিরাট অন্তরায়।’

আফসোস করে তিনি বলেন, ‘কোন সমাজ আমরা নির্মাণ করছি? যে সমাজে আমাদের ফুলের মতো শিশুগুলোকে আমরা ভালোবাসতে পারছি না। কোন সমাজ আমরা নির্মাণ করছি? যেখানে আমাদের শিশুদের জন্য সুন্দর একটি ভবিষ্যৎ গড়ে দিতে পারছি না। চতুর্দিকে একটি অনিশ্চয়তা, একটা অস্থিতিশীলতা, একটা ভয়-শঙ্কা কাজ করছে।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমরা যখন ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ করেছিলাম তখন আমি যুবক ছিলাম। আজকে আমি প্রায় বৃদ্ধ। ৪৮ বছর হয়েছে প্রায় আমাদের স্বাধীনতার। আমার স্বাধীনতার স্বপ্নে এ বাংলাদেশ দেখিনি। বাংলাদেশের এই চিত্র আমরা আশা করিনি এবং সেই জন্য আমরা অস্ত্র তুলে নিয়ে যুদ্ধও করিনি।’

‘আমরা যুদ্ধ করেছিলাম সত্যিকার অর্থে একটি ফুলকে বাঁচাবো বলে গানটিকে প্রেরণা হিসেবে সামনে রেখে। ফুল ফোটাতে চেয়েছিলাম আমরা। আমরা এমন একটি বাসযোগ্য ভূমি তৈরি করতে চেয়েছিলাম যেখানে আমরা সবাই সুখে-শান্তিতে আনন্দে বাস করতে পারব। কিন্তু আমাদের সেই স্বপ্ন সফল হয়নি।’

আরও বলেন, ‘যদিও আমাদের অনেক রাস্তাঘাট তৈরি হয়েছে, অট্টালিকা তৈরি হয়েছে, আমাদের জীবনযাত্রার মান অনেক বদলে গেছে, তারপরও নিরাপদ যে বাসভূমি আমাদের দরকার তা দেখতে পাইনি। এর চেয়ে বড় লজ্জা আর কিছু হতে পারে না!’

শিশুদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘ছোট ছোট শিশু বন্ধুরা, আমরা কাজ করি ওই সময়টা ফিরিয়ে আনার জন্য। আমরা কাজ করি যেন আমাদের শিশুদের জন্য একটি শান্তির পৃথিবী তৈরি করতে পারি, হিংসা-বিদ্বেষ বাদ দিয়ে যেন ভালোবাসার পৃথিবী তৈরি করতে পারি, সেই জন্য।’

শিশুরা পর্যন্ত ঘৃণা ও সন্ত্রাসের বাইরে থাকতে পারছে না বলে আক্ষেপ করেন বিএনপি মহাসচিব। শিশুরা ঘনঘন হত্যা, নির্যাতনের শিকার হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আজকে তো জিয়াউর রহমান সম্পর্কে অনেক বিকৃত, খারাপ কথা আমাদের শুনতে হয়, আসলে সেটা সঠিক নয়।

সত্যিকার অর্থে জিয়া হচ্ছেন সেই ব্যক্তি যিনি আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধের ঘোষণা দিয়েছিলেন। তিনি সেই ব্যক্তি যিনি বাংলাদেশের মানুষকে স্বাধীনতা যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়তে অনুপ্রাণিত করেছিলেন। আমরা কাউকে ছোট করতে চাই না। যারা মাথার ওপরে আছেন আমরা তাদের সবাইকে মাথার ওপরেই রাখতে চাই। কিন্তু যে মানুষটির অবদান আছে, যে মানুষটি তার জীবন বাজি রেখে লড়াই করেছেন, যুদ্ধ করেছেন, স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছেন, তাকে ছোট করার অধিকার কারও নেই।’

তিনি বলেন, ‘দুর্ভাগ্য আমাদের আজকে আমরা অনেকেই তাকে ছোট করতে চাই। ছোট করা যায় না। যার যা অবদান জাতি তা সবসময় স্মরণ রাখে, তা স্বীকার করে এবং তার মূল্য তাকে দেয়। আমরা অনেকেই জানি না এই যে শিশু একাডেমি, এটা তৈরি করেছিলেন জিয়াউর রহমান।’

(ঢাকাটাইমস/১৭সেপ্টেম্বর/বিইউ/ইএস/ডিএম)